
ছবি: সংগৃহীত
ভারতের উত্তরাঞ্চলের প্রাকৃতিক স্বর্গ হিমাচল প্রদেশ আজ আর শুধু পাহাড়ি সৌন্দর্যের কারণে নয়, আন্তর্জাতিক ভূরাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে চীনের দাবির কারণে। আশপাশের ছোট দেশগুলোতে দাপট দেখাতে মোদি সরকারের জুড়ি নেই। কিন্তু চীনের নাম আসলেই যেন তৎক্ষণাৎ মুখ থুবড়ে পড়ে কট্টর ইসলাম বিদ্বেষী নরেন্দ্র মোদির দেশ। অন্য প্রতিবেশী দেশগুলোকে কড়া ভাষায় জবাব দিতে অভ্যস্ত দিল্লির শাসকেরা। কিন্তু চীনের নাম শুনলেই যেন গলা শুকিয়ে আসে।
এদিকে চীন তো নাম পাল্টাতে শুরু করেছে অনেক আগেই। হিমাচলের কিছু অঞ্চলকে চাইনিজ নাম দিয়ে নিজেদের মানচিত্রে বসিয়ে দিয়েছে। তবে এসব কিছুকে ছাপিয়ে এবার অন্য এক কারণে মানচিত্র থেকেই হারিয়ে যাবে ভারতের এই প্রদেশটি।
সম্প্রতি দেশটির সর্বোচ্চ আদালত শঙ্কা প্রকাশ করেছে যে বর্ষণ, বন্যার মত প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের চেড়ে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতির ঠেকাতে যদি শিঘরি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নেয়া হয়, তাহলে একসময় মানচিত্র থেকে হিমাচল হারিয়ে যাবে।
গত ২৮ জুলাই ভারতের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি জেবি পার্টিওয়ালা এবং বিচারপতি আর মাধবনের বেঞ্চ হিমাচলের পরিবেশগত অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে বলেন, হিমাচল রাজ্যের পরিস্থিতি উত্তরোত্তর খারাপের থেকে খারাপতর হচ্ছে। বছরের পর বছর ধরে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ আঘাত হানছে রাজ্যটিতে। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে তীব্র পরিবেশগত ভাষামোহীনতা। যদি এভাবে চলতে থাকে তাহলে মানচিত্র থেকে হিমাচলের চিরতরে মুছে যাওয়ার দিন খুব বেশি দূরে নয়।
গত বছর হিমাচল হাইকোর্ট রাজ্যের বেশ কিছু এলাকা সংরক্ষিত সবুজ এলাকা হিসেবে ঘোষণা করে এবং সেখানে গাছ কাটা, পাহাড় কাটা এবং প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণের নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। সম্প্রতি এই নিষেধাজ্ঞাকে চ্যালেঞ্জ করে পিটিশন দায়ের করা হয়, যার শুনানি অনুষ্ঠিত হয় ২৮ জুলাই। শুনানির প্রথম দিনই বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা ও বিচারপতি আর মাধবনের বেঞ্চ স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে তারা হিমাচল হাইকোর্টের আদেশে হস্তক্ষেপ করতে চান না। বরং রাজ্যের কোন এলাকা থেকে কি প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণ করা যাবে এবং কোন জায়গায় নির্মাণ কাজ করা সম্ভব হবে — সে বিষয়ে একটি সুস্পষ্ট নির্দেশনার প্রয়োজনীয়তার কথা তারা তুলে ধরেন।
সম্প্রতি ভারতের এই প্রদেশটিতে আঘাত হানে ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢল। যে ঘটনায় শতাধিক মৃত্যুর পাশাপাশি নিখোঁজ হয় ৫০ এর অধিক। বর্তমানে ভারতের এই প্রদেশটিতে প্রকৃতির এই বিরূপ আচরণ আর সাধারণ ভারতীয়দের আদালতের নির্দেশনা না মানা — সবকিছু মিলে প্রদেশটি যেন হারানোর পথে এখন নরেন্দ্র মোদির ভারত।
শেখ ফরিদ