বৈদ্যুতিক তার যেন শালিকের নিরাপদ আশ্রয়স্থল

চাঁদপুরে বৈদ্যুতিক তারে বসে কিচিরমিচির করছে কয়েক হাজার শালিক এ যেন তাদের এক নিরাপদ আশ্রয়স্থল, তাদের কিচিরমিচির শব্দে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরা বাবুরহাট জেলখানা এলাকা। চাঁদপুর কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে বৈদ্যুতিক তারে এই বর্ষাময় সময়ে সারিবদ্ধভাবে দলবেঁধে বসে কিচিরমিচির করছে কয়েক হাজার শালিক পাখি। আর পাখিদের এমন দৃশ্য দেখতে প্রতিদিন বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উৎসুক জনতা সেখানে ভিড় জমাচ্ছেন। ৪ জুলাই শুক্রবার দুপুরে জেলা কারাগার হতে বিসিক শিল্প নগরী প্রায় দেড়'শ মিটার দৈর্ঘ্য স্থানজুড়ে বৈদ্যুতিক তারে হাজার হাজার শালিক পাখিদের সুশৃঙ্খলভাবে বসতে দেখা যায়। আমেনা বেগম নামের এক পথচারী বলেন, আমার স্বামী কারাগারে রয়েছে। তার জন্য এখানে এসেছি। অপেক্ষমান সময় এই শালিক পাখিগুলোর কিচিরমিচির ধ্বনি শুনতে শুনতে কেটে যাচ্ছে।

চাঁদপুর জেলা কারাগারের কারারক্ষী জুবাইর হোসেন বলেন, প্রতিদিন দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শালিক পাখির দল এভাবে বৈদ্যুতিক তারে উড়ে এসে বসছে। শুধু বৈদ্যুতিক তারেই নয় বরং আশপাশের কড়ই গাছেও শালিক পাখির দল ডানা ঝাপ্টে বসে কিচিরমিচির করছে। যা দেখতে জেলা কারাগারের বিভিন্ন আসামিদের খুব ভালো লাগে।

বনবিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম বলেন, প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য বহন করছে দলবেঁধে উড়ে এসে বসা এই সুন্দর শালিকগুলো। এখানে তারা জায়গাটি নিরাপদ মনে করেই বসছে। তারা এখানের পাশ দিয়ে যাওয়া খাল ও এর আশপাশের খাল ও ক্ষেত থেকে হয়তো ভালো খাবার এবং নিরিবিলি পরিবেশ পাচ্ছে। যার কারণেই এরা আপন মনের পরিবেশে এখানে দল বেঁধে বৈদ্যুতিক তারের ওপর মিলনমেলায় মিলিত হচ্ছে। তবে কতদিন এরা থাকে সেটাই দেখার বিষয়। 

চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী মো. রাশেদুজ্জামান বলেন, শালিকগুলো এখানকার আবহাওয়াটা ভালোবেসে ফেলেছে। তবে এটা বলতে পারি বৈদ্যুতিক এই হাইবোল্টেজ তারে শালিকের কোন ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা নেই। কোন রকমের লিকেজ না থাকলে পাখিদের জন্য বৈদ্যুতিক তার কখনোই ক্ষতিকারক নয়। 

চাঁদপুর জেলা কারাগারের জেল সুপার জয়নাল আবেদীন ভুইয়া বলেন, বেশ কিছুদিন যাবত লক্ষ্য করছি কারাগারের প্রধান ফটকের সামনে বৈদ্যুতিক তারের ওপর কয়েক হাজার শালিক বসে দোল খাচ্ছে। এরা একটু পর পর উড়ে এসে বসে আবার দলবেঁধে উড়ে স্থান বদল করে। যা দেখতে অপরূপ ও উপভোগ্য মুহূর্ত মনে হয়। আমি আমার কারারক্ষীসহ সবাইকে বলে দিয়েছি কেউ যাতে এই পাখিদেরকে তারিয়ে না দেয় কারন এরা প্রকৃতির সৌন্দর্য।