
ছবি: সংগৃহীত
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আহ্বানে সাড়া দিয়ে কোকাকোলা কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আখের চিনি দিয়ে তৈরি কোক আনতে যাচ্ছে। গেল ১৬ জুলাই ট্রাম্প কমল পানি ও কোকাকোলায় কর্ন সিরাপের বদলে আখের চিনি ব্যবহারের পরামর্শ দেন। এরপরই স্বাস্থ্য সচিব রবার্ট এফ. কেনেডি জুনিয়র কর্ন সিরাপের স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলে “মেক আমেরিকা হেলদি এগেইন” প্রচারণার অংশ হিসেবে কোক তৈরি উপাদানে পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেয় কোম্পানিটি। চলতি বছরের শেষ নাগাদ মার্কিন বাজারে আসছে নতুন সংস্করণের কোক, যেটি হবে কর্ন সিরাপমুক্ত এবং আখের চিনি দিয়ে তৈরি।
যদিও বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, আখের চিনি কিংবা কর্ন সিরাপ—উভয়ের অতিরিক্ত গ্রহণই স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এর আগেও মেক্সিকোসহ কয়েকটি দেশে আখের চিনি ব্যবহৃত কোক বাজারজাত হয়ে আসছিল, এমনকি যুক্তরাষ্ট্রে কিছু অঞ্চলে মেক্সিকো থেকে আমদানি করা আখের চিনি দিয়ে তৈরি কোক পাওয়া যায়। তবে এবারই প্রথম নিজ দেশেই কোকাকোলা এই সংস্করণ তৈরি করতে যাচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, এতে উৎপাদন ব্যয় কিছুটা বাড়লেও বৈশ্বিক বাণিজ্য কাঠামোর কারণে কোকাকোলা তা সামাল দিতে পারবে। কোম্পানিটি জানিয়েছে, বিশ্বজুড়ে তাদের রাজস্বের ৬১ শতাংশ আসে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে, ফলে ভোক্তাদের চাহিদার ভিত্তিতে দীর্ঘমেয়াদি কৌশল গ্রহণ তাদের মূল লক্ষ্য।
কোম্পানির সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুযায়ী, গেল তিন মাসে কোকাকোলার রাজস্ব বেড়েছে ২.৫ শতাংশ, যার আর্থিক পরিমাণ প্রায় ১২ হাজার কোটি ডলার। যদিও অভিবাসন ইস্যুতে ট্রাম্পের বক্তব্যে কোকের নাম জড়ানোর পর মেক্সিকো ও ভারতের বাজারে বিক্রি কমেছে ১ শতাংশ, তবুও উচ্চমূল্যের কারণে সে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পেরেছে তারা। মুদ্রাস্ফীতির কারণে পণ্যমূল্য ৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেলেও লাভে ভাটা পড়েনি। বরং ডায়েট ও জিরো সুগার কোকের বিক্রি ১৪ শতাংশ বেড়েছে, বিশেষ করে নির্দিষ্ট ভৌগলিক অঞ্চলে এ ধরনের স্বাস্থ্যসচেতন বিকল্পের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে।
অন্যদিকে, অ্যালুমিনিয়ামের উপর ট্রাম্প প্রশাসনের সম্ভাব্য উচ্চ শুল্ক আরোপের হুমকির কারণে ক্যানের ব্যবহার কমিয়ে সাশ্রয়ী প্লাস্টিক বোতলের দিকে ঝুঁকছে কোকাকোলা। এভাবেই স্বাস্থ্য, বাণিজ্য, রাজনীতি ও ভোক্তা চাহিদার সমন্বয়ে নিজেদের কৌশলগত অবস্থান আরও শক্তিশালী করছে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ পানীয় প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানটি।
শেখ ফরিদ