
হঠাৎ বুক ধড়ফড় বা হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া অনেকের জন্য আতঙ্কের কারণ হতে পারে। তবে এই লক্ষণ সব সময়ই হৃদরোগের ইঙ্গিত দেয় না। বিষয়টি নির্ভর করে ধড়ফড়ের ধরন, সময়কাল এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য উপসর্গের ওপর। এ বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের বিশেষজ্ঞ ডা. গোলাম মোর্শেদ।
তিনি বলেন, “বুক ধড়ফড় করা বা হৃৎস্পন্দনের তারতম্য কখনো সাধারণ মানসিক চাপ বা উদ্বেগজনিত কারণে হতে পারে, আবার কখনো এটি হতে পারে কোনো গোপন হৃদযন্ত্রজনিত সমস্যার লক্ষণ।”
কেন হয় বুক ধড়ফড়?
ডা. মোর্শেদের মতে, হঠাৎ বুক ধড়ফড় করার পেছনে কয়েকটি সাধারণ কারণ রয়েছে:
-
অতিরিক্ত মানসিক চাপ বা উদ্বেগ
-
অতিরিক্ত চা-কফি বা ক্যাফেইন গ্রহণ
-
অনিদ্রা বা ক্লান্তি
-
রক্তস্বল্পতা (অ্যানিমিয়া)
-
থাইরয়েডের অতিসক্রিয়তা
-
হৃদপিণ্ডের বৈদ্যুতিক সিগন্যালের সমস্যা (Arrhythmia)
করণীয় কী?
হঠাৎ বুক ধড়ফড় করলে প্রাথমিকভাবে নিচের কিছু বিষয় অনুসরণ করার পরামর্শ দেন তিনি:
১. শান্ত থাকুন ও বিশ্রাম নিন: কাজ বন্ধ রেখে চুপচাপ বসে পড়ুন বা শুয়ে পড়ুন।
২. গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস নিন: ধীরে ধীরে শ্বাস নিয়ে তা ছেড়ে দিন।
৩. ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধোয়া: ভ্যাগাল নার্ভ সক্রিয় করতে ঠান্ডা পানি কাজে দেয়।
৪. পালস চেক করুন: হৃৎস্পন্দন প্রতি মিনিটে কতবার হচ্ছে এবং নিয়মিত কিনা তা খেয়াল করুন।
৫. পুনরাবৃত্তি হলে ডাক্তারের পরামর্শ: যদি এই সমস্যা বারবার হয় অথবা ১ মিনিটের বেশি স্থায়ী হয়, তখন একজন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
কখন দ্রুত হাসপাতালে যাবেন?
-
বুক ধড়ফড়ের সঙ্গে যদি বুকে ব্যথা বা জ্বালাভাব হয়
-
শ্বাসকষ্ট, মাথা ঘোরা বা অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার উপসর্গ দেখা দেয়
-
হৃৎস্পন্দন ১৫০ বারের বেশি হয় প্রতি মিনিটে
ডা. মোর্শেদ বলেন, “নিয়মিত চেকআপ ও সচেতনতা থাকলে এই ধরনের সমস্যা সহজেই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। ECG ও অন্যান্য রুটিন পরীক্ষা করে ধড়ফড়ের প্রকৃত কারণ জানা যায়।”
তিনি আরও বলেন, “গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো—উপসর্গকে অবহেলা না করা। কারণ ছোট একটি লক্ষণ বড় সমস্যার পূর্বাভাস হতে পারে।”
Jahan