
ছবিঃ সংগৃহীত
গর্ভাবস্থায় একাধিকবার আল্ট্রাসনোগ্রাম করানো নিয়ে অনেক গর্ভবতী মা ও তাদের পরিবারে দেখা যায় উদ্বেগ—"বারবার আল্ট্রাসনোগ্রাম করালে কি বাচ্চার ক্ষতি হয়?" এ প্রশ্নের উত্তর দিলেন একজন চিকিৎসক বিশেষজ্ঞ, যিনি জানান, আল্ট্রাসনোগ্রাম আসলে একটি ‘সাউন্ড’ নির্ভর প্রযুক্তি এবং এটি রশ্মিনির্ভর নয়—যেমন এক্স-রে বা সিটি স্ক্যান। ফলে এতে গর্ভের সন্তানের কোনও ক্ষতির সম্ভাবনা নেই।
চিকিৎসকের ব্যাখ্যায়, “আল্ট্রাসাউন্ড মানে আল্ট্রা-সাউন্ড—শ্রবণের অতীত একধরনের শব্দ, যা গর্ভে প্রবেশ করে প্রতিবিম্ব তৈরি করে এবং সেখান থেকেই মেশিনে একটি ছবি তৈরি হয়। এটি কোনো ধরনের গামা রশ্মি, এক্সরে বা ইলেকট্রোম্যাগনেটিক এক্সপোজার সৃষ্টি করে না।”
তবে প্রশ্ন হচ্ছে, কতবার আল্ট্রাসনোগ্রাম করা নিরাপদ?
চিকিৎসক জানান, একটি স্বাভাবিক ও জটিলতাহীন গর্ভাবস্থায় তিনবার আল্ট্রাসনোগ্রাম করাই যথেষ্ট।
১. প্রথম বার – গর্ভাবস্থার শুরুতেই করা হয়, এটি নিশ্চিত করতে যে ভ্রূণ সঠিকভাবে জরায়ুর ভেতরে স্থাপিত হয়েছে কিনা, হার্টবিট আছে কিনা, একাধিক সন্তান আছে কিনা, বা জরায়ুতে অন্য কোনো সমস্যা আছে কিনা।
-
দ্বিতীয় বার – প্রায় পাঁচ মাসের সময়ে করা হয়, যখন ভ্রূণের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের গঠন সম্পূর্ণ হয় এবং জন্মগত কোনো ত্রুটি আছে কি না, তা যাচাই করা যায়।
-
তৃতীয় বার – গর্ভকালীন শেষ দিকে, প্রসবের আগমুহূর্তে করা হয়। তখন বাচ্চার ওজন, পানির পরিমাণ, প্লাসেন্টার অবস্থান ইত্যাদি দেখা হয়।
অতিরিক্ত আল্ট্রাসনোগ্রামের প্রয়োজন কখন?
কোনো জটিলতা দেখা দিলে—যেমন:
-
বাচ্চার নড়াচড়া কমে যাওয়া,
-
ভ্রূণের স্বাভাবিক বৃদ্ধি না হওয়া,
-
রক্তপাত,
-
পানি ভাঙা ইত্যাদি—সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অতিরিক্ত আল্ট্রাসনোগ্রাম করানো যেতে পারে।
সতর্ক বার্তা
চিকিৎসক জানান, "অপ্রয়োজনে ঘন ঘন আল্ট্রাসনোগ্রাম করানো উচিত নয়। প্রতিটি স্ক্যানের একটি নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য ও চিকিৎসাগত কারণ থাকা উচিত। কোনো চিকিৎসক যদি বেশি সংখ্যক আল্ট্রাসনোগ্রাম করতে বলেন, তার নিশ্চয়ই নির্দিষ্ট কারণ আছে।"
ইমরান