ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০৫ জুলাই ২০২৫, ২০ আষাঢ় ১৪৩২

হোটেলে নেই ১৩ তলা কিংবা ১৩ নম্বর রুম! অদ্ভুত কুসংস্কারে লুকিয়ে আছে চমকপ্রদ ইতিহাস

প্রকাশিত: ২৩:১৭, ৪ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ২৩:১৭, ৪ জুলাই ২০২৫

হোটেলে নেই ১৩ তলা কিংবা ১৩ নম্বর রুম! অদ্ভুত কুসংস্কারে লুকিয়ে আছে চমকপ্রদ ইতিহাস

ছবিঃ সংগৃহীত

বিশ্বজুড়ে অনেক নামিদামি হোটেলেই লক্ষ্য করা যায়, হঠাৎ করেই ১২ তলার পর চলে আসে চৌদ্দতলা! কিংবা ১২ নম্বর রুমের পরেই ১৪ নম্বর রুম। কোথায় গেল ১৩? অনেকেই অবাক হন—১৩ সংখ্যাটিকে এভাবে ‘বের করে দেওয়া’ হচ্ছে কেন?

মূলত, এই চর্চার পেছনে রয়েছে শতাব্দীপ্রাচীন এক কুসংস্কার। পশ্চিমা সমাজে ১৩ সংখ্যাটিকে ‘অশুভ’ বা ‘অপয়া’ হিসেবে দেখা হয়। একে ‘ট্রাইডেস্কাফোবিয়া’ (Triskaidekaphobia) বলা হয়, যার অর্থ হলো—১৩ সংখ্যার প্রতি অস্বাভাবিক ভয়।

এই ভয় এতটাই প্রভাব ফেলেছে যে, বিশ্বের বহু দেশেই হোটেল, হাসপাতাল, এমনকি বহুতল ভবনগুলোতে ১৩ তলা কিংবা ১৩ নম্বর ঘরের অস্তিত্বই নেই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বেশিরভাগ হোটেলেই লিফটে ১৩ নম্বর বোতামটি দেখা যায় না। ১২ এর পর ১৪ চলে আসে!

এই সংস্কারের পেছনে সবচেয়ে প্রচলিত ব্যাখ্যা হলো—বাইবেলের ‘লাস্ট সাপার’ বা যিশু খ্রিষ্টের শেষ নৈশভোজ। যেখানে ১৩ জন উপস্থিত ছিলেন। বিশ্বাস করা হয়, ওই রাতেই যিশু খ্রিষ্টকে ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তাই সেই থেকে ১৩ সংখ্যাকে ‘অপয়া’ ভাবা শুরু হয়।

অনেকে আবার এটিকে “Friday the 13th” বা ‘অশুভ শুক্রবার’-এর সঙ্গেও যুক্ত করে দেখেন, যা পশ্চিমা সংস্কৃতিতে ভয়াবহতা বা দুর্ভাগ্যের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

তবে এই কুসংস্কার পুরোপুরি অবৈজ্ঞানিক হলেও হোটেল ব্যবসায়ীরা অনেক সময়ই এটি মানেন শুধুমাত্র অতিথিদের আরাম ও মনস্তাত্ত্বিক স্বস্তির কথা ভেবেই। কারণ, কেউ যদি ১৩ তলায় উঠতে না চান বা ১৩ নম্বর রুম নিতে অস্বস্তি বোধ করেন, তবে তা ব্যবসায় প্রভাব ফেলতে পারে।

তবে আশার কথা, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই ধ্যানধারণা অনেকটাই বদলাচ্ছে। আধুনিক হোটেল ও ভবনগুলোর অনেকেই এখন কুসংস্কারকে পাত্তা না দিয়ে বাস্তববাদী চিন্তা করছে।

তবুও প্রশ্ন রয়ে যায়—আপনি কি ১৩ তলায় রাত কাটাতে রাজি হবেন?

ইমরান

×