ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ৩০ জুলাই ২০২৫, ১৫ শ্রাবণ ১৪৩২

যেসব দেশে বিয়ে করলেই মিলবে বিদেশি পাসপোর্ট

প্রকাশিত: ২১:১৭, ২৯ জুলাই ২০২৫

যেসব দেশে বিয়ে করলেই মিলবে বিদেশি পাসপোর্ট

জীবনের মান উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রতিদিনই অসংখ্য মানুষ এক দেশ থেকে আরেক দেশে পাড়ি জমাচ্ছেন কেউ উচ্চশিক্ষার জন্য, কেউ জীবিকার সন্ধানে, কেউবা ব্যবসা কিংবা ভ্রমণের উদ্দেশ্যে। তবে যে দেশে দীর্ঘমেয়াদে থাকা কিংবা কাজ করার ইচ্ছা, সে দেশের নাগরিকত্ব পাওয়া প্রায়ই হয়ে দাঁড়ায় জটিল ও সময়সাপেক্ষ একটি প্রক্রিয়া।

তবে বিশ্বায়নের এই যুগে কিছু দেশ এমন সুযোগ দিচ্ছে, যেখানে শুধুমাত্র সেই দেশের নাগরিককে বৈধভাবে বিয়ে করলেই মিলতে পারে নাগরিকত্ব। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা হয় খুব সহজ প্রক্রিয়ায়, আবার কিছু দেশে কিছু নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করতে হয়। জনপ্রিয় ভ্রমণ ও আন্তর্জাতিক নাগরিকত্ববিষয়ক ওয়েবসাইট NoMad Capitalist এমন কিছু দেশের তালিকা প্রকাশ করেছে, যেখানে বৈবাহিক সম্পর্কই হতে পারে নতুন পাসপোর্টের চাবিকাঠি।

কেপভার্দে: বিয়েই যথেষ্ট

আফ্রিকার সৌন্দর্যঘেরা দ্বীপরাষ্ট্র কেপভার্দে। এই দেশে কোনো নাগরিককে বিয়ে করলেই নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করা যায়। আশ্চর্যের বিষয়, এখানে বসবাস বা অতিরিক্ত কোনো শর্ত পূরণের দরকার হয় না শুধু বৈধ বিয়েই যথেষ্ট।

স্পেন: এক বছরেই নাগরিকত্ব

দক্ষিণ ইউরোপের উদার দেশ স্পেনে, স্প্যানিশ নাগরিককে বিয়ে করলে মাত্র এক বছর পরেই নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করা যায়। এর সঙ্গে যুক্ত হয় দ্বৈত নাগরিকত্বের সুবিধা যেমন লাতিন আমেরিকা, ফিলিপাইন, পর্তুগালের নাগরিকত্বও রাখা যায়। শর্ত হিসেবে থাকতে হবে বৈধ বিয়ের সনদ, একসঙ্গে বসবাসের প্রমাণ এবং স্প্যানিশ ভাষা ও সংস্কৃতি সম্পর্কে প্রাথমিক জ্ঞান।

আর্জেন্টিনা: মাত্র দুই বছরে সুযোগ

বিশ্বকাপজয়ী দেশ আর্জেন্টিনায় স্থানীয় নাগরিককে বিয়ে করলে মাত্র দুই বছর পরেই নাগরিকত্বের আবেদন করা যায়। প্রয়োজন বৈধ বিয়ের প্রমাণ, স্প্যানিশ ভাষাজ্ঞান এবং অপরাধমুক্ত থাকার নিশ্চয়তা।

মেক্সিকো: দ্বৈত নাগরিকত্বের সুযোগ

মেক্সিকান নাগরিককে বিয়ে করলেই দুই বছরের মধ্যেই নাগরিকত্ব মিলবে। এই দেশের বিশেষত্ব হলো মেক্সিকোর নাগরিকত্ব পেলেও পূর্বের দেশের পাসপোর্ট রাখতে কোনো বাধা নেই।

তুরস্ক: তিন বছরের বৈধ সংসারই যথেষ্ট

তুরস্কে নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য আলাদা ভাষা বা সংস্কৃতিজ্ঞান লাগে না। বৈধভাবে একত্রে তিন বছর দাম্পত্য জীবন কাটালেই নাগরিকত্বের আবেদন করা যায়। তুর্কি নাগরিকত্ব পেলে বিশ্বের ১১০টিরও বেশি দেশে ভিসা-ফ্রি বা অন-অ্যারাইভাল সুবিধা পাওয়া যায়।

সুইজারল্যান্ড: কঠোর হলেও সম্ভব

সুইজারল্যান্ডে অভিবাসন নীতি কঠোর হলেও বৈধ বিয়ের মাধ্যমে নাগরিকত্ব পাওয়া সম্ভব। বৈধভাবে একসঙ্গে তিন বছর বসবাস করলে এবং সুইস সমাজে একীভূত হওয়ার প্রমাণ দেখাতে পারলে পাঁচ বছর পর নাগরিকত্বের আবেদন করা যায়। দেশের বাইরে থেকেও ছয় বছরের বৈবাহিক সম্পর্ক থাকলে আবেদন করা সম্ভব।

অন্যান্য দেশ

এছাড়াও কানাডা, আয়ারল্যান্ড, ফ্রান্স, নিউজিল্যান্ড, ডেনমার্কসহ আরও অনেক দেশ নির্দিষ্ট শর্ত সাপেক্ষে নাগরিকত্ব প্রদানে বৈবাহিক সম্পর্ককে গুরুত্ব দিয়ে থাকে।

বিশ্বজুড়ে প্রেম এখন শুধু আবেগের নয়, অনেকের কাছে জীবন গড়ার হাতিয়ারও। তবে শুধু নাগরিকত্ব পাওয়ার উদ্দেশ্যে বিয়ে করাকে অনেক দেশেই সন্দেহের চোখে দেখা হয়, এবং এই প্রক্রিয়ায় জালিয়াতি প্রমাণিত হলে আইনি জটিলতাও সৃষ্টি হতে পারে। তাই ভালোবাসা হোক সত্যিকারের, আর নাগরিকত্ব আসুক তার সুফল হিসেবে।

Jahan

আরো পড়ুন  

×