একে তো অস্বস্তিকর গরম, তার ওপর আবার করোনাসহ বাতাসের আর্দ্রতা। শরীর তো ঘামছেই, সেই সঙ্গে চুলেরও রফা দফা হচ্ছে। চুলও ঘেমে যাচ্ছে, আর এর ফলে ঘুম থেকে উঠে বালিশভর্তি ঝরে পড়া চুল পাচ্ছেন? অথবা চুল আঁচড়ানোর সময় চিরুনিভর্তি ঝরে পড়া চুল? তাহলে এখনই সাবধান হয়ে যান।
গরমকালে অতিরিক্ত উষ্ণতার পাশাপাশি থাকে অস্বস্তিকর আর্দ্রতা। ফলে ঘাম হয় বেশি। সেই ঘাম বসতে পারে আপনার চুলের গোড়াতেও। এক টানা ঘামে ভিজে চুলের গোড়া হয়ে পড়ে দুর্বল। ফলে সহজেই চুল উঠতে শুরু করে। তাছাড়া যাদের করোনা পরবর্তী সময়েও চুলপাকা, চুলপড়া দেখা দিচ্ছে;
এ ছাড়াও ঘাম ও মাথার ত্বক বা স্কাল্পের স্বাভাবিক তেলের ফলে চুলে তৈলাক্ত ভাব এসে যায়। চুলে জট পড়ে আর এই অবস্থায় চুল আঁচড়াতে গেলে চিরুনিতে জড়িয়ে যায়। এমন হলে আগে ভাগেই যতœ নেয়া শুরু করুন। কিছু ঘরোয়া টোটকা মেনে চললেই পাবেন সুন্দর ঘন চুল।
*গরমে চুল সুন্দর রাখতে কী করবেন?
১) একদিন অন্তর অবশ্যই শ্যাম্পু করার চেষ্টা করুন। শ্যাম্পু করার সময় আঙ্গুল দিয়ে হালকা হাতে মাথায় ম্যাসাজ করুন। তারপর ভাল কোন কন্ডিশনার ব্যবহার করুন।
২) একটি পাত্রে তিন-চার চামচ লেবুর রস নিন। তাতে অল্প পরিমাণে পানি মিশিয়ে নিন। চুলের গোড়ায় আলতো হাতে ম্যাসাজ করুন। ৩০ মিনিট রাখুন। তার পরে তিন-চার চামচ নারিকেল তেল বা আমন্ড তেল মাথায় ম্যাসাজ করুন। ৩০ মিনিট পর শ্যাম্পু করে ধুয়ে নিন। সপ্তাহে দুই দিন গোসলের আগে এটি করার চেষ্টা করুন। চুলের গোড়া মজবুত হবে।
৩) এ্যালোভেরার রস যে কোন ধরনের চুলের জন্য বেশ উপকারী। সপ্তাহে এক-দুই দিন গোসলের এক ঘণ্টা আগে স্ক্যাল্প-এ এ্যালোভেরার রস লাগান ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে। এক মাস করলেই উপকার নিজেই টের পাবেন।
৫) এ সময় বাইরে বেরোনোর সময় অবশ্যই মাক্স ও ছাতা ব্যবহার করুন। টুপি পরলে পরিষ্কার এবং সঠিক মাপের টুপি পরুন। ঘরে এসে অবশ্যই সাবান বা ডিটারজেন্ট পাওডারে ধৌত করুন।
৬) চুলে জেল, ওয়াক্স, হেয়ার স্প্রে ব্যবহার এড়িয়ে চলুন। ব্যবহার করলেও বাড়ি ফিরে ভাল করে শ্যাম্পু করে চুল ধুয়ে নিন।
৭) হেয়ার স্পা করা খুবই উপকারী । ভালো চিকিৎসকের দ্বারা মাসে এক-দুবার হেয়ার স্পা করতে পারলে চুল ভালো থাকবে।
৮) রোজ প্রচুর পরিমাণে পানি খান। খাবারের তালিকায় রাখুন প্রচুর পরিমাণ শাক-সবজি ও ফল। সেই সঙ্গে টাটকা ছোট মাছ খান বেশি করে। রোজ সকালে খান এক চামচ মধু।
৯) গোসল করেই সঙ্গে সঙ্গে চুল মুছবেন না। এতে চুলের গোড়া দুর্বল হয়ে যাবে। চুলে তোয়ালে জড়িয়ে শুকিয়ে নিন।
১০) চুলে হেয়ার ড্রায়ার বা হেয়ার স্ট্রেইটনার ব্যবহার না করাই ভাল। এতে চুল সাময়িকভাবে দেখতে ভাল লাগলেও পরে অনেক বেশি ক্ষতি হয়।
তবে এসবের বিষয়ে হতাশা গ্রস্ত না হয়ে বিশেষজ্ঞ ত্বক, ও ট্রান্সপ্ল্যান্ট সার্জনের শরণাপন্ন হতে ও পারেন। এমনকি করোনাকালে অনলাইনেও চিকিৎসা নিতে পারেন।
লেখক : ডাঃ জাহেদ পারভেজ, সহকারী অধ্যাপক; চর্ম, যৌন ও এ্যালার্জি রোগ বিভাগ, শহীদ সোহ্্রাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। চেম্বার : ডা. জাহেদস হেয়ার এ্যান্ড স্কিনিক, সাবামুন টাওয়ার, (৬ তলা) পান্থপথ, ঢাকা। মোবাইল : ০১৭০৭-০১১২০০; ০১৭৩০-৭১৬০৬০