ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

কবি ভার্জিল সুয়ারেজ ও তার কবিতা

ভূমিকা ও অনুবাদ : তূয়া নূর

প্রকাশিত: ০০:২৮, ২৬ মে ২০২৩

কবি ভার্জিল সুয়ারেজ ও তার কবিতা

.

তুমি যখন বাইরে বের হও তখন কবিতা তোমাকে খুঁজতে থাকে। তোমার তখন যা করা দরকার তা হলো একটু থেমে চারদিকে দেখা শোনা। প্রকৃতি থেকে কবিতার বিষয় খুঁজে বের করে আনা এক কবির কথা যার নাম ভার্জিল সুয়ারেজ। ১৯৬২ সালে কিউবার হাভানায় জন্মগ্রহণ করেন এবং মাত্র ১২ বছর বয়সে তার পরিবারের সঙ্গে কিউবা ছেড়ে ১৯৭৪ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসতি স্থাপন করেন।  তিনি ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে বিএ এবং লুইজিয়ানা স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে ক্রিয়েটিভ রাইটিং এমএফএ অর্জন করেন। বর্তমানে তালাহাসির ফ্লোরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটির সৃজনশীল লেখার সহযোগী অধ্যাপক। তিনি তার কবিতা এবং গদ্যে নির্বাসন অভিবাসনের অভিজ্ঞতাকে তুলে ধরতে চেয়েছেন। তাঁর কাব্য গ্রন্থের মধ্যে গাইড টু দ্য ব্লু টং (২০০২), বেনিয়ান (২০০২), ইন দি রিপাবলিক অফ লংগিং (১৯৯৯), গড়াবতো পোয়েম (১৯৯৯) এবং ইউ কাম ইস্প্রিং (১৯৯৮) উল্লেখযোগ্য। তিনি একজন ঔপন্যাসিকও। একজন কিউবান শরণার্থী কিউবান-আমেরিকান হিসেবে তার অভিজ্ঞতার কথা লিখেছেন Infinite Refuge (2002) I Spared Angola: Memories from a Cuban-American Childhood (1997)  (১৯৯৭) এ। তার কবিতা অনেক অ্যান্থলজিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।বেনিয়ানএর জন্য তিনি বুক এক্সপো আমেরিকা/ল্যাটিনো লিটারেচার হল অফ পয়েম পুরস্কার পেয়েছেন।

 

বীজ সংগ্রহকারী

নির্বাসিত জীবনের সব টা বছর আমার বাবা কাজ থেকে ফিরে বিকেলটা কাটাতো

ডালিমের খোসা খুলে, গুয়াবা, আম টুকরো করে কেটে

তাদের শাঁসালো অংশটুকু খেয়ে বীজ গুলো সংরক্ষণ করে।

ন্যাপকিনে ওপর রেখে চারকোণায় পাথর চাপা দিয়ে ইটের প্রাচীরের ওপর রেখে শুকাতো

অথবা থালায় নিয়ে রান্নাঘরের খোলা জানালায় রেখে দিতো বাতাসে।

একবার জিজ্ঞেস করেছিলাম, এই সব বীজ দিয়ে কি হবে?

তিনি বললেন সব বিরল ফলের কথা যা আমাদের এখানে এই লস অ্যাঞ্জেলসে পাওয়া যাবে না Ñ

গুয়ানাবানা, সাপুটা, মামনসিলো এবং সফেদা ফল।

আমার মনে আছে ফেলে আসা কিউবান শৈশবে খাওয়া, কিন্তু আর কখনো খাওয়া হয়নি,

তিনি খুব বলতেন, তিনি বলতেন নিজের ভাষায়, আমি তাদের শূন্যতা খুব অনুভব করি!

তিনি ঝাল আর বোম্বাই মরিচের বীজ, লাল, সবুজ নানা রঙের মিষ্টি মরিচ,

টমেটো বীজ, আরও কতকিছু শুকিয়ে রাখতেন,

মরিচের বীজগুলো রোদে দাঁতের মতো বিছানো।

এত বেশি কেন? বলতেই তিনি তার এক পকেটের গভীরে একটা হাত ঢুকায়ে মুষ্টি ভরে

 বের করে এনে দেখাতেন আমাকে,

এই বীজগুলো যেন তার হাতে মুঠোয় ধরা সোনার কণা-

তিনি হাঁটতে হাঁটতে সেই বীজগুলো চারপাশে ছড়ায়ে দিতেন,

মানুষের উঠোনে, নিজের জমিতে, ঘাসের বনে, পায়ে হাঁটার পথে, খোলা মাঠে ফাঁকা জায়গায়।

তার মিশন ছিল এই বীজগুলোকে তার চলার পথের ধারে ছড়িয়ে দেওয়া।

একটা স্মৃতি কিউবায় তার দিনগুলোর, আমাদের স্বর্গীয় দিনগুলোর,

তিনি সেসব কথা বলতেন আর ঘর থেকে বের হয়ে হেঁটে যেতেন অস্তগামী সূর্যের দিকে।

×