ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

তাহিরপুরে আবর্জনার মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের নাক চেপে চলাচল

প্রকাশিত: ১৬:৫০, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১

তাহিরপুরে আবর্জনার মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের নাক চেপে চলাচল

নিজস্ব সংবাদদাতা, সুনামগঞ্জ ॥ সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় দু'টি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী-শিক্ষককে মলমূত্র ও ময়লা-আবর্জনার স্তুপের উপর দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে দির্ঘ্য দিন ধরে। স্কুল দু’টি হলো, বাদাঘাট ইউনিয়নের বাদাঘাট পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় ও বাদাঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। তিন হাজারের অধিক কোমলমতি আবর্জনার স্তুপ অতিক্রম করে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করলেও সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের নজরে পরেনা গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়টি। এছাড়াও গুরুত্বপূর্ন সড়কটিও বেহাল অবস্থা বিরাজ করছে গত কয়েক বছর ধরেই। স্থানীয় প্রশাসন ও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নজর দিচ্ছেন না। এমনকি ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও এ ব্যপারে উদাসিন রয়েছেন ফলে ও দুর্গন্ধের পরিমান দিনদিন বাড়ছেই। এসব যেন দেখার কেউ নেই। এ সড়কটি থেকে আবর্জনা অন্যর্থ সরিয়ে নিতে ও এখানে মলমূত্র ত্যাগ করা থেকে বিরত রাখতে জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা প্রশাসনকেই এগিয়ে আসার আহবান সচেতন মহলের। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাদাঘাট বাজার হোন্ডা ষ্ট্যান্ড থেকে উত্তর দিকে ২০ফুট সামনেই কলেজ রোডে যাওয়া পথের বামপাশেই বিদ্যালয় দু’টির প্রবেশের সড়ক। এ সড়কের গলির ৬ফুট ভিতরেই একটি টিউবওয়েল। এর চারপাশজুড়ে সবসময় ময়লা-আবর্জনার স্তুপ। আর সেই স্তুপের ওপর লোকজন প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিয়ে টিউবওয়েলের পাশেই মলমূত্র ত্যাগ করছেন। আর সড়কের পাশের দোকান ও বাসা বাড়ির ময়লা ফেলায় ভাগাড়ে পরিনত হয়েছে রাস্থাটি। এরপাশ দিয়েই বাধ্য হয়ে দু’টি শিক্ষা প্রতিষ্টানের প্রায় তিনহাজার শিক্ষার্থী ও ৩০জন শিক্ষক বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করেন। প্রতিদিন (শুক্রবার বাদে) এই দুর্গন্ধযুক্ত ময়লা-আবর্জনার স্তুপ অতিক্রম করে স্কুল সংলগ্ন মাঠে শতশত ক্রিড়ামোদি দর্শক ও খেলোয়ারগণ বিকেলে খেলাধুলা করেন। এছাড়াও এর আশপাশের ২০টির ও বেশী বাড়ির মানুষজন এইপথে চলাচল করতে হয়। শিক্ষার্থীদের অভিভাবক মো. শরিফ মিয়া, মো. রফিকুল ইসলামসহ কয়কেজন জানালেন, দুটি বিদ্যালয় শিক্ষা ক্ষেত্রে উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখলেও চলাচলের সড়কটিতে যাওয়ার সময় ছাত্র-ছাত্রীরা উদ্ভট পরিস্থিতির শিকার হয় প্রায় প্রতিদিন। তাছাড়া বিষয়টি চরম স্বাস্থ্য বিপর্যয়ের হুমকি। কবে এই দুর্ভোগ, দূর্গন্ধ থেকে রেহাই পাবে আমাদের সন্তানরা প্রশ্ন রাখেন উপজেলার দায়িত্বশীলদের কাছে। বাদাঘাট পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রা শামীম জানায়, বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার পথে টিউবওয়েলের সামনে এলে তারা সবাই নাক চেপে ময়লা আবর্জনা পায়ে মাড়িয়ে দূর্গন্ধ সহ্য করে চলাচল করে এবং গত কয়েক বছর ধরে এভাবেই চলাচল করছি আমরা। বৃষ্টির দিনে তো আরো বেহাল অবস্থা হয়। বাদাঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র জাহিদ, আলম, রেখা, কল্পনাসহ সবার দাবি দ্রুত সড়কের পাশ থেকে ময়লা আবর্জনা সড়িয়ে সড়কটি মেরামত করে দিতে যথাযথ কর্তৃপক্ষের সমযোচিত উদ্যোগ গ্রহন। বিদ্যালয় দু’টিতে আসা যাওয়ার প্রধান সড়কটিকে দৃষ্টিনন্দন সড়কে রূপান্তরিত করার দাবি জানায় এইসব কমোলমতি শিশুরা। উপজেলার বাদাঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান বলেন, আমাদেরকে বছরে যে পরিমাণ সরকারি বরাদ্দ দেওয়া তাতে এ সড়ক ঠিক করাসহ পরিস্কার করার মতো সামর্থ্য নেই আমার। বাদাঘাট পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম ধানু বললেন, এই সড়কটি পাকা করার জন্য আমি অনেকের কাছেই আবেদন জানিয়েছি। কিন্ত কোন লাভ হয় নি। আর এই সড়কের পাশে কেউ ময়লা ফেলতে ও প্রস্রাব-পায়খানা না করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবেন বলে তিনি প্রতিবেদককে আশ^স্থ করেন। তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুনা সিন্দু চৌধুরী বাবুল বলেন, আবর্জনা পরিস্কার করে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য সড়কটি নতুন করে নির্মাণ করার এজন্য উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে শীগ্রই। তবে তা মেন্টেনেইন স্কুল কর্তৃপক্ষকে করার পরামর্শ দেন তিনি।
×