
ছবি : সংগৃহীত
অল্প বয়স হোক বা বয়স্ক, আজকাল কোষ্ঠকাঠিন্য যেন নিত্যদিনের সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দিনে একবার মলত্যাগ স্বাভাবিক হলেও অনেকেই কয়েক দিন পরপর মলত্যাগ করেন, তাও প্রচণ্ড চাপ দিয়ে। চিকিৎসকদের মতে, এ সমস্যা অবহেলা করলে হতে পারে পাইলস, ফিশার এমনকি কোলন ক্যান্সারও।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী, কোষ্ঠকাঠিন্য মূলত জীবনযাত্রা ও খাদ্যাভ্যাসজনিত সমস্যা। পানির ঘাটতি, আঁশযুক্ত খাবারের অভাব, নিয়মিত না হাঁটা, চা-কফি বা ময়দাযুক্ত খাবার বেশি খাওয়া—এসবই মল কঠিন করে ফেলে। পাশাপাশি মানসিক চাপ ও কিছু ওষুধও দোষী হতে পারে।
কী খাবেন?
গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি বিভাগের চিকিৎসক ডা. ফারহানা ইসলাম বলেন, “প্রতিদিন অন্তত ২.৫ থেকে ৩ লিটার পানি পান করতে হবে। মেন্যুতে রাখতে হবে শাকসবজি, ফলমূল ও ভুসিযুক্ত খাবার।”
বিশেষ করে পেঁপে, পেয়ারা, কলা, কমলা, ওটস, লাল চাল, মুসুর ডাল, ইসবগুলের ভুসি কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে সাহায্য করে। টকদইও উপকারী, কারণ এতে প্রোবায়োটিক থাকে যা হজমে সাহায্য করে।
কী খাবেন না?
“যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন চা-কফি, সফট ড্রিংকস, চিজ, ফাস্ট ফুড ও ময়দাযুক্ত খাবার। এগুলো মলকে আরও শক্ত করে তোলে,” বলেন ডা. ফারহানা।
এছাড়া তেল-মসলা ও অতিরিক্ত ভাজাপোড়া খাবারও হজমের সমস্যার কারণ হতে পারে।
সক্রিয় থাকুন, দুশ্চিন্তা কমান
বিশেষজ্ঞদের মতে, দিনের অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটাহাঁটি বা হালকা ব্যায়াম করলেও অন্ত্রের গতি স্বাভাবিক হয়। পাশাপাশি মানসিক চাপ কমানোও জরুরি। অনেকে আবার মলত্যাগের সময় চাপ অনুভব করেও তা চেপে রাখেন—এটি পরবর্তীতে অভ্যাসে পরিণত হয়ে সমস্যা বাড়ায়।
কখন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন?
🔹 এক সপ্তাহের বেশি সময় মলত্যাগ না হলে
🔹 পেট ফুলে থাকা বা ব্যথা হলে
🔹 মলে রক্ত দেখা গেলে
🔹 হঠাৎ করে ওজন কমে গেলে
এমন উপসর্গ দেখা দিলে দেরি না করে গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিস্টের পরামর্শ নিতে হবে।
কোষ্ঠকাঠিন্য যেমন অস্বস্তিকর, তেমনি দীর্ঘমেয়াদে ভয়াবহ। একটু সচেতন হলেই এ সমস্যা এড়ানো সম্ভব। পানি খান বেশি, খান আঁশযুক্ত খাবার, এবং থাকুন সক্রিয়—তবেই মুক্তি মিলবে কোষ্ঠকাঠিন্যের জটিলতা থেকে।
Mily