ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৬ জুলাই ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২

প্রতিদিন মাত্র ১০ মিনিট উল্টো হাঁটায় মিলবে ৭ অবিশ্বাস্য স্বাস্থ্য উপকারিতা

প্রকাশিত: ২০:৪৩, ৯ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ২০:৪৪, ৯ জুলাই ২০২৫

প্রতিদিন মাত্র ১০ মিনিট উল্টো হাঁটায় মিলবে ৭ অবিশ্বাস্য স্বাস্থ্য উপকারিতা

ছবি: সংগৃহীত

হাঁটার কথা বললেই আমাদের মাথায় আসে সোজা সামনে হাঁটা। কিন্তু যদি বলা হয়, প্রতিদিন মাত্র ১০ মিনিট পেছনের দিকে হাঁটার অভ্যাস আপনাকে দিতে পারে বেশ কিছু শারীরিক ও মানসিক উপকার—তাহলে? শুনতে অদ্ভুত লাগলেও, বিজ্ঞান বলছে এই অভ্যাস বেশ কার্যকর। চিকিৎসা বিজ্ঞানে এটিকে বলা হয় রেট্রো ওয়াকিং, যা শরীরের নানা পেশী সচল করার পাশাপাশি মস্তিষ্ককেও চাঙ্গা করে। নিচে জেনে নিন প্রতিদিন পিছিয়ে হাঁটার ৭টি প্রমাণিত উপকারিতা—

১. সমন্বয় ও ভারসাম্য উন্নত করে

পেছনে হাঁটার সময় শরীরের স্ট্যাবিলাইজার মাংসপেশী ও মূল পেশী (core muscle) সক্রিয় হয়, যা সাধারণ হাঁটার সময় তেমন ব্যবহৃত হয় না। ফলে শরীরের ভারসাম্য ও সমন্বয় শক্তি বাড়ে। এটি বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভারসাম্য হারানো ঠেকাতে সাহায্য করে, বিশেষ করে বয়স্কদের জন্য এটি বেশ উপকারী।

২. মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়ায়

সামনে হাঁটা স্বাভাবিক, কিন্তু পিছিয়ে হাঁটা একেবারেই অপ্রাকৃত। এ কারণে এতে বেশি মনোযোগ ও একাগ্রতা প্রয়োজন হয়। এতে করে মস্তিষ্ক বেশি সক্রিয় হয়, নিউরোপ্লাস্টিসিটি বাড়ে, স্মরণশক্তি ও এক্সিকিউটিভ ফাংশন উন্নত হয়। ২০২৩ সালের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, পিছিয়ে হাঁটা স্মৃতিশক্তি ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার দক্ষতা বাড়াতে সহায়ক।

৩. অধিক ক্যালরি পোড়ায়

জার্নাল অব বায়োমেকানিকস–এর ২০১৭ সালের এক গবেষণায় দেখা যায়, সমান দূরত্বে পেছনে হাঁটার সময় শরীরের হার্টরেট বেড়ে যায় এবং প্রায় ৪০% বেশি ক্যালরি পোড়ে। ফলে এটি ওজন কমাতে ও ফিটনেস বজায় রাখতে একটি কার্যকর উপায়।

৪. পা ও গ্লুটস মাংসপেশি শক্তিশালী করে

সাধারণ হাঁটার চেয়ে পেছনে হাঁটার সময় আমাদের পা, বিশেষ করে কোয়াড্রিসেপস ও গ্লুটস বেশি সক্রিয় থাকে। ফলে তা পায়ের পেশি ও নিতম্বের শক্তি ও টোন বাড়াতে সহায়তা করে।

৫. হাঁটুর ব্যথা কমায় ও জয়েন্ট শক্তিশালী করে

পেছনে হাঁটার সময় শরীরের ভারসাম্য সামনের হাঁটুর ওপর কম পড়ে, ফলে হাঁটুতে চাপ কম হয়। এটি হাঁটুর আর্থ্রাইটিস বা ইনজুরি থেকে সেরে ওঠা রোগীদের জন্য বিশেষভাবে সহায়ক। ২০২৩ সালের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, হাঁটুর ব্যথা কমাতে ও চিকিৎসা নির্ধারণে পিছিয়ে হাঁটা কার্যকর হতে পারে।

৬. ভালো ভঙ্গিমা ও মেরুদণ্ডকে সোজা রাখতে সাহায্য করে

পেছনে হাঁটার সময় মানুষ বেশি সতর্ক থাকে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই সোজা হয়ে হাঁটতে হয়। এটি শরীরের মূল পেশিগুলো সক্রিয় করে ও মেরুদণ্ডের অবস্থান ঠিক রাখে। দীর্ঘমেয়াদে এটি শরীরের ভঙ্গিমা উন্নত করে।

৭. মেজাজ ভালো রাখে ও স্ট্রেস কমায়

পেছনে হাঁটার অভ্যাস একঘেয়েমি দূর করে, হাঁটাকে করে তোলে মজার ও নতুন কিছু। এই পরিবর্তন মানসিক প্রশান্তি আনে এবং দুশ্চিন্তা কমাতে সাহায্য করে।

প্রতিদিনের ব্যস্ত জীবনে যদি আপনি স্বাস্থ্য ও মেজাজ ভালো রাখতে চান, তাহলে প্রতিদিন মাত্র ১০ মিনিট পিছনে হাঁটার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এটি সহজ, নিরাপদ এবং কার্যকর এক্সারসাইজ—যা শরীর ও মন উভয়ের উপকারে আসে।

 

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া।

রাকিব

×