ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৭ আগস্ট ২০২৫, ২৩ শ্রাবণ ১৪৩২

চোখের পাওয়ার বেড়েছে বুঝবেন যেভাবে: ৬টি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ

প্রকাশিত: ১৩:৪০, ৭ আগস্ট ২০২৫

চোখের পাওয়ার বেড়েছে বুঝবেন যেভাবে: ৬টি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ

ছবিঃ সংগৃহীত

চোখের ক্লান্তি থেকে শুরু করে মাথাব্যথা—অনেক সময়ই আমরা বুঝতে পারি না যে চোখের পাওয়ার পরিবর্তন হচ্ছে। অনেকেই দিনের শেষে ক্লান্তি, স্ট্রেস বা স্ক্রিনে বেশি সময় কাটানোর ফল হিসেবে এই উপসর্গগুলো ধরে নেন। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই লক্ষণগুলো অবহেলা করলে ভবিষ্যতে বড় ধরনের জটিলতা তৈরি হতে পারে।

এই বিষয়ে ড. মহেশ নারায়ণ মাথুর, হেড, ক্লিনিক্যাল সার্ভিসেস, ডাঃ আগরওয়ালস আই হাসপাতাল, বেল্লারি, HT লাইফস্টাইল-কে জানান, চোখের পাওয়ার পরিবর্তনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ রয়েছে যেগুলোর দিকে নজর দেওয়া জরুরি।

চোখের পাওয়ার পরিবর্তনের কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, “চোখের পাওয়ার পরিবর্তনের অন্যতম প্রধান কারণ হলো রিফ্র্যাকটিভ এররের (Refractive Error) অগ্রগতি। যারা মায়োপিয়া বা দূরদৃষ্টি সমস্যায় ভোগেন, তাঁদের ক্ষেত্রে চোখের বল লম্বা হয়ে যেতে পারে অথবা কর্নিয়ার বক্রতা বেড়ে যায়, ফলে আলো রেটিনার সামনে ফোকাস হয় এবং ঝাপসা দেখা যায়। ছোটবেলা থেকে বয়ঃসন্ধি পর্যন্ত এই সমস্যা বেড়ে চলতে পারে। এমনকি প্রাপ্তবয়স্করাও যদি দীর্ঘ সময় স্ক্রিনের সামনে কাটান, তবে চোখের পাওয়ার সমস্যা বেড়ে যেতে পারে।”

তিনি আরও বলেন, “হাইপারোপিয়া বা নিকটদৃষ্টিহীনতায় যারা ভোগেন, তাঁদের চোখের লেন্স বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শক্ত হয়ে যায়, যাকে বলে Presbyopia। ফলে কাছের বস্তু দেখতে অসুবিধা হয়। অনেকের আবার চোখ ছোট হয়ে যায়, সেক্ষেত্রেও আলো রেটিনার পেছনে ফোকাস করে। এসব সমস্যার জন্য সঠিক পাওয়ারের চশমা বা কনট্যাক্ট লেন্স ব্যবহার জরুরি।”

চোখের পাওয়ার বেড়ে যাওয়ার ৬টি সাধারণ লক্ষণ
ড. মহেশ জানিয়েছেন, চোখের দৃষ্টিশক্তির পরিবর্তন ধীরে ধীরে হলেও কিছু লক্ষণ স্পষ্ট হয়। নিচের লক্ষণগুলো দেখা দিলে চোখ পরীক্ষা করানো উচিত—

দূর বা কাছের বস্তু ঝাপসা দেখা

ঘন ঘন মাথাব্যথা

দীর্ঘক্ষণ পড়া বা স্ক্রিন দেখার পর চোখে ক্লান্তি ও চাপ অনুভব করা

পরিষ্কার দেখতে চোখ কুঁচকানো বা স্কুয়িন্ট করা

রাতে গাড়ি চালাতে সমস্যা, আলোতে গ্লেয়ার বা হলোর মতো দেখানো

Presbyopia থাকলে বই বা মুঠোফোন দূরে সরিয়ে পড়তে হয়

নিয়মিত চোখ পরীক্ষা কেন জরুরি?
চোখের পাওয়ার পরিবর্তন শনাক্ত করার পাশাপাশি চোখের চেকআপ অনেক স্বাস্থ্যগত সমস্যারও আগাম ইঙ্গিত দেয়। ড. মহেশ জানিয়েছেন, “বার্ষিক চোখ পরীক্ষা শুধু দৃষ্টিশক্তি উন্নয়নের জন্যই নয়, বরং চোখের দীর্ঘমেয়াদি সুস্থতার জন্য অত্যন্ত জরুরি। গ্লুকোমা, ক্যাটার্যাক্ট বা ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথির মতো রোগগুলো প্রাথমিক পর্যায়ে কোনো উপসর্গ না দেখালেও নিয়মিত চেকআপে তা ধরা পড়তে পারে।”

তিনি আরও বলেন, “চোখ আমাদের শরীরের সার্বিক স্বাস্থ্য সম্পর্কেও ইঙ্গিত দেয়। যেমন চোখ পরীক্ষা করলে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস বা স্নায়বিক রোগেরও প্রাথমিক লক্ষণ ধরা পড়ে।”

বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন, যারা আগে থেকেই চোখের সমস্যায় ভুগছেন, তাঁদের প্রতি বছর একবার চোখ পরীক্ষা করানো অবশ্যই উচিত।
 

নোভা

×