
ভূমিকম্পের কারণে সৃষ্ট কম্পন শনাক্তকরণে নিজস্ব প্রযুক্তি ব্যবহারের পথে একধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) উদ্ভাবিত স্বল্পমূল্যের অ্যাক্সিলারোমিটার (ভূমিকম্পের কারণে সৃষ্ট কম্পন মাপার যন্ত্র) এবার পরীক্ষামূলকভাবে স্থাপন করা হয়েছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি)।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) বিকেল পাঁচটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগের প্রকৌশল কারখানায় এই প্রযুক্তিটি স্থাপন করা হয়।
প্রযুক্তিটি উদ্ভাবনের গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. তাহমিদ মালিক আল হুসাইনি।বাকৃবিতে প্রযুক্তিটি স্থাপনে সার্বিক সহযোগিতা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. রোস্তম আলী। তিনি বলেন, 'এই অ্যাক্সিলারোমিটারটি স্থাপনের মাধ্যমে বাকৃবি ও বুয়েট এর মধ্যে যৌথ গবেষণার ক্ষেত্র আরো একধাপ এগিয়ে গেল।'
নতুন উদ্ভাবিত এই প্রযুক্তি সম্পর্কে অধ্যাপক ড. তাহমিদ মালিক বলেন, 'ভূমিকম্পের কারণে সৃষ্ট কম্পন মাপার জন্য আমরা তুলনামূলকভাবে কম খরচে এই অ্যাক্সিলারোমিটার তৈরি করেছি। এতে ব্যবহৃত সেন্সর ও কিছু গুরুত্বপূর্ণ হার্ডওয়্যার বিদেশ থেকে আমদানি করা হলেও, পুরো ডিভাইসের প্রোগ্রামিং ও হার্ডওয়্যার ইন্টিগ্রেশন আমাদের দেশেই সম্পন্ন করা হয়েছে। এতদিন এমন যন্ত্র বিদেশ থেকে কিনে আনতে হতো। এতে ব্যয় যেমন বেশি হতো, তেমনি বৈদেশিক মুদ্রাও ব্যয় হত। আমরা এখন দেশেই সেই সক্ষমতা তৈরি করেছি।'
তিনি আরও জানান, 'এর আগে পরীক্ষামূলকভাবে বুয়েট এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) অ্যাক্সিলারোমিটার স্থাপন করা হয়েছে। এখন মাঠপর্যায়ে এর কার্যকারিতা যাচাই করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে আশানুরূপ ফল মিললে এই প্রযুক্তির মাধ্যমে সংগৃহীত তথ্য ও ডাটাবেস সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। এতে করে দেশের মানুষ জানতে পারবে কোন এলাকায় ভূমিকম্পের মাত্রা কত এবং সেই অনুযায়ী ভবন বা অবকাঠামো নির্মাণে কী ধরনের প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। এতে ভবিষ্যতের ক্ষয়ক্ষতি অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।'
প্রযুক্তিটির আনুষ্ঠানিক স্থাপনের সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. তাহমিদ মালিক আল হুসাইনি, বাকৃবির কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. রোস্তম আলী, কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ড. টুম্পা রাণী সরকারসহ বিভাগের অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ।
Jahan