ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সাড়ে ৩ কোটি টাকা আত্মসাত ॥ দুদকের চার্জশীট অনুমোদন

স্বাস্থ্যের সাবেক ডিজি ডাঃ আজাদ ও সাহেদসহ ৬ জন আসামি

প্রকাশিত: ২৩:০৫, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১

স্বাস্থ্যের সাবেক ডিজি ডাঃ আজাদ ও সাহেদসহ ৬ জন আসামি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ লাইসেন্সের মেয়াদ না থাকার পরও করোনা নমুনা সংগ্রহ ও চিকিৎসার জন্য চুক্তি করে সাড়ে ৩ কোটি টাকা সরকারী অর্থ আত্মসাতের মামলায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাঃ মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করে রিজেন্ট গ্রæপ ও রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদ ওরফে সাহেদ করিমসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে চার্জশীট অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা মুহাম্মদ আরিফ সাদেক জনকণ্ঠকে জানান, শীঘ্রই এই অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হবে। অভিযোগপত্রের অপর আসামিরা হচ্ছে, স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক পরিচালক আমিনুল হাসান, উপ-পরিচালক (হাসপাতাল-১) মোঃ ইউনুস আলী, সহকারী পরিচালক (হাসপাতাল-১) মোঃ শফিউর রহমান এবং গবেষণা কর্মকর্তা মোঃ দিদারুল ইসলাম। আসামিদের বিরুদ্ধে লাইসেন্স নবায়নবিহীন বন্ধ রিজেন্ট হাসপাতালকে ডেডিকেটেড কোভিড হাসপাতালে রূপান্তর, সমঝোতা স্মারক সম্পাদন এবং নমুনা পরীক্ষা বাবদ ও করোনা চিকিৎসায় খরচ বাবদ ৩ কোটি ৩৪ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে গত বছর জুলাই মাসে রিজেন্ট হাসপাতালের মিরপুর ও উত্তরা শাখা বন্ধ করে দেয়া হয়। করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা ও চিকিৎসায় খরচ বাবদ মোট তিন কোটি ৩৪ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গত বছর ২৩ সেপ্টেম্বর পাঁচজনকে আসামি করে এ মামলা দায়ের করেন দুদকের উপ-পরিচালক মোঃ ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী। সেখানে আবুল কালাম আজাদের নাম না থাকলেও তদন্ত শেষে অভিযোগপত্রে তাকেও আসামি হিসেবে তার নাম অন্তর্ভুক্ত করা হলো। মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে লাইসেন্স নবায়নবিহীন বন্ধ রিজেন্ট হাসপাতালকে ডেডিকেটেড কোভিড হাসপাতালে রূপান্তর, মেমোরেন্ডাম অব আন্ডারস্ট্যান্ডিং সম্পাদন ও সরকারী প্রতিষ্ঠান নিপসমের ল্যাবে তিন হাজার ৯৩৯ জন কোভিড রোগীর নমুনা বিনামূল্যে পরীক্ষা করিয়েছেন। যেখান থেকে অবৈধ পারিতোষিক বাবদ রোগী প্রতি সাড়ে তিন হাজার টাকা হিসেবে এক কোটি ৩৭ লাখ ৮৬ হাজার ৫০০ টাকা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া রিজেন্ট হাসপাতালের মিরপুর ও উত্তরা শাখার চিকিৎসক, নার্স, ওয়ার্ডবয় ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের খাবার খরচ বরাদ্দের বিষয়ে এক কোটি ৯৬ লাখ ২০ হাজার টাকার মাসিক চাহিদা তুলে ধরেছেন। আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/১০৯ ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয় এ মামলায়। পরে মামলার বাদী ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারীকেই তদন্তের দায়িত্ব দেয় দুদক। দীর্ঘ এক বছর পর এ মামলার তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র অনুমোদন চেয়ে কমিশনে প্রতিবেদন দেন তদন্ত কর্মকর্তা ফরিদউদ্দিন। সোমবার তা অনুমোদন করল কমিশন। দেশে করোনার প্রাদুর্ভাবের পর কোভিড- ১৯ রোগীদের চিকিৎসায় গত বছরের ২১ মার্চ রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদফতরের চুক্তি হয়। ওই অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রীসহ কয়েকজন সচিব উপস্থিত ছিলেন। তিন মাস না যেতেই করোনা পরীক্ষা না করে ভুয়া রিপোর্ট দেয়া, সরকারের কাছে বিল দেয়ার পর রোগীর কাছ থেকেও অর্থ নেয়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠে রিজেন্টের বিরুদ্ধে। এরপর গত বছর ৭ ও ৮ জুলাই অভিযান চালিয়ে রিজেন্ট হাসপাতালের মিরপুর ও উত্তরা শাখা বন্ধ করে দেয় র‌্যাব।
×