
বর্ষার সৌন্দর্যবাহী কদম গাছ শুধু ফুলেই নয়, পাতাতেও রয়েছে ওষধি গুণ। তবে রয়েছে কিছু অপকারিতাও।কদম (বৈজ্ঞানিক নাম: Neolamarckia cadamba) বাংলাদেশের প্রাকৃতিক বৃক্ষরাজির একটি অন্যতম সদস্য। বর্ষার সময় এর সুগন্ধি সাদা-হলুদ রঙের গোলাকার ফুল প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে বাড়িয়ে তোলে। দেশের গ্রামীণ অঞ্চলে একে সৌন্দর্যের প্রতীক হিসেবেই শুধু নয়, লোকজ চিকিৎসায়ও কদম গাছ ব্যবহার হয়ে আসছে বহুদিন ধরে। বিশেষত কদম পাতায় রয়েছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ভেষজ গুণ।
কদম পাতার উপকারিতা:
১. জ্বর ও ঠান্ডায় উপকারী
কদম পাতার রস শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে এবং সর্দি-জ্বরে ব্যবহৃত হয়।
২. ডায়রিয়া ও বদহজমে উপকারী
হালকা পাতলা পায়খানা ও পেটব্যথায় কদম পাতার নির্যাস ব্যবহৃত হয় আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায়।
৩. ত্বকের সমস্যায় কার্যকর
কদম পাতার পেস্ট বা রস ব্রণ, চুলকানি, ফুসকুড়ি দূর করতে সহায়তা করে। এর অ্যান্টিসেপটিক গুণ রয়েছে।
৪. ক্ষত নিরাময়ে সহায়ক
পাতার রস বা পেস্ট সরাসরি ক্ষতের জায়গায় প্রয়োগ করলে তা দ্রুত শুকায় এবং ব্যাকটেরিয়া নাশ করে।
৫. কৃমিনাশক হিসেবে ব্যবহৃত
ভেষজ চিকিৎসায় পেটের কৃমি দূর করতে কদম পাতা ব্যবহৃত হয়।
কদম পাতা ব্যবহারের সতর্কতা :
১. অতিরিক্ত সেবনে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
অতিরিক্ত কদম পাতার রস খেলে বমি বমি ভাব, মাথা ঘোরা বা পেটের গোলমাল হতে পারে।
২. গর্ভবতীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ
গর্ভবতী নারীরা কদম পাতা সেবনের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ না নিলে ঝুঁকিতে পড়তে পারেন।
৩. ত্বকে অ্যালার্জির সম্ভাবনা
কিছু মানুষের ক্ষেত্রে কদম পাতার পেস্ট বা রস চামড়ায় লাগলে চুলকানি বা র্যাশ হতে পারে।
ব্যবহারের পরামর্শ:
পাতার রস একেবারে অল্প পরিমাণে পান করতে হয় (১-২ চা চামচ)।
পেস্ট বা রস ত্বকে লাগানোর আগে হাতে সামান্য লাগিয়ে পরীক্ষা করে নেওয়া ভালো।
দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহার না করে সমস্যা অনুযায়ী সীমিত সময় ব্যবহার করাই বাঞ্ছনীয়।
কদম গাছ শুধু বর্ষার রূপকথা নয়, এর পাতাও প্রাকৃতিক চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ। তবে যে কোনো ভেষজ উপাদানের মতোই কদম পাতার ক্ষেত্রেও চাই সচেতনতা। উপকারের পাশাপাশি অপকারিতাও মাথায় রেখে পরিমিত ও সঠিক ব্যবহারে হতে পারে এটি প্রকৃত স্বাস্থ্যসাথী।
Jahan