
ছবিঃ সংগৃহীত
আজ সারা বিশ্বে পালিত হচ্ছে বিশ্ব পানিতে ডুবে মৃত্যু পরিহার দিবস (World Drowning Prevention Day)। জাতিসংঘ ঘোষিত এই দিনটির মূল উদ্দেশ্য হলো—পানিতে ডুবে মৃত্যুর ভয়াবহতা সম্পর্কে বিশ্ববাসীকে সচেতন করা এবং প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতি সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) তথ্যমতে, প্রতি বছর বিশ্বে আনুমানিক ২ লাখ ৩৬ হাজার মানুষ পানিতে ডুবে মারা যান। তাদের বেশিরভাগই শিশু ও কিশোর-কিশোরী, বিশেষ করে ৫ থেকে ১৪ বছর বয়সী। এসব মৃত্যুর ৯৫ শতাংশই ঘটে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে।
বাংলাদেশে পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক:
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও ইউনিসেফের তথ্যমতে, দেশে প্রতি বছর প্রায় ১৭ হাজার শিশু পানিতে ডুবে মারা যায়। গ্রামীণ অঞ্চলের খাল-বিল, পুকুর-নদীর পাশেই বেড়ে ওঠা শিশুদের মধ্যে এই মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি। বর্ষা মৌসুমে এই ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব মৃত্যু প্রায় সম্পূর্ণভাবে প্রতিরোধযোগ্য। সঠিক শিক্ষা, নজরদারি ও স্থানীয় পর্যায়ে উদ্যোগের মাধ্যমে এই মৃত্যুর হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব।
এ বিষয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের চিকিৎসক ডা. মাহবুবুর রহমান বলেন, "অভিভাবকদের সচেতনতা, শিশুদের সাঁতার শেখানো এবং দুর্ঘটনা প্রবণ এলাকাগুলোতে সতর্কতা ব্যবস্থা গ্রহণ করলেই অনেক জীবন রক্ষা সম্ভব।"
এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য বিষয় হলো— “প্রতিটি ডুবে যাওয়া মৃত্যু প্রতিরোধযোগ্য—আসুন সচেতন হই, জীবন বাঁচাই।”
দিবসটি উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন সংগঠন, এনজিও এবং স্বাস্থ্যখাতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। স্কুল-কলেজে সাঁতার প্রশিক্ষণ, নিরাপদ খেলার ক্ষেত্র নির্মাণ ও অভিভাবক ওয়ার্কশপের আয়োজন করা হয়েছে অনেক স্থানে।
এদিকে সচেতন মহলের দাবি, পানিতে ডুবে মৃত্যু প্রতিরোধে জাতীয় পর্যায়ে একটি সমন্বিত নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবি।
লেখক: জাহিদুল ইসলাম, পটুয়াখালী
নোভা