ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নেত্রকোনায় ব্যাংকে জালিয়াতি॥ নারী গ্রাহকের ৭ লাখ টাকা তুলে নিল আরেক নারী

প্রকাশিত: ২১:৫৯, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১

নেত্রকোনায় ব্যাংকে জালিয়াতি॥ নারী গ্রাহকের ৭ লাখ টাকা তুলে নিল আরেক নারী

নিজস্ব সংবাদদাতা, নেত্রকোনা ॥ সোনালী ব্যাংকের কেন্দুয়া উপজেলা শাখায় এক নারী গ্রাহকের চেক জালিয়াতি করে অপর এক নারী গ্রাহক ৭ লাখ টাকা তুলে নিয়ে গেছেন। রবিবার দুপুরে ঘটেছে এ ঘটনা। এদিকে সোমবার দুপুরে স্থানীয় নেতাদের মধ্যস্থতায় তুলে নেওয়া টাকা উদ্ধার করে প্রকৃত গ্রাহককে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে প্রতারক নারী ও জড়িত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। অভিযুক্ত ওই নারী হলেন, পূর্ণতা আক্তার। তিনি কেন্দুয়া পৌর এলাকার বাদে আঠারোবাড়ি মহল্লার বাসিন্দা মামুন মিয়ার স্ত্রী। আর জালিয়াতির শিকার নারী হলেন পারভীন আক্তার। তার বাড়ি একই উপজেলার চিরাং ইউনিয়নের ছিলিমপুর গ্রামে। জানা গেছে, পূর্ণতা নামের ওই নারী সোনালী ব্যাংকের ওই শাখাটিতে বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতাসহ অন্যান্য ভাতাভোগী গ্রাহকদের চেক লিখে দেয়াসহ টাকা তুলতে সহায়তা করতেন। বিনিময়ে তিনি কিছু পারিশ্রমিক নিতেন। কিছুদিন আগে ছিলিমপুর গ্রামের পারভীন আক্তার ব্যাংকটির কেন্দুয়া শাখায় এসে একটি হিসাব নম্বর খুলেন। তখন পূর্ণতা তাকে সাহায্য করেন। ওই সময় পূর্ণতা কৌশলে চেকের একটি পাতা ছিঁড়ে নিজের কাছে রেখে দেন। রবিবার দুপুরে পূর্ণতা ওই চেকের পাতায় পারভীনের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে তার (পারভীনের) হিসাব নম্বর থেকে সাত লাখ টাকা উঠিয়ে নেন। পরে পারভীনের মুঠোফোনে ক্ষুদে বার্তা গেলে তিনি বিষয়টি টের পান। সঙ্গে সঙ্গে ব্যাংকে হাজির হয়ে তিনি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জালিয়াতির বিষয়টি জানতে পারেন। এদিকে বিষয়টি স্থানীয়ভাবে জানাজানি হয়ে গেলে ব্যাংকের ব্যবস্থাপক আরিফ আহম্মদসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা এবং কিছু রাজনৈতিক নেতা বিষয়টি ধামাচাপা দিতে ওঠে পড়ে লাগেন। রাত ১১টা পর্যন্ত তারা রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। পরদিন (সোমাবার) দুপুরে পূর্ণতার কাছ থেকে সম্পূর্ণ টাকা উদ্ধার করে পারভীনের হিসাব নম্বরে জমা দেন। তবে কোন আইননানুগ ব্যবস্থা না নিয়েই প্রতারক পূর্ণতাকে ছেড়ে দেয়া হয়। এমনকি ঘটনার সঙ্গে ব্যাংকটির কোন কর্মকর্তা জড়িত আছেন কি না তাও খতিয়ে দেখা হয়নি। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সোনালী ব্যাংকের কেন্দুয়া শাখার ব্যবস্থাপক আরিফ আহম্মদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, জালিয়াতি করে তুলে নেয়া টাকা পূর্ণতার কাছ থেকে উদ্ধার করে মূল গ্রাহককে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। এছাড়া পূর্ণতার কাছ থেকে মুচলেকা রাখা হয়েছে। আইনানুগ ব্যবস্থা না নেয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাজনৈতিক নেতারা বিষয়টি মিটমাট করে দেয়ায় অন্য কিছু করা হয়নি। ব্যাংকটির নেত্রকোনা অঞ্চলের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) রাসমোহন সাহা বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হবে। প্রয়োজনে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
×