ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৪ জুন ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ই-সিগারেট সেবনে ফুসফুস স্থায়ীভাবে বিকল হতে পারে!

প্রকাশিত: ০৮:১৯, ১৩ জুন ২০২৫

ই-সিগারেট সেবনে ফুসফুস স্থায়ীভাবে বিকল হতে পারে!

ছ‌বি: সংগৃহীত

আমেরিকার এক কিশোর তিন বছর গোপনে ই-সিগারেট সেবন করার পর ‘পপকর্ন লাং’ রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এটি একটি স্থায়ী ও জটিল ফুসফুসজনিত রোগ। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এই রোগকে বলা হয় ব্রঙ্কিওলাইটিস অবলিটারেন্স, যা ফুসফুসের ক্ষুদ্র বায়ুনালীতে স্থায়ী ক্ষত সৃষ্টি করে। ফলে আক্রান্ত ব্যক্তি দীর্ঘমেয়াদে কাশি, শ্বাসকষ্ট, ক্লান্তি এবং হাঁপানির মতো সমস্যায় ভোগেন।

আগে এই রোগের সঙ্গে খাবার প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর এক ধরনের রাসায়নিক ‘ডায়াসেটাইল’-এর সংযোগ ছিল, যা সাধারণত পপকর্নের স্বাদ বাড়াতে ব্যবহার হতো। কিন্তু এখন আশঙ্কার বিষয় হলো, ই-সিগারেট বা ভ্যাপারের মাধ্যমে যেসব রাসায়নিক শরীরে প্রবেশ করে, সেগুলোও মারাত্মকভাবে ফুসফুসের ক্ষতি করতে পারে।

ফলের স্বাদযুক্ত মিষ্টি-মিষ্টি গন্ধের কারণে ই-সিগারেট এখন তরুণদের মধ্যে ভয়ংকরভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ই-সিগারেটের তরলে ১৮০টিরও বেশি স্বাদযুক্ত রাসায়নিক ব্যবহৃত হয়। এগুলো গরম হলে নতুন ও বিপজ্জনক রাসায়নিক যৌগ তৈরি করতে পারে, যা শ্বাসের মাধ্যমে সরাসরি ফুসফুসে চলে যায় এবং রক্তে মিশে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে।

অনেক কোম্পানি এখন ডায়াসেটাইল ব্যবহার না করলেও, বিকল্প হিসেবে যে রাসায়নিক যেমন অ্যাসিটইন ব্যবহৃত হয়, সেগুলোও স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হতে পারে। কারণ শ্বাসের মাধ্যমে নেওয়া রাসায়নিক কোনো প্রকার পরিশোধন ছাড়াই সরাসরি ফুসফুসে পৌঁছে যায়।

২০১৯ সালের ‘ইভালি’ (EVALI) সংকটের সময় বহু ভ্যাপার ফুসফুসের জটিল রোগে আক্রান্ত হয়েছিল। গবেষণায় দেখা গেছে, ধূমপায়ীদের তুলনায় তরুণ ভ্যাপারদের শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত সমস্যা বেশি হয়।

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, যদি কঠোর নিয়ন্ত্রণ, পরিষ্কার লেবেলিং, উপাদান পরীক্ষা এবং জনসচেতনতা না বাড়ানো হয়, তবে এমন ভয়ংকর ঘটনা আরও বাড়বে। দেখতে নিরীহ মনে হলেও, ই-সিগারেটের বিষাক্ত রাসায়নিক মিশ্রণ ফুসফুসে স্থায়ী এবং জীবনসংক্ষিপ্তকারী ক্ষতি করতে পারে — যা এখনই গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা দরকার।


সূত্র: https://www.lung.org/blog/popcorn-lung-risk-ecigs

এম.কে.

×