
ছবি: সংগৃহীত
কাশ্মীর ইস্যু ঘিরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান সামরিক উত্তেজনার সরাসরি প্রভাব পড়েছে ভারতের অর্থনীতিতে। শুক্রবার (৯ মে) বড় ধরনের ধসের মুখে পড়ে ভারতের শেয়ারবাজার।
শুক্রবার সকাল থেকে শুরু হওয়া এই পতনের মূল কারণ হিসেবে উঠে এসেছে সাম্প্রতিক সীমান্ত সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার খবর। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ভয়াবহ যুদ্ধের আশঙ্কা দেখা দেওয়ায় অধিকাংশ খাতেই দেখা যায় ব্যাপক বিক্রির চাপ।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, ৬ মে মধ্যরাতে ভারত আজাদ কাশ্মীরের বিভিন্ন স্থানে যে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে, তা ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে পরিচিতি পেয়েছে। এর জবাবে পাকিস্তানের পাল্টা হামলার ফলে উপমহাদেশে যুদ্ধের শঙ্কা বেড়ে গেছে বহুগুণ। এমন বাস্তবতায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন বিনিয়োগকারীরা।
শুক্রবার দিনের শেষে সেনসেক্স সূচক ৮৮০ পয়েন্ট কমে দাঁড়ায় ৭৯ হাজার ৪৫৪-এ। নিফটি সূচকও হোঁচট খেয়ে সামান্য ব্যবধানে ২৪ হাজারের ওপরে কোনোভাবে অবস্থান ধরে রাখে।
ক্ষুদ্র ও মাঝারি মূলধনী শেয়ারগুলোর মধ্যে পতনের হার ছিল আরও বেশি—কিছু শেয়ারে তা দুই শতাংশ পর্যন্ত নেমে গেছে।
বাজারে অস্থিরতার পরিমাপক ‘ইন্ডিয়া ভিক্স’ শুক্রবার ৬ শতাংশ বেড়ে পৌঁছায় ২২.২৭-এ, যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বাড়তে থাকা উদ্বেগ ও অনিশ্চয়তার স্পষ্ট প্রতিচ্ছবি।
প্রতিরক্ষা খাত ছাড়া বাকি সব খাতেই ছিল বিক্রির প্রবণতা। তবে যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে এই খাতের শেয়ারে উল্টো প্রবণতা দেখা যায়। ভারত ইলেকট্রনিকস ও হিন্দুস্তান অ্যারোনটিকস-এর শেয়ার ২ থেকে ৩ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যায়।
বিশ্লেষকদের মতে, প্রতিরক্ষা খাতে সরকারি ব্যয় বৃদ্ধির সম্ভাবনা এবং দীর্ঘমেয়াদি নীতিগত সমর্থনের প্রত্যাশা থেকেই এই শেয়ারগুলোতে আগ্রহ বাড়ছে।
অভিজ্ঞ বিনিয়োগকারী অম্বরীশ বালিগা ‘ইন্ডিয়া টুডে’-কে বলেন, বাজারে যে পতন ঘটেছে, তা আসলে উত্তেজনার পূর্ণ প্রতিফলন নয়। সামনে যদি সামরিক অবস্থার আরও অবনতি ঘটে, তাহলে এই ধস আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।
একজন বিনিয়োগকারী রয়টার্সকে জানান, আমরা ঝুঁকিপূর্ণ সব পজিশন বন্ধ করে দিচ্ছি। কারণ, ছুটির দিনে যদি পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়, তাহলে আগামী সপ্তাহে বাজারে বড় ধস অনিবার্য।
ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে যুদ্ধাবস্থার মতো উত্তেজনা এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা শুধু দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক নয়, অর্থনৈতিক ভিতকেও নড়বড়ে করে তুলছে। সামনের সপ্তাহে এই টানাপড়েন কেমন মোড় নেয়, সে দিকেই তাকিয়ে এখন গোটা বিনিয়োগ বিশ্ব।
এসএফ