
ভারত অবৈধ অভিবাসী হিসেবে চিহ্নিত করে সাম্প্রতিক সময়ে শত শত বাঙালি মুসলিমকে যথাযথ আইনগত প্রক্রিয়া ছাড়াই আটক করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।
বুধবার প্রকাশিত সংস্থাটির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, আটক ব্যক্তিদের অনেকেই ভারতের বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন রাজ্যগুলোর অধিবাসী এবং সেখানকার নাগরিকত্বও তাদের রয়েছে।
এইচআরডব্লিউ জানায়, ২০২৫ সালের মে মাস থেকে বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার এ ধরনের বিতর্কিত ‘বিতরণ অভিযান’ শুরু করে। এতে করে বাংলাদেশি পরিচয়ে দেশছাড়া করা হচ্ছে এমন বহু ভারতীয় মুসলিম নাগরিককে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, চলতি বছরের এপ্রিল মাসে জম্মু-কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার পর থেকেই মুসলিমদের বিরুদ্ধে দমন-পীড়ন কার্যক্রম জোরদার হয়েছে। পুলিশের হাতে মুসলিমদের ফোন, কাগজপত্র এবং ব্যক্তিগত সামগ্রী জব্দ করা হয়। ফলে তারা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানায়, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) কর্তৃক বন্দুকের মুখে সীমান্ত অতিক্রমে বাধ্য করার অভিযোগ করেছেন অনেক ভুক্তভোগী। কেউ কেউ বলেছেন, তাদের হুমকি দেওয়া হয়েছে এবং শারীরিকভাবেও আক্রমণের শিকার হতে হয়েছে।
এ বিষয়ে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে সংস্থাটি গত ৮ জুলাই একটি চিঠি পাঠায়। তবে এখন পর্যন্ত ভারতের পক্ষ থেকে কোনো জবাব পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।
বিষয়টি নিয়ে সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এ ধরনের আটকের পেছনে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ না করায় তা মৌলিক মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। ভারত সরকারের উচিত এসব মানুষের নিরাপত্তা, ন্যায়বিচার এবং যথাযথ শুনানির অধিকার নিশ্চিত করা।
এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে নতুন করে কূটনৈতিক উত্তেজনার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে বলেও মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
আফরোজা