ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রায়ার ইচ্ছা পূরণ করলেন প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ২২:২২, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০

রায়ার ইচ্ছা পূরণ করলেন প্রধানমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ অবিশ্বাস্য হলেও সত্য! বৃহস্পতিবার বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন (অটিস্টিক) কিশোরী মামিজা রহমান রায়ার বিকেলটা ছিল অন্য ধরনের। সম্ভবত তার জীবনের শ্রেষ্ঠ বিকেল। তার ইচ্ছা ছিল কথা বলবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন কিশোরীর এই ইচ্ছার কথা সোশ্যাল মিডিয়ায় জানতে পেরেই তাকে ভিডিও ফোন করলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার সঙ্গে দীর্ঘ সময় কথা বলে রায়ার ইচ্ছা পূরণ করলেন সারাবিশ্বে ‘মানবতার মা’ বলে পরিচিতি পাওয়া জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলার স্বপ্ন ছিল অটিস্টিক কিশোরী মামিজা রহমান রায়ার। তার এমন ইচ্ছার কথা জানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দিয়েছিলেন তার এক শিক্ষিকা। সেই ভিডিও বার্তার প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে প্রধানমন্ত্রী রায়া নামের ওই কিশোরীর সঙ্গে ভিডিওকলের মাধ্যমে কথা বলেছেন। রায়ার সঙ্গে অনেকক্ষণ প্রধানমন্ত্রী কথা বলেন, শুনেন তার কবিতা আবৃত্তি। রায়ার গাওয়া জাতীয় সঙ্গীতে কণ্ঠও মেলান প্রধানমন্ত্রী। এ সময় করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে গণভবনে গিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যার সঙ্গে সরাসরি দেখা করে গল্প করার ইচ্ছার কথা জানিয়েছে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন এই কিশোরী রায়া। এদিকে খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ভিডিওকলে কথা বলতে পেরে দারুণ খুশি মামিজা রহমান রায়া। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার পরে ফেসবুক পেজ থেকে বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে রায়া ও তার শিক্ষিকা হাসিনা হাফিজ একটি ভিডিও আপলোড করে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার বিষয়টি জানান এবং বঙ্গবন্ধুর কন্যার প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেন। রায়ার শিক্ষিকা হাসিনা হাফিজ তার আপলোড করা ওই ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘এখানে আমরা গতকাল (বৃহস্পতিবার) একটি ভিডিও আপলোড করেছিলাম। রায়া বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অনুরোধ করেছিল- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেন তার সঙ্গে কথা বলেন। পরম করুণাময় আল্লাহ’র অসীম দয়ায় আমরা ভিডিও কলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলেছি। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটু আগে ফোন করেছিলেন। তিনি অনেকক্ষণ কথা বলেছেন। রায়া বলেছে লকডাউনের সিচ্যুয়েশন আরেকটু নরমাল হয়ে গেলে রায়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার বাসায় গিয়ে দেখা করবে।’ ভিডিও বার্তায় রায়া তার অনুভূতি জানাতে গিয়ে বলে, ‘আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বলেছি- আই লাভ ইউ। আমি শেখ হাসিনার সঙ্গে অনেক কথা বলেছি। আমি তাকে বলেছি লকডাউন শেষ হলে তোমার বাসায় গিয়ে গল্প করব, দেখা করব। আই লাভ ইউ বলব। রায়া এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পাওয়ায় সবাইকে ধন্যবাদ জানায় ও সকলের কাছে দোয়া চায়।’ শুধু মামিজা রহমান রায়াই নয়, ’৯৬ সালে প্রথমবার ক্ষমতায় আসার পর থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন সব-বয়সী মানুষের প্রতি তার বিশেষ নজর দিচ্ছেন, সমাজে অবহেলার পরিবর্তে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার মাধ্যমে অটিস্টিক শিশু-কিশোর-কিশোরীদের সুপ্ত থাকা জ্ঞান-বুদ্ধিকে সমাজে কাজে লাগাতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় থাকতেও প্রতিটি ঈদ, নববর্ষসহ বিশেষ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দাওয়াত ও আমন্ত্রণ কার্ডে খ্যাতনামা অঙ্কন শিল্পীদের পরিবর্তে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু-কিশোর-কিশোরীদের আঁকানো ছবিই স্থান দিয়েছেন। তাদের আঁকা ছবি দিয়েই প্রতিবার তৈরি করা হয় প্রধানমন্ত্রীর কার্ডের প্রচ্ছদ। তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ হোসেন পুতুলও একজন মনোবিজ্ঞানী হিসেবে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন অটিস্টিকদের জন্য জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছেন, এজন্য পেয়েছেন আন্তর্জাতিক নানা স্বীকৃতিও। বাংলাদেশেও অটিস্টিকদের জন্য সায়মা ওয়াজেদ হোসেন পুতুল নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন।
×