.
গত ১০ বছরে পাঁচ শতাধিক চুরির সঙ্গে জড়িত স্পাইডারম্যানখ্যাত বিলাল হোসেনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সম্প্রতি একটি চুরির ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে ময়মনসিংহ থেকে বিলাল ও তার সহযোগী মোঃ নুরুল্লাহ রাকিবকে (২০) গ্রেফতার করে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশ জানতে পারে, ২২ বছরের মধ্যে বিলালের চুরির অভিজ্ঞতাই ১০ বছরের! মাত্র ১২ বছর বয়সেই তাকে দলে নেয় চোরচক্র ‘সাইফুল গ্যাং’। শারীরিক গঠনে ছোট হওয়ায় এবং গ্রিল বেয়ে বহুতল ভবনে উঠতে পারদর্শী হওয়ায় তাকে ব্যবহার করা হতো ঘরের ভেতরে ঢুকে দরজা খোলার জন্য। কিন্তু এই কাজে সিদ্ধহস্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সাইফুলের গ্যাং ছেড়ে নিজেই দল তৈরি করে মোঃ বিলাল হোসেন (২২)। দেয়াল বেয়ে ভবনে উঠতে পারায় তার নাম হয়
‘স্পাইডারম্যান’। বিলালের দলে এখন ৮ থেকে ১০ সদস্য আছে বলেও জানায় পুলিশ।
পুলিশ জানায়, বিলাল ময়মনসিংহ জেলার পাগলা থানার শামসুল হকের ছেলে। আর রাকিব ফেনী জেলার সোনাগাজী থানার নুর নবীর ছেলে। গ্রেফতারের সময় বিলাল ও তার সহযোগীর কাছ থেকে চুরি করা বিভিন্ন মালামাল ও চুরির সরঞ্জামও উদ্ধার করা হয়েছে।
সোমবার উত্তরা পশ্চিম থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন জানান, গত ২৩ সেপ্টেম্বর উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের নভোএয়ারের ফ্লাইট অপারেশন অফিসে চুরি হয়। এ ঘটনায় রবিবার মধ্যরাতে ময়মনসিংহ থেকে গ্রেফতার করা হয় বিলালকে। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে টঙ্গী থেকে গ্রেফতার করা হয় রাকিবকে। এ সময় তাদের কাছ থেকে ওই অফিস থেকে চুরি করা একটি ল্যাপটপ এবং গ্রিল ভাঙ্গার যন্ত্র উদ্ধার করা হয়।
ওসি আরও জানান, সিঁড়ি ছাড়াই বহুতল ভবনে উঠতে পারে বিলাল। দেয়াল কিংবা পাইপ বেয়ে সে যে কোন ভবনের অন্তত পাঁচতলা পর্যন্ত উঠে যেতে পারে। এ কারণে তাকে ‘স্পাইডারম্যান বিলাল’ও বলা হয়। মূলত তার টার্গেট বিভিন্ন অফিস। রাতের বেলা অফিসে লোকজন থাকে না। তাই এসব অফিসে গিয়ে ল্যাপটপ চুরি করাই তার প্রধান লক্ষ্য। কিন্তু সবসময়ই সে ল্যাপটপের ক্রেতা পায় না। তাই বাধ্য হয়ে মাঝে মাঝে দুই হাজার, এক হাজার, এমনকি ৫০০ ও ২০০ টাকায়ও ল্যাপটপ বিক্রি করেছে সে।
ওসি মোহাম্মদ মহসীন বলেন, চুরির মালামাল বিলালের কাছ থেকে কারা কিনত এসব বিষয়ে সে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। সে অনুযায়ী চোরাই মাল ক্রেতাদের আমরা শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়ার জন্য অভিযান পরিচালনা করছি। এছাড়া বিলালের এই চোরচক্রের সঙ্গে আর কারা জড়িত তাদের বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। তাদেরকেও আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
