
বয়ঃসন্ধিকালে কিশোরদের আচরণে আকস্মিক পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। অনেক সময় দেখা যায়, ১৬ থেকে ১৮ বছর বয়সী ছেলে সন্তান হঠাৎ করেই সহজ কথায় রেগে যায়, কারও পরামর্শ বা নির্দেশনা সহজে মেনে নিতে চায় না—even বাবা-মায়ের কথাও বিরক্তির সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করে। কেন এমন আচরণ?
বিজ্ঞান বলছে, এর পেছনে রয়েছে হরমোনজনিত পরিবর্তন—বিশেষ করে টেস্টোস্টেরনের প্রভাব।
১৬ বছর বয়সে ছেলেদের শরীরে হঠাৎ করে টেস্টোস্টেরন হরমোনের উৎপাদন বেড়ে যায়। এই হরমোন মূলত একজন পুরুষের দেহের শারীরিক ও মানসিক গঠনে বড় প্রভাব ফেলে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় রাগ, জেদ, আত্মপ্রতিষ্ঠার তীব্র ইচ্ছা এবং নিয়ন্ত্রণহীন আচরণ দেখা দিতে পারে।
এই সময়টায় কিশোররা অনেক সময় নিজ পরিবারের প্রতি বিদ্বেষ অনুভব করে। "আমার বাবা-মা আমাকে বেশি শাসন করছে"—এই অনুভূতি থেকে তারা অভিভাবকদের প্রতি বিরূপ মনোভাব পোষণ করে। অথচ, এমন আচরণের মূল কারণ বায়োলজিকাল।
তবে আশার কথা হলো—এই টেস্টোস্টেরনের প্রভাবকে ইতিবাচক পথে ব্যবহার করানো সম্ভব।
সমাধান: শারীরিক ক্রীড়ার সঙ্গে সম্পৃক্ততা
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বয়সে কিশোরদের কোনো না কোনো শারীরিক খেলাধুলার সঙ্গে যুক্ত করা গেলে শরীর টেস্টোস্টেরনের সঠিক ব্যবহার করতে পারে। ফুটবল, ক্রিকেট, বাস্কেটবল কিংবা মার্শাল আর্ট—যেকোনো ধরনের ক্রীড়াচর্চাই হতে পারে কার্যকর।
খেলাধুলা কিশোরদের মধ্যে আত্মনিয়ন্ত্রণ, সহনশীলতা ও লক্ষ্য স্থির রাখার ক্ষমতা গড়ে তোলে। একই সঙ্গে এই কার্যক্রম তাদের শরীরে টেস্টোস্টেরনের প্রবাহকে এমনভাবে কাজে লাগায়, যা ব্রেনে চাপ না দিয়ে শারীরিক পারফরম্যান্স বাড়ায়।
টেস্টোস্টেরনকে ইতিবাচক পথে ব্যবহার
যখন একটি কিশোর নিজেকে একটি খেলাধুলাভিত্তিক পরিবেশে পায়, তখন সে নিজের রাগ ও জেদকে শারীরিক উন্নতির মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করতে শুরু করে। যেমন—"আমি আরও জোরে বল করব", "আমি আরও জোরে ফুটবল কিক করব", ইত্যাদি মনোভাব তার মধ্যে তৈরি হয়। অর্থাৎ, তার হরমোন তখন আর ধ্বংসাত্মক না থেকে গঠনমূলক দিকে ধাবিত হয়।
সানজানা