
ছবি: জনকণ্ঠ
দেশে ও বিদেশে দক্ষ জনশক্তির ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে এবং কারিগরি শিক্ষার প্রসার ও মানোন্নয়নের মাধ্যমে মানবসম্পদ উন্নয়নের লক্ষ্যকে সামনে রেখে সরকার দেশব্যাপী ৩২৯টি উপজেলায় সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ (TSC) স্থাপনের বৃহৎ প্রকল্প গ্রহণ করেছে। প্রায় ২০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বাজেটের এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্বে রয়েছে কারিগরি শিক্ষা অধিদফতর।
১৯৬০ সালে প্রতিষ্ঠিত কারিগরি শিক্ষা অধিদফতরের ইতিহাসে এটিই প্রথম এত বড় পরিসরে সরকারি অর্থায়নে কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপনের উদ্যোগ। প্রকল্পের আওতায় প্রতিটি উপজেলায় আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন একটি করে টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ নির্মাণ করা হবে।
কারিগরি শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক শোয়াইব আহমদ খান জানিয়েছেন, “এই প্রতিষ্ঠানগুলোতে উন্নত অবকাঠামো, আধুনিক প্রশিক্ষণ যন্ত্রপাতি এবং দক্ষ শিক্ষক নিয়োগের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বাস্তবভিত্তিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। ফলে দেশের যুব সমাজ দক্ষ হয়ে কর্মসংস্থানে প্রবেশ করতে পারবে এবং বিদেশে প্রশিক্ষিত শ্রমিক পাঠানো সম্ভব হবে।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, দক্ষতা না থাকায় বর্তমানে দেশের প্রায় দেড় কোটি মানুষ বিদেশে গিয়ে স্বল্প মজুরিতে কাজ করছেন। ফলে বিপুলসংখ্যক শ্রমিক প্রবাসে গেলেও কাঙ্ক্ষিত বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হচ্ছে না। এই বাস্তবতায় কারিগরি শিক্ষা বিস্তারে সরকারের এই উদ্যোগ সময়োপযোগী ও বাস্তবসম্মত বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এই প্রকল্পের আওতায় কুড়িগ্রাম জেলার সাতটি উপজেলায় স্থাপিত হচ্ছে সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ। এগুলো হচ্ছে—ভুরুঙ্গামারী, চর রাজিবপুর, চিলমারী, ফুলবাড়ী, রাজারহাট, রৌমারী এবং উলিপুর উপজেলা।
এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে স্থানীয় শিক্ষার্থীরা আধুনিক কারিগরি শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পাবে। পাশাপাশি এ উদ্যোগ জেলার অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
সরকারি এই সিদ্ধান্তকে ঘিরে কুড়িগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় ইতোমধ্যেই ব্যাপক আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অভিভাবক ও তরুণ প্রজন্ম এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম শুরুর প্রতীক্ষায় রয়েছেন।
তারা মনে করছেন, এই প্রতিষ্ঠানগুলো শুধুমাত্র একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়, বরং এটি তাদের ভবিষ্যতের পথ প্রশস্ত করার এক নতুন দিগন্ত।
শহীদ