
ছবি: প্রতীকী
৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করলে, দেশের দায়িত্ব কাঁধে নেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে তিনি শপথ নেন এবং শুরু করেন দেশকে আর্থিক সংকট থেকে টেনে তোলার যুদ্ধ।
মাত্র আট মাসের মধ্যে এলএনজি আমদানির বকেয়া বিল ৬৬৫.৭৬ মিলিয়ন ডলার থেকে কমিয়ে আনা হয়েছে মাত্র ১০ মিলিয়ন ডলারে। এরই মধ্যে মার্কিন কোম্পানি শেভরনের ২৩৭.৫৫ মিলিয়ন ডলার ও কাতার-ওমানের ৩১৭.৪৮ মিলিয়ন ডলার বকেয়া পরিশোধ সম্পন্ন হয়েছে।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের নেতৃত্বে এই খাতে বিশাল অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। তিনি জানান, বিল পরিশোধে বিলম্বের কারণে শুধু ভাবমূর্তিই ক্ষুণ্ণ হচ্ছিল না, বিশাল অঙ্কের জরিমানাও গুনতে হচ্ছিল।
অন্তর্বর্তী সরকারের কঠোর আর্থিক শৃঙ্খলা এবং সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণের ফলে সেই পরিস্থিতির আমূল পরিবর্তন ঘটেছে। ব্যাংকগুলোর সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং বিশেষ করে প্রবাসীদের রেমিটেন্স এই সাফল্যের অন্যতম চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রেমিটেন্স এসেছে ২৩.৯২ বিলিয়ন ডলার। অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে অক্টোবর পর্যন্ত তিন মাসেই এসেছে ৭.০৩ বিলিয়ন ডলার, যার ২.০৬ বিলিয়ন ডলার এসেছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের মাধ্যমে। এটি মোট রেমিটেন্সের ২৯.২৭ শতাংশ।
যেখানে পতিত শেখ হাসিনা দেশের অর্থ লুট করে বিদেশে পাচারে ব্যস্ত ছিলেন, সেখানে ড. ইউনূস তাঁর সদিচ্ছা, স্বচ্ছতা ও দক্ষ ব্যবস্থাপনায় মাত্র আট মাসেই একটি ভিন্ন বাংলাদেশ উপহার দিয়েছেন। যা সম্ভব হয়েছে সদিচ্ছা, কঠোর নিয়ন্ত্রণ এবং আর্থিক শৃঙ্খলার কারণে।
জ্বালানি খাতে আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখ থেকে বেরিয়ে আজ বাংলাদেশ দাঁড়িয়ে আছে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হিসেবে। এটি কেবল একটি অর্থনৈতিক নয়, প্রশাসনিক দৃষ্টিকোণ থেকেও একটি ব্যতিক্রমী উদাহরণ।
রাকিব