ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৭ আগস্ট ২০২৫, ২৩ শ্রাবণ ১৪৩২

গাজায় ১০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হতে চলেছে? ইসরায়েলের বিশাল হামলার পরিকল্পনা ফাঁস!

প্রকাশিত: ১৫:৪৯, ৭ আগস্ট ২০২৫; আপডেট: ১৫:৫০, ৭ আগস্ট ২০২৫

গাজায় ১০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হতে চলেছে? ইসরায়েলের বিশাল হামলার পরিকল্পনা ফাঁস!

ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েল বৃহস্পতিবার একটি নতুন পর্যায়ক্রমিক সামরিক পরিকল্পনার অনুমোদন দিতে যাচ্ছে বলে জানা গেছে, যার মাধ্যমে গাজা উপত্যকার বড় একটি অংশ দখল করা হবে এবং আগামী পাঁচ মাসে প্রায় ১০ লাখ ফিলিস্তিনিকে বাস্তুচ্যুত করা হতে পারে—এমনটাই জানিয়েছে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম।

প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সমর্থনে থাকা এই পরিকল্পনার শুরু হবে গাজা সিটি এবং মধ্যবর্তী শরণার্থী শিবিরগুলোর ওপর আক্রমণের মাধ্যমে। টাইমস অব ইসরায়েলের মতে, এই আক্রমণের ফলে বহু মানুষ দক্ষিণে অবস্থিত ‘মাওয়াসি মানবিক অঞ্চল’-এর দিকে ঠেলে দেওয়া হবে।

এই পদক্ষেপের লক্ষ্য হচ্ছে হামাসের অবশিষ্ট শক্তি ধ্বংস করা এবং গাজায় এখনো যেসব জিম্মি আটকে রাখা হয়েছে—প্রায় ৫০ জন, যাদের মধ্যে প্রায় ২০ জন জীবিত বলে ধারণা—তাদের মুক্তির জন্য চাপ সৃষ্টি করা।

যদিও ইসরায়েলের অভ্যন্তরেই এই পরিকল্পনা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে, বিশেষ করে শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, এমন অভিযানে জিম্মিদের জীবন হুমকির মুখে পড়তে পারে। তবুও বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বসা ইসরায়েলের উচ্চ পর্যায়ের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভায় নেতানিয়াহু যথেষ্ট সমর্থন পেতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এদিকে, গাজায় মানবিক সংকট আরও গভীর হচ্ছে বলে সতর্ক করছে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো। একটি বৈশ্বিক ক্ষুধা পর্যবেক্ষক সংস্থা পরিস্থিতিকে একটি “দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি” বলে উল্লেখ করেছে। শিশুদের মধ্যে অপুষ্টিজনিত কারণে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে, এবং এখনো পর্যাপ্ত মানবিক সহায়তা পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না।

জাতিসংঘের মানবিক সমন্বয় সংস্থা (OCHA) জানিয়েছে, যুদ্ধ শুরুর পর গাজায় খাদ্য গ্রহণের হার বর্তমানে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। চলতি সপ্তাহে তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজার ৮১ শতাংশ পরিবারের খাদ্য গ্রহণ অত্যন্ত দুর্বল পর্যায়ে রয়েছে—যা এপ্রিলের ৩৩ শতাংশের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের একজন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, কিছু অগ্রগতি হয়েছে—যেমন জ্বালানির পরিমাণ বেড়েছে, রুট খুলেছে, এবং অবকাঠামো মেরামত হয়েছে। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, মাটিতে নিরাপদ পরিবেশ না থাকায় এখনও বড় পরিসরে ত্রাণ বিতরণ কঠিন হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক উদ্বেগ ক্রমশ বাড়লেও, একদিকে সামরিক অভিযান আরও জোরালো হচ্ছে, আর অন্যদিকে মানবিক সংকট মারাত্মক রূপ নিচ্ছে—সংঘাতের সমাপ্তির কোনো ইঙ্গিত এখনও দেখা যাচ্ছে না।

আবির

×