
শিল্পকলায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় লোকনাট্য দলের ‘তপস্বী ও তরঙ্গিনী
বুদ্ধদেব বসুর ‘তপস্বী ও তরঙ্গিনী’ পুরাণভিত্তিক কাব্যনাট্যের মধ্যে উল্লেখযোগ্য। এতে মহাভারতের ঋষ্যশৃঙ্গ ও তরঙ্গিনী, বুদ্ধদেব বসুর নির্মাণে আধুনিক মানুষের দ্বন্দ্ববেদনা, মানসিকতা ও মনস্তত্ত্বের সমকালীন হয়ে উঠেছে। পুরাণ কাহিনীকে যেমন তিনি নতুন বোধে উত্তীর্ণ করেছেন, তেমনি নাট্যকাহিনীতে মাতা-কন্যা, পিতা-পুত্র সম্পর্কের বিরোধগুলোকে উন্মোচিত করেছেন দক্ষতার সঙ্গে। মূলত মানব সম্পর্কের দ্বন্দ্বগুলো উদ্ঘাটিত হয়েছে লোলাপাঙ্গী, তরঙ্গিনী, বিভাণ্ডক, ঋষ্যশৃঙ্গ ও রাজমন্ত্রী অংশুমান চরিত্রের বিন্যাসে।
লোকনাট্যদল প্রযোজিত ‘তপস্বী ও তরঙ্গিনী’ নাটকের নবমতম মঞ্চায়ন হয় রাজধানীর সেগুনবাগিচায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার প্রধান মিলনায়তনে মঙ্গলবার সন্ধ্যায়। প্রযোজনাটি ইতোপূর্বে ৪৫টি প্রদর্শনী হয়েছিল এবং সর্বশেষ প্রদর্শনী হয় ২০০৪ সালে। দীর্ঘ বিরতির পর নির্দেশক লিয়াকত আলী লাকী নতুনভাবে ২০২২ সালে পুনরায় নাটকটি মঞ্চে আনেন।
নাটকে দেখা যায় অঙ্গদেশে যখন অনাবৃষ্টি ও দুর্ভিক্ষ দেখা দিল, দৈবজ্ঞেরা বললেন, আজন্ম বনবাসী তরুণ তপস্বী ঋষ্যশৃঙ্গকে রাজধানীতে নিয়ে আসতে পারলেই দুর্যোগের অবসান হবে। ঋষ্যশৃঙ্গ কখনও কোন নারীকে চোখেও দেখেননি, তরুণ হয়েও তপোবলে তিনি অগ্রগণ্য। তাই এই অসাধ্য সাধন শুধু তারই পক্ষে সম্ভব, কিন্তু সে জন্য তার কৌমার্যনাশ প্রয়োজন।
রাজমন্ত্রীদের আজ্ঞায় এক বৃদ্ধ এই অপহরণের ভার নিল। তারই রূপসী ও যুবতী কন্যা নিপুণ উপায়ে তপস্বীকে ব্রহ্মচর্য থেকে ভ্রষ্ট করলে, তারপর তাকে রাজধানীতে নিয়ে আসা কঠিন হলো না। তিনি নগরে প্রবেশ করামাত্র প্রচুর বৃষ্টিপাত হলো। রাজা লোমপাদ তার কন্যা শান্তার সঙ্গে ঋষ্যশৃঙ্গের বিয়ে দিলেন। এভাবেই এগিয়ে যায় নাটকের কাহিনী।
এই নাটকে তরঙ্গিনী রূপে দীর্ঘদিন পর মঞ্চে অভিনয়ে ফিরেছেন নন্দিত নাট্যাভিনেত্রী ফারহানা মিলি।
নাটকে অন্যান্য অভিনয় শিল্পীরা হলেন- স্বদেশ রঞ্জন দাসগুপ্ত, রুবেল শঙ্কর, আবু বকর বকশী, মাসউদ সুমন, শামীমা তুষ্টি, মুমু মাসউদ, মূসা রুবেল, মাশরুবা যুথি, অনন্যা নিশি, মিতু রহমান প্রমুখ।
পোশাক পরিকল্পনা ও আবহ সঙ্গীত পরিচালনায় ইয়াসমীন আলী। মঞ্চ পরিকল্পনা করেছেন আলী আহমেদ মুকুল এবং আলোক পরিকল্পনায় জুনায়েদ ইউসুফ।
জবিতে তিন নাটক মঞ্চস্থ ॥ জবি সংবাদদাতা জানান, শিক্ষার্থী নাট্য নির্দেশনা কোর্সের আওতায় মঙ্গলবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন থিয়েটার ল্যাবে মঞ্চায়ন হলো তিনটি নাট্যদলের তিনটি নাটক। এর মধ্যে ইতালির চিত্রশিল্পী ও নাট্যকার উমবার্তো বোচ্চিওনির ‘জিনিয়াস এ্যান্ড কালচার’, স্যামুয়েল বেকেটের ‘শেষ খেলা’ এবং জোসেফ টি শিপলির ‘ইকো’ মঞ্চায়ন করেছে। নাট্যকলা বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ¯œাতক শেষ পর্বের ২৪ জন শিক্ষার্থী এগুলোর মঞ্চায়ন করেন।