ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মগনামা-কুতুবদিয়া চ্যানেল থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন

প্রকাশিত: ১৭:২৫, ৩ মার্চ ২০২১

মগনামা-কুতুবদিয়া চ্যানেল থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার ॥ পেকুয়া মগনামা লঞ্চঘাটের উত্তর পাশে উপকূলীয় বনবিভাগের মালিকানাধীন সংরক্ষিত বনভূমির জায়গা দখলে নিয়ে অবৈধভাবে সামুদ্রিক বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলছে। সাগরের মগনামা-কুতুবদিয়া চ্যানেল থেকে এই বালু উত্তোলন করে চলেছে কতিপয় প্রভাবশালী। প্রকাশ্যে কয়েকদিন পূর্বে বড় আকারের পাইপ বসালেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। তবে উপকূলীয় বন বিভাগের মগনামা বনবিট কর্মকর্তা মো: মোবারক জানান, পাইপ বসানোর সময় বাধা প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু বালু উত্তোলনে জড়িতরা প্রভাবশালী হওয়ায় বন বিভাগের নির্দেশ মানছে না। তিনি এ ব্যাপারে জেলা কর্মকর্তাকে বিষয়টি মৌখিক ও লিখিতভাবে অবহিত করেছেন। স্থানীয়রা জানান, বঙ্গোপসাগরের চ্যানেল থেকে থেকে বালু উত্তোলনে কোন নিয়ম না থাকলেও কতিপয় প্রভাবশালী বালু উত্তোল করলেও স্থানীয় প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদফতরের কর্মকর্তারা রহস্যজনক কারণে নীরব রয়েছে। কক্সবাজারের দুই উপজেলা পেকুয়া ও কুতুবদিয়ার মধ্যবর্তী স্থান বঙ্গোপসাগরের মগনামা কুতুবদিয়া চ্যানেল থেকে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করার অপচেষ্টা দৃশ্যমান। বন বিট কার্যালয়ের সামনে মগনামায় নির্মানাধীন বেড়িবাঁধও রয়েছে। এছাড়াও বসতবাড়িসহ বিভিন্ন স্থাপনাও রয়েছে। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কার্যক্রম শুরু করলে আগামী বর্ষা মৌসুমে এসব স্থাপনা চরম হুমকির মূখে পড়বে। স্থানীয়রা জানান, ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করার কার্যক্রম শুরু হলে নষ্ট হবে সামুদ্রিক জীববৈচিত্র ও প্রাকৃতিক পরিবেশ। এর ফলে ধ্বংস হবে সামুদ্রিক খনিজসম্পদ, সামুদ্রিক প্রাকৃতিক জীবসম্পদ, মৎস্য, চিংড়ি, শামুক, ঝিনুক, ডলফিন, কাঁকড়া, সি-উইড, সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণী, বিভিন্ন জলজ প্রাণী ও উদ্ভিদের প্রজনন-আবাসস্থল। জলবায়ু ও জীববৈচিত্র্যের ইকো-সিস্টেমকে ক্ষতিসাধন করে রাষ্ট্রের সামুদ্রিক জলজ সম্পদের ক্ষতিসাধন করা হবে। এছাড়া সমুদ্রতল, জলরাশি, জলস্রোত, বায়ু, সামুদ্রিক প্রবালপ্রাচীরও দূষিত হবে। মগনামা বরইতলী সড়কের কার্যাদেশপ্রাপ্ত এক ঠিকাদার নিয়ামানীতির তোয়াক্কা না করেই মগনামা বনবিট কার্যালয়ের সামনে বালু উত্তোলনের জন্য পাইপলাইন বসিয়েছে। বালু উত্তোলন বন্ধে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সহায়তা করবেন। পেকুয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহশিলদার রফিকুল ইসলাম জানান, মগনামার বনবিট কার্যালয়ের সামনে সাগরের মগনামা-কুতুবদিয়া চ্যানেল থেকে বালু উত্তোলনের জন্য কাউকে প্রশাসন অনুমতি দেয়নি। এ ব্যাপারে উপকূলীয় বন বিভাগের মগনামা ও চনুয়া বনবিটের রেঞ্জ কর্মকর্তা জুয়েল চৌধুরী মুঠোফোনে বলেন, বন বিভাগের জায়গার উপর দিয়ে কাউকে সাগর থেকে বালু উত্তোলনের সুযোগ দেয়া হবেনা। বিষয়টি প্রসঙ্গে পেকুয়া উপজেলা সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) অবহিত করা হয়েছে। তিনি বালু উত্তোলনে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছে।
×