
স্টাফ রিপোর্টার ॥ হাইকোর্টর আদেশের পর সারাদেশের প্রতিটি আদালতকক্ষ/এজলাসে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি সংরক্ষণ ও প্রদশন বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সুপ্রীমকোটের্র অবকাশ শেষে এ প্রক্রিয়া শুরু হবে। অবকাশ শেষে ১৩ অক্টোবর সুপ্রীমকোর্ট খুলবে।
এদিকে আইনমন্ত্রনায় বাংলাদেশের অধ:স্তন আদালতের সকল এজলাস/ কোটরুমে বঙ্গবন্ধুর ছবি টাঙানো ও সংরক্ষনের প্রযোজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানিয়ে নোটিশ জারী করেছে। আইনমন্ত্রনালয়ের সহকারী সচিব (প্রশাসন) তৈয়বুল হাসান স্বাক্ষরিত এক নোটিশে এ কথা জানানো হয়েছে।
অন্যদিকে সুপ্রীমকোর্টের স্পেশাল অফিসার সাইফুর রহমান বলেন ,আদালতের ওই আদেশ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সুপ্রীমকোর্টে ছবি বাছাই চলছে। অবকাশের পর আমরা ছবি টাঙানোর ব্যাবস্থা করব্। গত ২৯ আগষ্ট দুই মাসের মধ্যে সারাদেশের প্রতিটি আদালত কক্ষে/এজলাসে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি সংরক্ষণ ও প্রদর্শনের নির্দেশ প্রদান করে হাইকোর্ট। একই সঙ্গে একটি রুল জারি করেছে আদালত।
আদালত কক্ষে জাতির জনকের প্রতিকৃতি সংরক্ষণ ও প্রদর্শনে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি এবং আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চাওয়া হয়েছে ওই রুলে। আইন সচিব, গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিব, অর্থ সচিব, সুপ্রীমকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল এবং হাই কোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রারকে এর জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালত কক্ষে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি টাঙানোর নির্দেশনা বাস্তবায়নে কতটা অগ্রগতি হল, তাও ওই দুই মাসের মধ্যে জানাতে বলেছে হাইকোর্ট। বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে, এম কামরুল কাদের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এক রিটের ওপর প্রাথমিক শুনানি নিয়ে এ আদেশ প্রদান করেছেন।
আইনজীবী সুবির নন্দী দাস ২১ আগষ্ট হাইকোর্টে এ রিটটি দায়ের করেন । এ্যাডভোকেট সুবির নন্দী দাস সাংবাদিকদের বলেন ,হাইকোর্টের এ আদেশ বাস্তবায়ন করে দুই মাস পর প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেছে আদালত। সংবিধানের ৪ (ক) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার ও প্রধান বিচারপতির কার্যালয় এবং সব সরকারি ও আধা-সরকারি অফিস,স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষের প্রধান ও শাখা কার্যালয়, সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান,বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাস ও মিশনগুলোতে সংরক্ষণ ও প্রদর্শন করতে হবে। এ অনুচ্ছেদ উল্লেখ করে সারাদেশের প্রতিটি আদালত কক্ষ/এজলাসে জাতির জনকের প্রতিকৃতি সংরক্ষণ ও প্রদর্শনের নির্দেশনা চেয়ে রিটটি করা হয়।
ভারত, পাকিস্তান , আমেরিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আদালতে তাদের জাতির জনক বা জাতীয় বীরদের ছবি টাঙানোর নজির আছে। আমাদের সংবিধানে জাতির জনকের প্রতিকৃতি সংরক্ষণ ও প্রদর্শনের বাধ্যবাধকতা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। তা চ্যালেঞ্জ করেই আমরা রিট করেছিলাম।
এ আদেশের পর আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ থেকে একটি নোটিশ জারি করা হয়েছে। সিনিয়র সহকারী সচিব (প্রশাসন) তৈয়বুল হাসান সাক্ষরিত ওই নোটিশে বলা হয়, সুপ্রীমকোর্টের আইনজীবী সুবীর নন্দী দাসের রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৯ আগস্ট বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদের মহোদয়ের বেঞ্চ দেশের সব আদালতের এজলাস/কোর্টরুমে আগামী দুই মাসের মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর প্রতিকৃতি টাঙানো ও সংরক্ষণের নির্দেশনা দিয়েছেন।
এ অবস্থায় অধস্তন আদালতের সব এজলাস/কোটরুমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি টাঙানো ও সংরক্ষণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো।