ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৬ জুলাই ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২

ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ

দ্রুততম সময়ে গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হবে

প্রকাশিত: ০৫:২৫, ৯ জুলাই ২০২৫

দ্রুততম সময়ে গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হবে

ছ‌বি: সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক উপদেষ্টা জানিয়েছেন, গাজায় যুদ্ধবিরতির বিষয়ে একটি চুক্তি খুব শিগগিরই হতে যাচ্ছে। তিনি জানান, চলমান আলোচনায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে এবং সপ্তাহের শেষ নাগাদ ৬০ দিনের একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি চূড়ান্ত হতে পারে।

মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা এখন ‘প্রক্সিমিটি টকস’-এ আছি। চারটি প্রধান ইস্যু ছিল, তার মধ্যে তিনটি সমাধান হয়েছে মাত্র দুই দিনে। এখন শুধু একটি বিষয় বাকি রয়েছে।”

তিনি আরও জানান, এই চুক্তির আওতায় ১০ জন ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্ত করা হবে এবং ৯ জনের মরদেহ ফেরত দেওয়া হবে। উইটকফ বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি এই চুক্তি গাজায় স্থায়ী শান্তির পথ তৈরি করবে।”

মঙ্গলবার ওয়াশিংটনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তিনি জানান, “ইসরায়েল এখনও গাজায় তাদের ‘অভিযান’ শেষ করেনি, তবে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনাও চলছে।”

সোমবার হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও নেতানিয়াহুর মধ্যাহ্নভোজের সময় গাজা পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা হয়। মঙ্গলবার দু’জনের আবারও বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।

ট্রাম্প বলেন, “তিনি (নেতানিয়াহু) আজ আবার আসছেন। আমরা মূলত গাজা নিয়ে আলোচনা করব। এটা একটা ট্র্যাজেডি। আমরা এটা সমাধান করতে চাই, এবং আমি বিশ্বাস করি অন্য পক্ষও সেটা চায়।”

এদিকে কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় চলমান আলোচনা নিয়েও ইতিবাচক বার্তা এসেছে। কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি জানান, “মধ্যস্থতাকারীরা দিনরাত কাজ করছেন যাতে একটি গ্রহণযোগ্য কাঠামো তৈরি করা যায়।”

এদিকে, ইসরায়েলের গাজা যুদ্ধ ইতোমধ্যে ৫৭,৫০০ এর বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে এবং অঞ্চলটির প্রায় পুরো জনসংখ্যাকে ঘরছাড়া করেছে। হাজার হাজার মানুষ এখন অনাহারের মুখে।

জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলো ইসরায়েলের এই সামরিক অভিযানকে গণহত্যা বলে উল্লেখ করেছে।

সোমবার নেতানিয়াহু এক বক্তব্যে জানান, গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের ‘স্বেচ্ছামূলকভাবে’ চলে যাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল একসঙ্গে কাজ করছে। যদিও মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, বাস্তবতার প্রেক্ষিতে এটি কোনোভাবেই স্বেচ্ছামূলক নয়, বরং জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি।

বিখ্যাত আইন বিশেষজ্ঞ রালফ ওয়াইল্ড বলেন, “যেখানে প্রতিদিন হামলা, অবরোধ ও ধ্বংস চলছে, সেখানে থাকার বা না থাকার সিদ্ধান্তকে ‘স্বেচ্ছা’ বলা একপ্রকার মিথ্যা। এটি আসলে জোরপূর্বক স্থানান্তর।”

সব মিলিয়ে, গাজায় যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা জোরালো হলেও এর পেছনে যে রাজনৈতিক ও মানবিক বাস্তবতা আছে, তা এখনো গভীর উদ্বেগের বিষয় হয়ে রয়েছে।

সূত্র: আল জাজিরা

এম.কে.

×