ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৭ আগস্ট ২০২৫, ২৩ শ্রাবণ ১৪৩২

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ

হীরা আহমেদ জাকির, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

প্রকাশিত: ১৬:৩২, ৭ আগস্ট ২০২৫; আপডেট: ১৬:৩৩, ৭ আগস্ট ২০২৫

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ

ছবি: দৈনিক জনকন্ঠ।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (আশুগঞ্জ ও সরাইল) আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে জেলার বিজয়নগর উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করা হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) দুপুরে চান্দুরা এলাকায় বিজয়নগর সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ কর্তৃক ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করা হয়। জামায়াতে ইসলামী, বিএনপি ও হেফাজত ইসলামী এবং এনসিপির নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি স্থানীয় লোকজন অংশ নেন। এ সময় তাঁরা ২ ঘণ্টার মতো সড়ক অবরোধ করে বিভিন্ন স্লোগান দেন। 

সমাবেশে বক্তারা বলেন, বিজয়নগর উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের মধ্যে তিনটিতে প্রায় ৯৬ হাজার ভোটার আছেন, যা উপজেলার মোট ভোটারের প্রায় অর্ধেক। দুই লক্ষাধিক ভোটারবিশিষ্ট উপজেলা একক সংসদীয় আসনের উপযুক্ত হলেও বছরের পর বছর ধরে এটিকে একবার সদর, একবার সরাইল, আবার কখনো নাসিরনগরের সঙ্গে যুক্ত করে অবহেলার শিকারে পরিণত করা হচ্ছে। স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও বিজয়নগরে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। এর পেছনে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র রয়েছে। নতুন করে সরাইল আসনের সঙ্গে তিনটি ইউনিয়ন যুক্ত করায় মানুষ ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন।

তিনটি ইউনিয়নকে আগের আসনে রাখার দাবিতে উপজেলার জামায়াতে ইসলামী, বিএনপি, ইসলামি ঐক্যজোট এবং এনসিপির নেতৃবৃন্দ পৃথকভাবে অখণ্ড বিজয়নগর রক্ষায় একটি লিখিত আবেদন গত বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কার্যালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। 

প্রত্যেকের আবেদনে উল্লেখ করা হয়, বিজয়নগর উপজেলার ১০টি ইউনিয়নকে দুই টুকরা করে তিনটি ইউনিয়নকে (বুধন্তি, হরষপুর ও চান্দুরা) ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে এবং বাকি সাতটি ইউনিয়নকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনে রেখে ভোটারদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে ভাগ করা হয়েছে, যা অনাকাঙ্ক্ষিত, হতাশাজনক ও বেআইনি। উপজেলার সব ইউনিয়নকে এক ও অভিন্ন সংসদীয় আসনে রাখা হলে এলাকার উন্নয়ন ও প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা সহজ হবে। আবেদনে তিনটি ইউনিয়নকে বিচ্ছিন্ন না করে আগের মতো ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনে রাখা বা একটি একক সংসদীয় আসনে পরিণত করার দাবি জানানো হয়।

উপজেলার চান্দুরা এলাকার বাসিন্দা জামায়াতে ইসলামীর ইউনিয়ন সেক্রেটারি  শিহাব উদ্দিন বলেন, বিজয়নগর উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের মধ্যে চান্দুরা, বুধন্তি, হরষপুর ইউনিয়নকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২–এ যুক্ত করা হয়েছে, বিষয়টি খুবই হতাশাজনক। এতে উপজেলার উন্নয়ন এবং প্রশাসনিক কার্যক্রম ব্যাহত হবে এবং তাঁরা সুবিধাবঞ্চিত হবেন। আমাদের দাবি বিজয়নগরকে একক সংসদীয় আসন বা আগের আসনে রাখা হোক। কোনোভাবেই বিজয়নগরকে দ্বিখণ্ডিত করা যাবে না। 

এছাড়াও বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে বক্তব্য রাখেন হেফাজতে ইসলাম,বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী, জামায়াতে ইসলামি, ইসলামী ঐক্যজোট, এনসিপির নেতৃবৃন্দ। 

বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোঃ শহিদুল ইসলাম দৈনিক জনকণ্ঠ কে জানান আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি বিষয়টি দ্রুত সমাধান করবো, মহাসড়কে অসুস্থ রোগী সহ যাত্রীদের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে এই আন্দোলন আজকের মতো স্থগিত করার জন্য, এই আশ্বাসে আন্দোলনকারীরা মেনে নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল এবং মহাসড়ক অবরোধ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।

উল্লেখ্য, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দুটি আসনসহ দেশের মোট ৩৯টি সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রাথমিক গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সীমানা পুনর্বিন্যাসের আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসন সদর ও বিজয়নগর উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ছিল। নতুন গেজেটে বিজয়নগরের তিনটি ইউনিয়ন-হরষপুর, চান্দুরা ও বুধন্তি ইউনিয়নকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের মধ্যে দেওয়া হয়েছে।

মিরাজ খান

×