ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বরিশালের চরাঞ্চলে বারোমাসি বিদেশী জাতের তরমুজ চাষ

প্রকাশিত: ১৩:৪৯, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০

বরিশালের চরাঞ্চলে বারোমাসি বিদেশী জাতের তরমুজ চাষ

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ জেলার একমাত্র দ্বীপ উপজেলা মেহেন্দিগঞ্জের চরাঞ্চলে বিদেশী জাতের বারোমাসি তরমুজ চাষ করে ব্যাপক ফলন পেয়েছেন এক শিক্ষক দম্পত্তি। মাত্র ২৪ শতক জমিতে ৩৫ হাজার টাকা খরচে পাঁচ জাতের তরমুজ চাষ করে তারা লাভের আশা করছেন। প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের বারোমাসি তরমুজ চাষ প্রকল্প দেখতে এসে অনুপ্রানীত হচ্ছেন অনেকে। উন্নতমানের বীজের কারণে ফলন ভালো হওয়ার দাবি করে কৃষি কর্মকর্তারা জানান, বারোমাসি তরমুজ চাষ করলে অন্যান্যরা লাভবান হবেন এবং দেশের বেকারত্ব দূর হবে। সূত্রমতে, মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার আন্দারমানিক গ্রামের বাসিন্দা হাসান মাহমুদ সাঈদ এবং তার স্ত্রী তাহমিনা বেগম দুইজনেই দুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক। সাঈদ শিক্ষকতার পাশাপাশি ১৯৮৬ সাল থেকে মাছ চাষ শুরু করেছেন। বর্তমানে তার চারটি পুকুর, দুইটি ঘের এবং পোনা উৎপাদনের একটি হ্যাচারী রয়েছে। ঘের এবং পুকুর পাড়ে দীর্ঘদিন থেকে তিনি বিভিন্ন সবজির চাষ করে আসছেন। সূত্রে আরও জানা গেছে, করোনাকালে স্কুল বন্ধ থাকায় একজন বীজ ব্যবসায়ীর পরামর্শে গত আষাঢ় মাসে তিনি বিদেশী জাতের পাঁচ ধরনের তরমুজ জাতীয় ফলের চাষ করেছেন। আদর্শ কৃষক হাসান মাহমুদ সাঈদ জানান, সুইট ব্লাক, কার্নিয়া, সোনিয়া, হানিডিউ মেলন (ছাম্মাম) এবং রক মেলন নামের বিদেশী জাতের এই চারা রোপনের এক সপ্তাহের মধ্যে ফুল এবং ১০/১২ দিনের মধ্যে প্রতিটি গাছে ফলন ধরেছে। দুইমাস পরই ফল পরিনত এবং পাঁকতে শুরু করেছে। তিনি আরও জানান, ২৪ শতক জমিতে ৭৫০টি চারা রোপনসহ পরিচর্যায় তার প্রায় ৩৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এখন তিনি ফল বিক্রি করে প্রায় দুই লাখ টাকা লাভের আশা করছেন। সাঈদের কৃষি শ্রমিক আব্দুল কাদের বলেন, বিদেশী জাতের এই তরমুজ চাষে বাড়তি কোন ঝামেলা নেই। বীজ ১২ ঘন্টা ভিজিয়ে রেখে টিস্যু দিয়ে মুড়িয়ে রেখে অঙ্কুর গজালে একটি ট্রেতে জৈব সারসহ মাটিতে পুতে দিতে হয়। ট্রেতে ১০/১২দিন রেখে চারা গজানোর পর নিয়মানুযায়ী পৃথক বেড তৈরী করে চারা রোপন করতে হয়। লাল ও হলুদ রংয়ের এই তরমুজ খেতেও সুস্বাধু বলেও তিনি উল্লেখ করেন। বরিশালের বীজ ব্যবসায়ী জাকির হোসেন জানান, উন্নতমানের বীজের কারনে ফলন ভালো হয়েছে। পরীক্ষামূলকভাবে সাঈদকে কিছু বিদেশী জাতের তরমুজের বীজ দেয়া হয়েছিলো। সাঈদ সফল হয়েছে। বারোমাসি ফল হওয়ায় ভরা মৌসুমের পর (অসময়ে) এই ফলের চাষ করলে কম পরিশ্রমে বেশি লাভ করা সম্ভব। মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হারুন-অর রশিদ জানান, বারোমাসি তরমুজ চাষের জন্য তারা কৃষক সাঈদকে কারিগরিসহ সর্বাত্মক সহযোগিতা দিয়েছেন। সাঈদ বিদেশী জাতের তরমুজ চাষ করে লাভবান হয়েছেন। অন্যারাও এই ফলের চাষ করলে একদিকে যেমন আর্থিক লাভবান হবেন, তেমনি বেকারত্বও দূর হবে।
×