ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৭ আগস্ট ২০২৫, ২৩ শ্রাবণ ১৪৩২

বিএনপির জুলাই গণঅভ্যুত্থান বর্ষপূর্তির মোটরযান শোডাউনে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার!

ওবাইদুল আকবর রুবেল, ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম

প্রকাশিত: ২৩:৩৯, ৬ আগস্ট ২০২৫

বিএনপির জুলাই গণঅভ্যুত্থান বর্ষপূর্তির মোটরযান শোডাউনে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার!

চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে সরকারি প্রতিষ্ঠান মালিকানাধীন ‎একটি এম্বুলেন্স রাজনৈতিকভাবে ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। ‎‎মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সরওয়ার আলমগীর ‘জুলাই-আগস্ট বিজয় শোডাউনে’ এটি ব্যবহার করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, অ্যাম্বুলেন্সটি সাইরেন বাজিয়ে পুরো সদর এলাকায় ঘোরে, অথচ তাতে কোনো রোগী ছিল না। বরং সেটি ব্যবহৃত হয় রাজনৈতিক প্রচারণার অংশ হিসেবে শোডাউনে। এতে বিস্মিত স্থানীয় বাসিন্দারা একে ‘সরকারি সম্পদের নগ্ন অপব্যবহার’ বলে মন্তব্য করেছেন।

পৌর এলাকার বাসিন্দা আলী আকবর বলেন, ‘এই অ্যাম্বুলেন্স তো রোগীদের জন্য বরাদ্দ! অথচ এখন তা রাজনৈতিক ব্যক্তিদের শোডাউনে ব্যবহার হচ্ছে, এটা জনগণের সঙ্গে সরাসরি বিশ্বাসঘাতকতা।’

পৌর কার্যালয়ের এক প্রশাসনিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ‘সরকারি অ্যাম্বুলেন্স শুধুমাত্র রোগী পরিবহনের জন্য অনুমোদিত। অন্য কোনো কাজে ভাড়া দেওয়ার সুযোগ নেই। তিনি দাবী করেন, করোনাকালীন সময়ে শিক্ষার্থীরা অ্যাম্বুলেন্সটি পৌরসভাকে দান করেছিলেন। এটি রেজুলেশনে স্পষ্ট উল্লেখ ছিলো কোন ভাবেই এটি ব্যক্তিস্বার্থে ব্যবহার করা যাবে না।’ 

তবে, বিএনপি নেতা ফটিকছড়ি পৌরবাসিন্দা ও রাঙ্গামটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘হ্যাঁ, আমরা অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া নিয়ে শোডাউনে ব্যবহার করেছি। কর্তৃপক্ষ আমাদের ভাড়া দিয়েছেন।’

উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কর্ণেল (অবঃ) আজিমুল্লাহ্ বাহার বলেছেন, 'জুলাই অভ্যুত্থানে দলের শোডাউনে সরকারি সম্পত্তির ব্যবহার কোনভাবেই উচিত হয়নি। সেটির সাথে রাজনৈতিক যে নেতা জড়িত তিনি অদূরদর্শী ও অপরিপক্ক। দলকে ডুবাতে এটি একটি ইস্যু হতে পারে। বিএনপির বিরুদ্ধে আজও দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র চলছে। এটি তরুণ প্রজন্মের জন্য একটি খারাপ বার্তা। একটি নতুন ও গণতান্ত্রিক দেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নে এসব গর্হিত কাজ বড় বাধাঁ।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক মো. সরওয়ার আলমগীর বলেন,"বিজয় শোডাউনে যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে দলের আহত নেতাকর্মীদের পরিবহনের জন্য অ্যাম্বুলেন্সটি ভাড়া নেওয়া হয়েছিল। এটি সরকারি না বেসরকারি, তা আমার জানা ছিল না।”

ফটিকছড়ি পৌরসভার প্রশাসক ও ইউএনও মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, "বিষয়টি আমার জানা ছিল না। যেহেতু অভিযোগ উঠেছে, আমরা তদন্ত করে দেখব এবং সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”

 

রাজু

আরো পড়ুন  

×