
ছবি: প্রতীকী
সম্পর্কের জগৎ জটিল ও বহুস্তরীয়। একজন পুরুষ রেগে গেলে তা চিৎকারে প্রকাশ পায়, কিন্তু চুপ থাকলে বোঝা যায় না তিনি চিন্তামগ্ন, না ভেতরে কিছু লুকিয়ে রাখছেন। পুরুষদের আবেগ বোঝা সহজ নয় – কারণ আবেগগত পরিপক্বতা মানে শুধু ঠান্ডা থাকা নয়, বরং গভীরভাবে নিজের ও অন্যের অনুভূতি বুঝে তা সম্মানের সঙ্গে পরিচালনা করা।
সম্প্রতি মনোবিজ্ঞানীদের বিশ্লেষণে উঠে এসেছে এমন ৮টি আচরণ, যা আবেগগতভাবে পরিপক্ক বা 'ম্যাচিউর' পুরুষদের চিনে নিতে সাহায্য করে। সম্পর্কের ভেতরে এই আচরণগুলো একজন পুরুষকে আরও দায়িত্বশীল, সংবেদনশীল এবং বিশ্বস্ত করে তোলে।
চলুন এক নজরে দেখে নেওয়া যাক—
১. সক্রিয়ভাবে মনোযোগ দিয়ে শোনা
ম্যাচিউর পুরুষরা শুধু কথা শোনেন না, অনুভব করেন। তাঁরা সঙ্গীর কথা, সুরের ওঠানামা, নিঃশব্দ বিরতি এবং না বলা কথাগুলোকেও উপলব্ধি করেন। বোঝার জন্য তাঁরা মন দেন, প্রতিক্রিয়ার জন্য অপেক্ষা করেন না।
২. আবেগ নিয়ন্ত্রণে দক্ষতা
তাঁরা রেগে গিয়ে হুট করে কিছু বলেন না। বরং সময় নিয়ে বোঝেন কেন এমন অনুভব করছেন, এবং তা কীভাবে প্রকাশ করলে সম্পর্ক ভালো থাকবে। এটাই পরিপক্বতার লক্ষণ।
৩. দুর্বলতা প্রকাশে আত্মবিশ্বাস
ভয়, দুঃখ বা সংশয় প্রকাশ করতে তাঁরা পিছপা হন না। তাঁরা জানেন, দুর্বলতা প্রকাশ মানেই ঘনিষ্ঠতার দরজা খুলে দেওয়া। এটি সাহসিকতারই আরেক রূপ।
৪. সীমানা মানা ও সম্মান করা
সঙ্গীর ব্যক্তিগত পরিসর, সময় ও মানসিক চাহিদা তাঁরা বোঝেন ও সম্মান করেন। একই সঙ্গে নিজেদের সীমারেখাও নির্ধারণ করে তাতে স্থির থাকেন।
৫. কমিটমেন্টে দৃঢ়তা
কমিটমেন্টকে তাঁরা বন্ধন নয়, বরং মিলেমিশে এগিয়ে চলার সাহস হিসেবে দেখেন। তাঁরা দায়িত্ব নিতে দ্বিধা করেন না এবং সম্পর্ক উন্নয়নে উদ্যোগী থাকেন।
৬. প্রয়োজনে ছেড়ে দেওয়ার মানসিকতা
সব কিছুকে আঁকড়ে না ধরে কখন, কী ছেড়ে দেওয়া উচিত – তা তাঁরা বুঝতে পারেন। তা হতে পারে রাগ, ক্ষোভ, কিংবা এমন একটি সম্পর্ক যা আর ইতিবাচক নয়।
৭. সঙ্গীর স্বাতন্ত্র্যকে মর্যাদা দেওয়া
তাঁরা সঙ্গীকে বদলাতে চান না, বরং যেভাবে তিনি আছেন, সেভাবেই তাঁকে ভালোবাসেন। এই গ্রহণযোগ্যতাই সম্পর্ককে গভীর করে তোলে।
৮. খোলামেলা ও সৎ যোগাযোগ
জটিল বা কঠিন প্রসঙ্গেও তাঁরা কথা বলতে পিছপা হন না। সত্য, সরলতা ও সহানুভূতির সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং সঙ্গীর কথাও মন দিয়ে শোনেন।
বিশ্বখ্যাত মনোবিজ্ঞানী কার্ল রজার্স বলেছিলেন, “The good life is a process, not a state of being. It is a direction, not a destination.” ঠিক তেমনই, আবেগগত পরিপক্বতাও কোনো গন্তব্য নয়, এটি একটি চলমান যাত্রা।
সম্পর্কে ভালো সঙ্গী হতে গেলে প্রতিদিন শেখা, বদলানো এবং নিজের ভেতরের মানুষটিকে গড়ে তোলাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ – এবং একইসঙ্গে, সবচেয়ে বড় শক্তি।
এম.কে.