ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৬ জুলাই ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২

যে লক্ষণগুলো দেখলে বুঝবেন আপনার ভিটামিন ডি এর অভাব

প্রকাশিত: ১৫:৫৮, ১৬ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ১৫:৫৮, ১৬ জুলাই ২০২৫

যে লক্ষণগুলো দেখলে বুঝবেন আপনার ভিটামিন ডি এর অভাব

ছবি:সংগৃহীত

ভিটামিন ডি আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি আমাদের হাড়কে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে, ক্যালসিয়াম শোষণ বাড়ায়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত করে, কোষের বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করে এবং প্রদাহ কমায়, যা জাতীয় স্বাস্থ্য সংস্থা (NIH) জানাচ্ছে। তবে, এই গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিনের অভাব অনেকের মধ্যেই দেখা যায়।

ভিটামিন ডি অভাবের উপসর্গগুলো কী কী?

১. ক্লান্তি বা অবসন্নতা
ভিটামিন ডি-র অভাবের প্রধান লক্ষণ হলো ক্লান্তি। আপনি যদি যথেষ্ট ঘুমিয়েও শরীরিক শক্তি অনুভব না করেন, তবে এটি ভিটামিন ডি-এর অভাবের একটি সাধারণ চিহ্ন হতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা ক্লান্তি অনুভব করেন, তাদের মধ্যে অনেকেই ভিটামিন ডি-র অভাবে ভুগছেন। যখন তারা ভিটামিন ডি গ্রহণ করেন, তারা অনেক বেশি উদ্যমী এবং খুশি অনুভব করেন।

২. অতিরিক্ত ঘাম
অনেক সময় অতিরিক্ত ঘামার অভ্যেস বা মুখে ঘাম দেখা দিলে, এটি ভিটামিন ডি-এর অভাবের লক্ষণ হতে পারে। বিশেষত যদি আপনার শরীরের তাপমাত্রা, পরিবেশ এবং শারীরিক পরিশ্রম অপরিবর্তিত থাকে, তবে অতিরিক্ত ঘাম একটি সতর্কতা হতে পারে।

৩. হতাশা বা উদ্বেগ
ভিটামিন ডি-এর অভাবের সাথে হতাশা এবং উদ্বেগের সম্পর্ক রয়েছে। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা ভিটামিন ডি-এর অভাবে ভুগছেন, তারা হতাশাগ্রস্ত হতে পারেন। এমনকি সিজনাল অ্যাফেক্টিভ ডিসঅর্ডার (SAD) নামক এক ধরনের হতাশা, যা শীতকালে সূর্যের আলো কম থাকার কারণে হয়, তাও ভিটামিন ডি-র অভাবে হতে পারে।

৪. পেশী বা হাড়ে ব্যথা
যদি দীর্ঘ সময় ধরে হাড় বা পেশীতে ব্যথা অনুভব করেন, তবে এটি ভিটামিন ডি-এর অভাবের কারণ হতে পারে। ভিটামিন ডি-এর অভাবের ফলে হাড় নরম হয়ে যেতে পারে এবং ফলে জয়েন্টে ব্যথা অনুভূত হয়।

৫. হাড় ভাঙা
ভিটামিন ডি শরীরের হাড় গঠনে সহায়তা করে। তাই যদি আপনি বারবার হাড় ভেঙে ফেলেন, তবে এটি ভিটামিন ডি-এর অভাবের লক্ষণ হতে পারে। শিশুদের মধ্যে এটি রিকেটস নামক একটি রোগ সৃষ্টি করতে পারে, এবং প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে এটি অস্টিওপোরোসিস (হাড়ের দুর্বলতা) সৃষ্টি করতে পারে।

ভিটামিন ডি কীভাবে বাড়াবেন?
ভিটামিন ডি পেতে আপনি তিনটি উপায় অনুসরণ করতে পারেন: সূর্যালোক, খাদ্য, অথবা সাপ্লিমেন্টের মাধ্যমে।

সূর্যালোক:
সূর্যের আলোর মাধ্যমে আপনার শরীর ভিটামিন ডি তৈরি করতে পারে, তবে এটি মৌসুম, সময় এবং আবহাওয়ার ওপর নির্ভর করে। যদিও সূর্যালোক থেকে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়, কিন্তু অতিরিক্ত সূর্যের তাপে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে, তাই অগত্যা আপনাকে খাদ্য বা সাপ্লিমেন্টের মাধ্যমে এটির চাহিদা পূরণ করা উচিত।

খাদ্য:
ভিটামিন ডি কিছু নির্দিষ্ট খাবারে পাওয়া যায়, যেমন—

  • তেলযুক্ত মাছ (স্যালমন, ট্রাউট, টুনা)
  • মাছের লিভার তেল
  • গরুর লিভার
  • ডিমের কুসুম
  • চিজ
  • মাশরুম
  • এছাড়া, কিছু খাবারে ভিটামিন ডি যুক্ত থাকে, যেমন—
  • দুধ
  • প্ল্যান্ট বেসড দুধ (সয়া, বাদাম, ওট)
  • ব্রেকফাস্ট সিরিয়াল
  • কমলা রস
  • দই

সাপ্লিমেন্ট:
যদি খাদ্য থেকে যথেষ্ট ভিটামিন ডি না পাওয়া যায়, তাহলে সাপ্লিমেন্ট নেওয়া যেতে পারে। তবে সাপ্লিমেন্ট নেওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

ভিটামিন ডি-এর অভাব আপনার শরীরের উপর অনেক ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। তাই যদি আপনি উপরের কোনো লক্ষণ অনুভব করেন, তবে দ্রুত পরীক্ষা করিয়ে নিন এবং আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

 
 

মারিয়া

×