
ছবি: প্রতীকী
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীর, মন ও আবেগে নানা পরিবর্তন আসে। কারও কাছে অবসরের সময় মানে বিশ্রাম ও শান্তি, আবার অনেকের জন্য এটি শারীরিক, মানসিক ও আবেগজনিত নানা চ্যালেঞ্জের সময়। বয়স বাড়লে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে, আর তাই সুস্থ থাকতে স্বাস্থ্যকর খাবার ও শারীরিক কসরতের পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে।
সম্প্রতি কার্ডিওলজিস্ট ও বার্ধক্য বিষয়ক গবেষক ডা. এরিক টোপোল দ্য মেল রবিনস পডকাস্ট-এ এক চমকপ্রদ তথ্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, নিয়মিত শরীরচর্চা—বিশেষ করে সুনির্দিষ্টভাবে অনুশীলনের একটি অভ্যাস—জৈবিক বয়স কমাতে কার্যকরভাবে ভূমিকা রাখে।
মানবদেহে দুটি বয়স ধরা হয়—একটি হলো কালানুক্রমিক বয়স, অর্থাৎ জন্ম থেকে শুরু করে যত বছর পেরিয়েছে; অপরটি হলো জৈবিক বয়স, যা নির্ধারিত হয় কোষের স্বাস্থ্য, শারীরিক সক্ষমতা ও অঙ্গপ্রত্যঙ্গের কার্যকারিতার ওপর ভিত্তি করে। এই জৈবিক বয়স প্রকৃত বয়সের চেয়ে কম হলে তা ভালো স্বাস্থ্যের ইঙ্গিত দেয়।
ডা. টোপোলের মতে, আধুনিক বিজ্ঞানে ‘এপিজেনেটিক ক্লক’-এর মাধ্যমে জৈবিক বয়স নির্ধারণ করা সম্ভব। কেউ যদি প্রকৃতপক্ষে ৭০ বছরের হন, কিন্তু তার জৈবিক বয়স ৬০ হয়, তাহলে সেটা "জ্যাকপট পাওয়ার মতোই", এমনটাই মনে করেন তিনি।
তিনি বলেন, “অনুশীলনই একমাত্র বিষয় যা আমাদের জৈবিক বয়স কমাতে সহায়তা করে।” দীর্ঘদিন ধরে তিনি সপ্তাহে কমপক্ষে পাঁচ দিন, প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট করে হাঁটা, ট্রেডমিল, সাইকেল চালানো বা এলিপ্টিক্যাল মেশিনে ব্যায়াম করার পরামর্শ দিয়ে আসছেন। পাশাপাশি রেজিস্টেন্স ট্রেনিং—যেমন ভারোত্তোলন বা রেজিস্ট্যান্স ব্যান্ড ব্যবহারের মাধ্যমেও দারুণ সুফল পাওয়া যায় বলে জানান তিনি।
ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিনে প্রকাশিত একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত হালকা হাঁটা এবং রেজিস্টেন্স ট্রেনিং হৃদরোগ ও বিপাকজনিত রোগের ঝুঁকি হ্রাস করে। শুধু তাই নয়, শরীরচর্চা মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করে এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের দক্ষতাও বাড়ায়।
ডা. টোপোলের পরামর্শ অনুযায়ী, এরোবিক এক্সারসাইজের পাশাপাশি রেজিস্টেন্স ট্রেনিংও রুটিনে রাখা উচিত। এতে শুধু শক্তি ও সহনশীলতা বাড়ে না, বরং শরীরের ভারসাম্য ও অঙ্গবিন্যাসও উন্নত হয়। নিয়মিত এই অভ্যাস গড়ে তুললে নিজের ভেতরেই এক ইতিবাচক পরিবর্তন টের পাওয়া যাবে।
তার কথায়, “আপনি যখন এটি রুটিনে পরিণত করবেন, তখন নিজেই বলবেন—‘ওয়াও! আমি কতটা সুস্থ ও ফিট!’”
এম.কে.