
ছবি : সংগৃহীত
বাংলাদেশে ফ্যাটি লিভার এখন এক ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকির নাম। আগে এটি মধ্যবয়সীদের রোগ হিসেবে পরিচিত থাকলেও বর্তমানে তরুণদের মাঝেও এর প্রকোপ বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস, অতিরিক্ত চিনি খাওয়া, প্রসেসড খাবারের প্রতি আসক্তি ও কায়িক পরিশ্রমের অভাবই এর মূল কারণ।
তবে সুখবর হলো, কিছু প্রাকৃতিক উপায় অবলম্বন করেই ফ্যাটি লিভার নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। পুষ্টিবিদরা জানিয়েছেন, প্রতিদিনের খাদ্যতালিকা ও জীবনযাত্রায় কিছু ছোট পরিবর্তন এনে অনেকটাই সুস্থ থাকা যায়।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ
পুষ্টিবিদদের মতে, ফ্যাটি লিভার হলে প্রথমেই আতঙ্কিত না হয়ে নিয়মিত রুটিন মেনে চলা উচিত। চিকিৎসা নেওয়ার পাশাপাশি ঘরোয়া ও প্রাকৃতিকভাবে লিভার সুস্থ রাখার চেষ্টাও সমান জরুরি।
পুষ্টিবিদদের মতে ফ্যাটি লিভার প্রতিরোধে কার্যকর ৭টি টিপস:
🔹 ১. অতিরিক্ত চিনি ও প্রসেসড খাবার বাদ দিন
প্যাকেটজাত জুস, সফট ড্রিংকস, মিষ্টি, বিস্কুট ও ফাস্টফুডে থাকা চিনি লিভারে চর্বি জমিয়ে দেয়। এগুলো যতটা সম্ভব বাদ দেওয়া জরুরি।
🔹 ২. ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন
মাত্র ৫ থেকে ১০ শতাংশ ওজন কমাতে পারলেই লিভারের ফ্যাট উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসে বলে জানাচ্ছেন পুষ্টিবিদরা।
🔹 ৩. প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট ব্যায়াম করুন
হাঁটা, সাইকেল চালানো, ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ বা হালকা যোগাসন করলে লিভারের কার্যক্ষমতা বাড়ে।
🔹 ৪. প্রচুর পানি পান করুন
শরীরের টক্সিন বের করতে এবং লিভার পরিষ্কার রাখতে প্রতিদিন অন্তত ৮-১০ গ্লাস বিশুদ্ধ পানি পান করা জরুরি।
🔹 ৫. আঁশযুক্ত খাবার খেতে হবে
সবুজ শাকসবজি, ফলমূল, ওটস, বাদাম, ব্রাউন রাইস ইত্যাদি লিভারের ফ্যাট কমাতে সহায়ক।
🔹 ৬. প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার খান
ডিম, মাছ, ডাল, দুধ, গ্রিক ইয়োগার্ট ইত্যাদি প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার ফ্যাটি লিভার প্রতিরোধে কার্যকর।
🔹 ৭. প্রাকৃতিক লিভার ক্লিনজার গ্রহণ করুন
আদা, রসুন, হলুদ, আমলকি, তুলসি পাতা ও গ্রিন টি—এইসব প্রাকৃতিক উপাদান লিভারের জন্য দারুণ উপকারী।
যা অবশ্যই মনে রাখবেন:
➡️ ফ্যাটি লিভার যদি গ্রেড-২ বা তার বেশি হয়, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কিছু করা যাবে না।
➡️ নিয়মিত লিভার ফাংশন টেস্ট (LFT) করিয়ে লিভারের অবস্থা জানা প্রয়োজন।
ফ্যাটি লিভার একটি নিয়ন্ত্রণযোগ্য রোগ। সঠিক খাদ্যাভ্যাস, জীবনযাত্রার পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক উপায়েই লিভারকে সুস্থ রাখা সম্ভব। তাই সময় থাকতে সচেতন হোন, সুস্থ থাকুন।
Mily