ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

রূপ ও রূপান্তর বাঙালির বসনভূষণ

প্রদীপ দত্ত

প্রকাশিত: ২২:৩৪, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩

রূপ ও রূপান্তর বাঙালির বসনভূষণ

মানুষ তার অনাবৃত শরীরকে ঢেকে রাখবার প্রয়োজন অনুভব করেছে

সমাজবিকাশের একটি পর্যায়ে মানুষ তার অনাবৃত শরীরকে ঢেকে রাখবার প্রয়োজন অনুভব করেছে। প্রকৃতির সন্তান মানুষ প্রকৃতির কাছেই পেয়েছে তার প্রথম আচ্ছাদন। শুরুতে গাছের পাতা বাকল পশুর চামড়া, এরপর কালে কালে শিখেছে সুতা ও রেশমের ব্যবহার। নিজেকে অন্যের কাছে সুন্দরভাবে উপস্থাপনের জন্য ফুল লতাপাতা বীজ নানান রতœপাথর পোড়ামাটি ধাতুর অলঙ্কার শরীরে ধারণ করেছে। আদি অরণ্যচারী জীবন থেকে গ্রাম-নগর জনপদের মানুষ নানা আর্থ-সামাজিক রূপান্তরের মধ্য দিয়ে সভ্যতার পথে কাল অতিক্রম করছে। বস্তুত এই রূপান্তর প্রতিনিয়তই ঘটে চলেছে। প্রাচীন বঙ্গভূমি থেকে আমাদের আজকের এই বাংলাদেশ।

এখানে বসবাসকারী বিপুল জনগোষ্ঠীর সমাজজীবনে পোশাক-পরিচ্ছদ, অলঙ্কার কিংবা সাজগোজের ক্ষেত্রে যে সংস্কৃতি ও রুচিবোধ আমরা দীর্ঘপথ পরিক্রমায় ধারণ করেছি, তা বিশ্লেষণ করতে হলে আমাদের বেশ কিছুটা পেছনে ফিরে যেতে হবে। ঐতিহাসিকভাবেই এই জনপদে অনেক জাতিসত্তার মানুষের আগমন ঘটেছে। শাসনব্যবস্থার অনেক পরিবর্তন, নদীবাহিত পলিমাটির উর্বর শষ্যভূমি, সহজ জীবনযাপন সবকিছুই আকর্ষণ করেছে ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতির মানুষকে। আর এই বৈচিত্রময় সংস্কৃতির বাতাবরণেই গড়ে উঠেছে বাঙালির নিজস্ব জীবনচর্চা। এখন থেকে অনতিদূর অতীতে বাঙালির বসনভূষণ কেমন ছিল তার প্রামাণ্য অনেকটাই সেকালের চিত্রিত পাণ্ডুলিপি, যেগুলো সাধারণত তালপাতা কিংবা তুলোট কাগজে লেখা পুঁথির কাহিনী বর্ণনা আর অলংকরণের জন্য আঁকা হতো।

প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি বিভিন্ন রঙের বিন্যাসে সূক্ষè ও ঘন রেখায় চিত্রিত এই লেখমালাগুলো একাদশ কিংবা দ্বাদশ শতকের মধ্যে অঙ্কিত। এগুলোতে দেবদেবী ছাড়াও রাজা, রাজÑকর্মচারী সমাজজীবনের বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ যেমন পুরোহিত, সন্ন্যাসী, গণক , ধোপা, ব্যাধ, তীরন্দাজ, নাপিত, নগরনটী, শবর পুরুষÑরমণী এমন অনেক পেশার মানুষের ছবি চিত্রিত আছে। যা থেকে সেকালে তাদের বসনভূষণ অলঙ্কার কেমন ছিল তার একটা ধারণা লাভ করা যায়। এরপর আছে বিভিন্ন প্রত্নকীর্তি যেমন- পোড়ামাটির ফলক, মন্দির গাত্রের টেরাকোটা, ভাস্কর্য, সেখানে আঁকা ছবি, শিলালিপি, তা¤্রশাসন ইত্যাদি। আবার সমসাময়িক কবিদের রচিত কাব্যসম্ভার, রাজপ্রশস্তি, রাজ অনুশাসনের পাট্টোলি বা দলিল সেইসঙ্গে পর্যটক, ঐতিহাসিক আর গবেষকদের পর্যবেক্ষণ যা আমাদের সেই সময়ে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে।

ঈশানচন্দ্র ঘোষ অনুদিত প্রাচীনতম সংকলন জাতক কাহিনীর শ্রীকালকর্ণী জাতকে বর্ণনা আছে দেবকন্যা শ্রী সুবর্ণবর্ণ বস্ত্র পরেছেন, শরীরে সুবর্ণবর্ণের বিলেপন মেখেছেন, সুবর্ণসদৃশ অলঙ্কার ধারণ করেছেন। মহাশে^রোহ জাতকে বর্ণনা আছে ‘মহিষী বারাণসী শাড়ি ও অলঙ্কার ত্যাগ করে প্রত্যন্তবাসীর শাড়ি পরলেন এবং অলঙ্কার গায়ে দিলেন।’ ’ঐতিহাসিক নীহাররঞ্জন রায় ‘বাঙ্গালীর ইতিহাস’ (আদিপর্ব) গ্রন্থে লিখছেন ‘এই বঙ্গদেশে একসময় কাপড় তৈরী হতো গাছের বাকল থেকে, গাছের বাকলকে কাপড়ের মত পাতলা করে ব্যবহার করা হতো। বাকল থেকে তৈরী কাপড়কে বলা হতো ‘ক্ষৌম’। বঙ্গদেশে পুরুষেরা সে সময় ‘দুকুল’ পরত নি¤œাঙ্গে, সেরা জাতের ক্ষৗমকে বলা হতো দুকুল।

সরাসরি বাকলের পরিবর্তে বাংলায় একসময় সুতিবস্ত্রের প্রচলন শুরু হয়েছিল। এক্ষেত্রে শন পাট অতসী ইত্যাদি গাছের সুতা তৈরী করা হতো। চাণক্যের অর্থশাস্ত্র থেকে জানা যায় খ্রিস্টপূর্ব ৩০০ থেকে ৪০০ অব্দে বঙ্গ ও মগধে রেশমের চাষ হতো। পঞ্চম শতকে ফাÑহিউয়েন ও সপ্তম শতকে হিউয়েন সাঙের  ভ্রমণ বৃত্তান্তে ঐ সময়ে চিনামশুক, পট্ট প্রভৃতি নামে রেশম ও সুতিবস্ত্রের উল্লেখ পাওয়া যায়। প্রেমময় দাশগুপ্ত সংকলিত ‘হিউয়েন-সাঙের  দেখা ভারত’ গ্রন্থে এ অঞ্চলের মানুষের পোশাক পরিচ্ছদের যে বিবরণ পাওয়া যায়, তাতে দেখা যায় সাঙ লিখছেন, ‘বেশীরভাগ মানুষই ধবধবে সাদা পোষাক পছন্দ করে।

পুরুষেরা তার কোমর দিয়ে কাপড় পরে ও তাকে বগলের নিচ দিয়ে ঘুরিয়ে শরীরকে বেড় দিয়ে ডানে নিচের দিকে ঝুলিয়ে দেয়। মেয়েদের কাপড় মাটি পর্যন্ত নেমে আসে। আর তাদের কাঁধ পুরোপুরি ঢেকে দেয়। মাথার উপর চূড়ার মত করে খোপা বাঁধে ও বাকী চুল আলতোভাবে ঝুলতে থাকে। তাদের পোষাক-আশাক কৌষেয় ও তুলার তৈরী। কৌষেয় বন্য গুটিপোকা থেকে মেলা সুতায় বুনোনো। বন্যপ্রাণীর মিহি লোম দিয়েও কিছু পোষাক তৈরী হয়, তবে তা অভিজাত শ্রেণীর জন্য। এগুলো বুনোট করতে বেশ পরিশ্রম ও কুশলতার প্রয়োজন হয়।’ নীহাররঞ্জন রায়ের বর্ণনা থেকে আরও জানা যায় যে ‘সেকালে সেলাইবিহীন একবস্ত্র পরার চল ছিলো এবং সেগুলো ছিলো দৈর্ঘ্যে বেশ খাটো। নারীরা ফুলের মালা পরতেন আর খোঁপায় ফুল গুজতেন’।

রমেশচন্দ্র মজুমদার বাংলাদেশের ইতিহাস (১ম খ--প্রাচীন যুগ) গ্রন্থে উল্লেখ করছেন ‘পাহাড়পুরের মূর্তিগুলি দেখিলে মনে হয় যে, সেকালের বাঙ্গালি নরÑনারী সাধারণত এখনকার মতোই একখানা ধুতি ও শাড়ী পরিত। পুরুষেরা মালকোছা দিয়া খাটো ধুতি ও শাড়ী পরিত এবং অধিকাংশ সময়েই ইহা হাঁটুর নীচে নামিত না। কিন্তু মেয়েদের শাড়ী পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত পৌঁছাত। ধুতি ও শাড়ী কেবল দেহের নি¤œাঙ্গ আবৃত করিত। নাভির উপরের অংশ কখনও খোলা থাকিত, কখনও পুরুষেরা উত্তরীয় এবং মেয়েরা ওড়না ব্যবহার করিত, মেয়েরা কদাচিৎ চৌলি বা স্তনপট্ট বা বডিসের ন্যায় জামা ব্যবহার করিত।’ ’তিনি আরও লিখছেন ‘পুরুষ ও মেয়েরা উভয়েই অঙ্গুরী, কানে কুন্তল, গলায় হার, হাতে কেয়ুর ও বলয়, কটিদেশে মেখলা ও পায়ে মল পরিত। শঙ্খ-বলয় কেবল মেয়েরাই ব্যবহার করিত।

পুরুষ ও মেয়ে উভয়েই একাধিক হার গলায় দিত এবং মেয়েরা অনেক সময় এখনকার পশ্চিম দেশীয় স্ত্রীলোকের ন্যায় হাতে অনেকগুলি চুড়ি বালা পরিত। উভয়ের সুদীর্ঘ কুঞ্চিত কেশদাম নিপুণ কৌশলে বিন্যস্ত হইত। পুরুষদের চুল বাবরির ন্যায় কাঁধের উপর ঝুলিয়া পড়িত। মেয়েরা নানা রকম খোঁপা বাঁধিত। 
মেয়েরা বিবাহ হইলে কপালে সিঁদুর পরিত, তা ছাড়া চরণদ্বয় অলক্তক ও নিম্নাধর সিঁদুর দ্বারা রঞ্জিত করিত। ¯œানের সময় মেয়েরা হলুদ-কুঙ্কুম দিয়া গাত্র এবং আমলকি দিয়া কেশ ধৌত করিত।’ শ্রী অসিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘বাংলা সাহিত্যের ইতিবৃত্ত, ১মখ-’ গ্রন্থে তিনি লিখছেন ‘প্রায় হাজার বছর ধরে বাঙালি কবি প-িত রাজকবিগণ যে সমস্ত শ্লোক রচনা করেছিলেন সেই শ্লোকগুলিতে ভাষাচর্চার বাহুল্যতার পাশাপাশি সেকালের রমণীদের বসন ও ভূষণের অপূর্ব বর্ণনা লিপিবদ্ধ আছে। বিজয়সেনের দেওপাড়া প্রশস্তিতে বলা হচ্ছে ‘অভিজাত নারীরা প্রতি সন্ধ্যায় স্থানশেষে চন্দন গুড়া কস্তুরী কর্পূর শরীরে মাখতেন, ধুপের ধোঁয়ায় মাথার চুল শুকিয়ে বিভিন্ন ফুলের মালা খোঁপা, গলা ও অনাবৃত বাহুতে দিয়ে সজ্জিত হয়ে আনন্দ ও ঔজ্জ¦ল্যের প্রতিমারূপে বিরাজ করতেন।’

সমসাময়িক সাহিত্যে বাঙালি নারীর বহুবিধ অলঙ্কারের ব্যবহার দেখতে পাওয়া যায়, যেমন সিঁথি, বেশর(নথ), কু-ল (কানবালা), হার, চন্দ্রাবলী, শাখা, রতনচূড় ইত্যাদি। মণিমানিক্য খচিত সোনারূপা ও হাতির দাঁতের গহনা তৈরী হতো। মধ্যযুগের কবিতায় শ্রীমতি রাধিকা থেকে গোপবালিকা, বেহুলা, চন্দ্রাবলী,  রাজনন্দিনী থেকে বারাঙ্গনা সকলের রূপ আর বসনভূষণের বর্ণনায় কবিগণ ছিলেন উচ্চকণ্ঠ। নাথ পুঁথিসাহিত্য গোরক্ষ বিজয়ের একটি পদে আছে ‘নয়নের ধার দিয়া কথা কহে ছলে/বক্ষেতে নাহিক বস্ত্র রতœহার দুলে।’ অর্থাৎ সে যুগে বক্ষ অনাবৃত! শুধুমাত্র সেখানে রতœহার শোভা পাচ্ছে। বিজয়গুপ্তের মনসামঙ্গলে দেখা যায়, ‘সাজিয়া গোয়ালিনি বেশে/বন্ধে ছন্দে বাঁধি খোপা/পৃষ্ঠেতে পাটের থোপা/ শ্রবণে সোনার মদনকড়ি/ স্বর্ণ অলঙ্কার গায় চলন্ত নূপুর পায়/ উল্লাসী পাটির শাড়ী’।

দ্বিজ বংশীবদনের মনসামঙ্গলে বেশ কয়েক পদের শাড়ীর বর্ণনা পাওয়া যায় যেমন- গঙ্গাজলি শাড়ী, নেতের উড়নী, পাটশাড়ী, ঘুগরা, নীবিবন্ধ ইত্যাদি। রবীন্দ্রনাথ পতিসর থেকে ইন্দিরা দেবীকে লিখছেন ‘ঠিক সূর্যাস্তের কাছাকাছি সময় যখন একটি গ্রাম পেরিয়ে আসছিলুম একটা লম্বা নৌকায় অনেকগুলো ছোকরা ঝপ ঝপ করে দাঁড় ফেলছিল এবং সেই তালে গান হচ্ছিল-যোবতী কেন বা কর মন ভারী পাবনা থাক্যা আন্যে দেব ট্যাকা দামের মোটরী।’ তিনি লিখছেন ‘এ অঞ্চলের লোক খুব সুখে আছে বলতে হবে অল্প ত্যাগ স্বীকারেই যুবতীর মন পায়।’ সৈয়দ হকের ‘নুরুলদীনের সারাজীবন’ কাব্যনাট্যে আম্বিয়া প্রতীক্ষা করে আছে তার স্বামী জং থেকে ফিরে তার জন্য ‘আগুন পাটের শাড়ী’ নিয়ে আসবে। 
‘আগুন পাটের শাড়ী কবে দিবেন আনিয়া /আড় পড়শীর বাড়ী যামো গুমোর করিয়া।’ সমগ্র বরেন্দ্র অঞ্চলে একসময় রেশমের চাষ হতো আর তা থেকেই তৈরী হতো এই শাড়ী। তবে বাঙালি নারীর শাড়ী-ব্লাউজ পরার ক্ষেত্রে আধুনিকতার সূচনা হয়েছিল ঠাকুর পরিবার থেকেই। জ্ঞানদাননন্দিনী দেবীসহ ঠাকুর পরিবারের বধু ও মেয়েরা ছিলেন তখন সেই সময়ের চেয়ে বেশ এগিয়ে। রবীন্দ্র ছোটগল্পের চরিত্রগুলোর পোষাক বর্ণনায় আধুনিকতার ছাপ লক্ষ্য করা যায়। ‘সমাপ্তি’ ছোটগল্পে অপূর্ব কনে দেখতে যাবার সময় ‘একটু বিশেষ যত্ন পূর্বক সাজ করিল। ধুতি ও চাদর ছাড়িয়া সিল্কের চাপকান, জোব্বা, মাথায় একটা গোলাকার পাগড়ি এবং বার্ণিশ করা একজোড়া জুতা পায়ে দিয়া সিল্কের ছাতা হাতে প্রাতঃকালে বাহির হইল।’ ‘মেঘ ও রোদ্র’ ছোটগল্পে গিরিবালা ডুরে কাপড় পরা বালিকা। ‘কর্মফল’ ছোটগল্পে ইংরেজদের সান্নিধ্যে আসা শিক্ষিত নব্য বাবু সমাজের রুচি ও পছন্দের পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। এখানে কোট টাই স্যুট ‘ফিরিঙ্গি পোষাক’ পরার কথা আছে। 
সম্ভবত ব্রিটিশ যুগেই মধ্যবিত্ত বাঙালী আন্তর্দেশীয় পোষাকের দিকে ঝুঁকেছে। শেষের কবিতায় অমিত বলছে ‘ফ্যাশানটা হল মুখোশ, স্টাইলটা হল মুখশ্রী’। সম্ভবত সে কারণেই এ যুগের কেতকী-লাবণ্যরা অতীত ঐতিহ্যের মিশেলে ফ্যাশানের সঙ্গে বাঁধা পড়ে আছেন আষ্টেপৃষ্ঠে। পোশাক নিয়ে দাপটের সঙ্গে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে কর্পোরেট। ঈদে-পার্বণে পহেলা বৈশাখে বাজারে বাহারি পোশাক আর বর্ণিল আয়োজনের আড়ালে চলে মুনাফা হাতিয়ে নেয়ার অসাধু প্রতিযোগিতা। তাই ধুতি-গেরুয়া থেকে আলখেল্লা, লালপেড়ে গরদের শাড়ি থেকে হিজাব-বোরকা সবটার পেছনেই নষ্ট পুঁজির মোড়লরা কলকাঠি নেড়ে চলেছে।

এখানে কখনও ধর্মের অনুশাসন, কখনও প্রাতিষ্ঠানিক ড্রেস কোড; কখনও বা মূল্যবোধের দোহাই দিয়ে বয়োজ্যেষ্ঠদের চোখ রাঙানি! এই অবস্থা চিরকালের! তাই পোশাক জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হলেও মানুষ তার নিজের পোশাক নির্বাচনে কখনও স্বাধীন ছিলো না- এখনও নেই।

×