ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৬ জুলাই ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২

যুদ্ধবিরতির মাঝেই চীনের কাছ থেকে ক্ষেপণাস্ত্রের চালান পেল ইরান

প্রকাশিত: ২০:৫৩, ৮ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ১১:৪৬, ৯ জুলাই ২০২৫

যুদ্ধবিরতির মাঝেই চীনের কাছ থেকে ক্ষেপণাস্ত্রের চালান পেল ইরান

ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েলের সঙ্গে সাম্প্রতিক ১২ দিনের যুদ্ধের পর যুদ্ধবিরতিতে যাওয়ার মধ্যেই চীন থেকে ভূমি-থেকে-আকাশে উৎক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র (SAM) হাতে পেয়েছে ইরান। আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করতে তেহরান এখন জোর দিচ্ছে অস্ত্রভাণ্ডার সমৃদ্ধ করার ওপর।

মিডল ইস্ট আই’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এক আরব গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, গত ২৪ জুন ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির পরই চীনের তৈরি SAM সিস্টেম ইরানে পৌঁছে যায়। যদিও চালানটির পরিমাণ বা নির্দিষ্ট মডেল সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি, তবে একজন কর্মকর্তা দাবি করেছেন, চীন থেকে ক্ষেপণাস্ত্রগুলো তেলের বিনিময়ে কিনেছে ইরান।

জ্বালানি খাতে ইরানের সবচেয়ে বড় ক্রেতা চীন। যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে চীন গত কয়েক বছর ধরে রেকর্ড পরিমাণ ইরানি তেল কিনে যাচ্ছে। ইউএস এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের তথ্য অনুযায়ী, ইরানের প্রায় ৯০ শতাংশ অপরিশোধিত তেল রপ্তানি হয় চীনে। নিষেধাজ্ঞা এড়াতে মালয়েশিয়া প্রভৃতি দেশকে ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে ব্যবহার করেছে চীন।

আরব বিশ্ব ও যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, এই অস্ত্রচালান তেহরান-বেইজিং সম্পর্কের একটি নতুন মাত্রা নির্দেশ করে। পশ্চিমা গোয়েন্দারা ধারণা করেছিলেন, সাম্প্রতিক সংঘাতকালে চীন ও রাশিয়া ইরান থেকে কৌশলগতভাবে দূরত্ব বজায় রেখেছিল। কিন্তু এই অস্ত্র সরবরাহ সে ধারণাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।

উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সংঘাতে ইসরায়েল সফলভাবে ইরানের আকাশে আধিপত্য দেখিয়ে কয়েকটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ কেন্দ্র ধ্বংস করে এবং শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন ইরানি সামরিক কর্মকর্তা ও পরমাণু বিজ্ঞানীকে হত্যা করে। পাল্টা হামলায় ইরানও ইসরায়েলের তেল আবিব ও হাইফায় কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় আঘাত হানে।

বর্তমানে ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষায় রয়েছে রাশিয়ার তৈরি এস-৩০০ ব্যবস্থা, যার সঙ্গে চীনের পুরোনো HQ সিরিজ, নিজস্ব উৎপাদিত খোরদাদ এবং বাভার-৩৭৩ ব্যবস্থাও ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে এইসব ব্যবস্থার মধ্যে আধুনিক মার্কিন F-35 স্টেলথ যুদ্ধবিমান মোকাবেলার ক্ষমতা সীমিত—যার প্রমাণ সাম্প্রতিক হামলাগুলো।

বিশ্লেষকদের মতে, নতুন চীনা SAM সিস্টেম যুক্ত হওয়ায় ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষায় নতুন মাত্রা যোগ হবে। এদিকে, চীন এর আগেও পাকিস্তান ও মিসরের কাছে HQ-৯ ও HQ-১৬ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা বিক্রি করেছে বলে জানা গেছে।

 

সূত্র: মিডল ইস্ট আই।

রাকিব

×