
ছবি: সংগৃহীত।
বিশ্বজুড়ে দ্রুত হারে বাড়ছে কোলন ক্যান্সারের (Colon Cancer) প্রকোপ। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি নিরব ঘাতক হিসেবে শরীরে ধীরে ধীরে বিস্তার করে, ফলে প্রাথমিক পর্যায়ে অনেকেই বুঝতে পারেন না। পুরুষ-মহিলা উভয়ের মধ্যেই এই ক্যান্সারের ঝুঁকি রয়েছে। তবে কিছু নির্দিষ্ট লক্ষণ ও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা সম্পর্কে সচেতন থাকলে আগেভাগেই রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা সম্ভব।
কোলন ক্যান্সারের সাধারণ লক্ষণ:
স্বাস্থ্য গবেষণা সংস্থাগুলোর তথ্যমতে, কোলন বা মলাশয়ের ক্যান্সারের প্রধান লক্ষণগুলো হলো:
১. পেটের ব্যথা ও অস্বস্তি – বিশেষ করে দীর্ঘমেয়াদে গ্যাস, পেট ফাঁপা বা ব্যথা অনুভব করলে সতর্ক হওয়া উচিত।
২. মলত্যাগের অভ্যাসে পরিবর্তন – ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য হঠাৎ বেড়ে যাওয়া এবং তা কয়েক সপ্তাহ স্থায়ী হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
৩. মলে রক্ত – লাল বা গা dark় রঙের রক্ত দেখা গেলে তা কোলন ক্যানসারের উপসর্গ হতে পারে।
৪. অপূর্ণ মলত্যাগের অনুভূতি – মলত্যাগের পরও মনে হওয়া যে পেট পুরোপুরি পরিষ্কার হয়নি, এমন হলে সাবধান হওয়া দরকার।
৫. ওজন হ্রাস – কোনো কারণ ছাড়াই ওজন কমতে থাকলে তা ক্যান্সারের ইঙ্গিত হতে পারে।
৬. দুর্বলতা ও ক্লান্তিভাব – শরীরে ক্যান্সার থাকলে তা শক্তির ঘাটতি তৈরি করতে পারে।
কারা বেশি ঝুঁকিতে:
বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু নির্দিষ্ট শ্রেণির মানুষের মধ্যে কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে বেশি:
৫০ বছর বা তার বেশি বয়সীদের মধ্যে ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি, যদিও এখন তরুণদের মধ্যেও এই রোগ দেখা যাচ্ছে।
পরিবারে ক্যান্সারের ইতিহাস থাকলে, বিশেষ করে কোলন বা রেকটাল ক্যান্সার থাকলে, ঝুঁকি বেড়ে যায়।
দীর্ঘমেয়াদী কোষ্ঠকাঠিন্য বা পলিপ (Colon Polyps) থাকলে ক্যান্সারে রূপ নেবার সম্ভাবনা বেশি।
ধূমপান ও মদ্যপান দীর্ঘমেয়াদে কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।
চর্বিযুক্ত ও প্রক্রিয়াজাত খাবারের প্রতি নির্ভরতা, যেমন: রেড মিট ও ফাস্ট ফুডের অতিরিক্ত সেবন।
ব্যায়ামের অভাব ও স্থূলতা।
করণীয়:
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পঞ্চাশোর্ধ্ব ব্যক্তিদের নিয়মিত কোলোনোস্কপি পরীক্ষা করানো উচিত। তাছাড়া, মল পরীক্ষা ও ফিট (FIT) টেস্টের মাধ্যমে প্রাথমিক ধাপে রোগ ধরা পড়তে পারে।
সচেতনতা, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও স্বাস্থ্যকর জীবনধারাই কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধের অন্যতম উপায়। সময়মতো রোগ শনাক্ত হলে চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থতা লাভ করা সম্ভব।
মিরাজ খান