
ছবি: সংগৃহীত।
ডায়াবেটিস বর্তমানে বিশ্বজুড়ে এক নীরব ঘাতক হিসেবে বিবেচিত। এই রোগ প্রথম দিকে খুব বেশি লক্ষণ প্রকাশ না করলেও, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শরীরে বিভিন্ন সংকেত দেখা দিতে থাকে। বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু নির্দিষ্ট উপসর্গ দেখা দিলেই অবিলম্বে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা পরীক্ষা করানো উচিত।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) ও বিভিন্ন স্বাস্থ্য গবেষণা সংস্থার তথ্যমতে, নিচের ১০টি লক্ষণ ডায়াবেটিসের প্রাথমিক সতর্কতা হতে পারে:
১. প্রচণ্ড পিপাসা অনুভব করা: শরীরে অতিরিক্ত গ্লুকোজের কারণে পানির ঘাটতি দেখা দেয়, ফলে বারবার পানি খেতে ইচ্ছা করে।
২. প্রস্রাবের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া: রক্তে শর্করার পরিমাণ বেশি হলে তা প্রস্রাবের মাধ্যমে বেরিয়ে যেতে চায়।
৩. হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া: শরীর যখন গ্লুকোজ সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারে না, তখন চর্বি ও পেশির টিস্যু ভাঙতে শুরু করে।
৪. চোখ ঝাপসা দেখা: ডায়াবেটিস চোখের রেটিনাকে প্রভাবিত করে, ফলে দৃষ্টিশক্তি দুর্বল হতে পারে।
৫. খাবারের প্রতি অস্বাভাবিক ক্ষুধা: শরীর পর্যাপ্ত শক্তি না পেলে মস্তিষ্ক অতিরিক্ত খাবারের সংকেত পাঠায়।
৬. ক্ষত শুকাতে দেরি হওয়া: রক্তে অতিরিক্ত গ্লুকোজের কারণে দেহের প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় এবং ক্ষত সহজে সারে না।
৭. হাত-পা ঝিনঝিন করা বা অসাড় ভাব: ডায়াবেটিস স্নায়ুকে প্রভাবিত করে, যার ফলে এ ধরনের অনুভূতি হয়।
৮. চর্মরোগ বা ত্বকে ইনফেকশন: ডায়াবেটিস রোগীদের সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি থাকে।
৯. অতিরিক্ত ক্লান্তি অনুভব করা: রক্তে গ্লুকোজ থাকার পরও তা কোষে প্রবেশ করতে না পারলে শরীরে শক্তির অভাব দেখা দেয়।
১০. মুড পরিবর্তন বা মন খারাপ থাকা: রক্তে চিনির ওঠানামা মস্তিষ্ককে প্রভাবিত করতে পারে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন, এসব লক্ষণ দেখা দিলে দেরি না করে নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে রক্তের গ্লুকোজ পরীক্ষা করানো উচিত। সময়মতো ডায়াগনোসিস ও চিকিৎসা না হলে ডায়াবেটিস হৃদরোগ, কিডনি সমস্যা, চোখের জটিলতা এমনকি অঙ্গহানির ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিতে পারে।
সতর্কতা ও সচেতনতাই পারে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি হ্রাস করতে এবং সুস্থ জীবন নিশ্চিত করতে।
মিরাজ খান