
ছবি: সংগৃহীত
দাঁত মাজেন নিয়মিত, তারপরও মুখ খুললেই নাক সিঁটকায় আশপাশের মানুষ? এই বিব্রতকর সমস্যার নাম হ্যালিটোসিস বা নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ, যা দাঁতের সমস্যা, মুখের ব্যাকটেরিয়া, এমনকি অভ্যন্তরীণ শারীরিক অসংগতির কারণে হতে পারে।
চিকিৎসকদের মতে, পর্যাপ্ত পানি না খাওয়া, পেটের গোলমাল, কোষ্ঠকাঠিন্য, ঘুমের সময় মুখ দিয়ে শ্বাস নেওয়া—সব মিলিয়েই মুখে দুর্গন্ধ বাড়ে। তবে আশার কথা হলো, আপনার রান্নাঘরে থাকা কিছু সাধারণ উপাদান দিয়েই মাত্র কয়েক সেকেন্ডে দূর করা যেতে পারে এই সমস্যা।
ঘরোয়া সমাধান
দারচিনি
দারচিনির অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করে। মুখে ছোট একটি দারচিনির টুকরো রেখে কয়েক মিনিট রাখলেই মিলতে পারে সুফল।
মধু ও দারচিনি পেস্ট
দাঁত ও মাড়ির স্বাস্থ্য ভালো রাখতে নিয়মিত মধু-দারচিনির পেস্ট ব্যবহার উপকারী। এটি দাঁতের ক্ষয়, মাড়ি থেকে রক্তপাত এবং মুখের দুর্গন্ধের ঝুঁকি কমায়।
লবঙ্গ
লবঙ্গ মুখের দুর্গন্ধ ও মাড়ির ফোলা সমস্যা দূর করে। এর অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান মুখের জীবাণু কমায়। কয়েকটি লবঙ্গ চিবিয়ে নিলেই কাজ দেয়।
লবণ মিশ্রিত পানি দিয়ে গার্গল
গরম পানিতে আধা চা চামচ লবণ মিশিয়ে গার্গল (কুলি) করলে মুখের খারাপ ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হয়। বিশেষত বাইরে বের হওয়ার আগে এটি ব্যবহার করলে অনেকটা সময় দুর্গন্ধমুক্ত থাকা যায়।
মুখে দুর্গন্ধের অন্যান্য কারণ
চিকিৎসকরা বলেন, মুখে যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে স্যালাইভা বা থুতু না তৈরি হয়, তাহলে ড্রাই মাউথ অবস্থায় খাবারের কণা জমে মুখে দুর্গন্ধ সৃষ্টি করে। এছাড়া ডায়াবেটিস, টনসিল স্টোন, সাইনাস সংক্রমণ, গ্যাস্ট্রিক সমস্যা, অ্যাসিডিটি কিংবা বদহজম থেকেও এমন সমস্যা হতে পারে।
ভিটামিন সি ও ডি-র ঘাটতি থাকলেও মুখে ক্ষত বা সংক্রমণের কারণে দুর্গন্ধ দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে দাঁতের মাড়ির সমস্যা, দাঁত আলগা হয়ে যাওয়া, কিংবা ক্যালসিয়াম শোষণের অভাবে দাঁতের ক্ষয় এগুলোর পেছনে দায়ী হতে পারে।
করণীয়
- দিনে অন্তত ২ লিটার পানি পান করুন
- মিষ্টি বা প্রসেসড খাবার কম খান
- নিয়মিত দাঁত মাজুন এবং জিভ পরিষ্কার করুন
- মাউথওয়াশ ব্যবহার করুন
- নিয়মিত দাঁতের চিকিৎসকের পরামর্শ নিন
চিকিৎসা নিতে দেরি না করে, যদি মুখের দুর্গন্ধ দীর্ঘস্থায়ী হয় অথবা তার সঙ্গে দাঁত-মাড়ির সমস্যা থাকে, তবে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
রাকিব