ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

শিল্প-সাহিত্যে মহামারী

প্রকাশিত: ২১:২৪, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২০

শিল্প-সাহিত্যে মহামারী

কোন কোন ঘটনা ও ঘটনার প্রেক্ষাপট মানুষের মনে চিরস্থায়ী রেখাপাত করে। এসব ঘটনা কখনও সুখের হতে পারে অথবা হতে পারে বিষাদেরও। এ সকল উদ্ভূত পরিস্থিতি পুরো সমাজ ব্যবস্থা, রাষ্ট্র কাঠামো, শিল্প-সাহিত্যে, ধর্মীয় আচার, মানুষের মনের গতিপ্রকৃতিতে আমূল পরিবর্তন নিয়ে আসে। সেটা কখনও হয় ইতিবাচক অথবা নেতিবাচক। পৃথিবীর ইতিহাস ঘাটলে আমরা দেখতে পাই- নানান প্রত্যাশিত ও অপ্রত্যাশিত ঘটনার সাক্ষী এ পৃথিবী। যার ফল ভোগ করে আসছে মানব জাতি। মানুষ মূলত প্রকৃতির কাছে চরম অসহায়। এই প্রকৃতির বৈরী আচরণে যে অমানবিক পরিস্থিতি তৈরি হয়ে আসছে তাকে কেন্দ্র করে সৃষ্টি হয়েছে মহৎ সাহিত্য, বিকাশিত হয়েছে চিত্রকলা ও শিল্পবোধের। যুগে যুগে মহামারীকে কেন্দ্র করে সাহিত্যের গতিপ্রকৃতির যে বিবর্তন ও বিকাশ কিংবা মহামারী কেন্দ্রিক বাংলা সাহিত্যের অনুষঙ্গ কতটুকু প্রসারিত হয়েছে। সে বিষয় আলোকপাত করা এ প্রবন্ধের আলোচ্য বিষয়। মহামারী বলতে- একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট জনসংখ্যায় কোন সংক্রমণকে বুঝায়। মহামারীর এই যে সংজ্ঞায়ন তা একটি কল্যাণকর রাষ্ট্র ব্যবস্থায় জনস্বাস্থ্যের ইতিবাচক ও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রসূত। আর এর ব্যতিক্রমও অমানবিক দৃষ্টিভঙ্গি আছে। দুই ধরনের অনুষঙ্গকে কেন্দ্র করে মহৎ শিল্প-সাহিত্য বিনির্মাণ হয়েছে যুগে যুগে। প্রাগৈতিহাসিক কালেও এমন কোন মহামারী পৃথিবীতে তাণ্ডবলীলা চালিয়েছিল কি না। মানুষ কি তখন হয়ে পড়েছিল বিভাজিত? মানুষের যৌথ জীবন কি ভেঙে দিয়েছিল সেই মহামারী? কিন্তু ইতিহাসে আমরা এমন মহামারীর কথা উল্লেখ পাই না। যে মহামারী একই সঙ্গে গোটা পৃথিবী এখন দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। প্রকৃতির এই বৈরী আগ্রাসন কখনও প্লেগ নামে, কখনও কলেরা নামে, কখনও সোয়াইন ফ্লু, কখনও বার্ড ফ্লু, আর কখনও এইডস নামে আবার বর্তমান সময়ে করোনা নামে উপস্থিত হয়ে মানুষের জীবনকে করেছে বিপন্ন ও তছনছ করে দিয়েছে সাজানো জীবন ব্যবস্থা। বাংলা সাহিত্যের প্রাথমিক পর্যায়কাল থেকে এই মহামারী বা মড়ক বাংলা সাহিত্যে একটা অধ্যায়ের বিকাশ লাভ করেছে। বাংলা সাহিত্যের প্রবাদপ্রতিম বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘আনন্দমঠ’ উপন্যাসে আমরা ছিয়াত্তরের মন্বন্তর-কালীন মহামারীর বর্ণনা পাই। যেমন : ‘রোগ সময় পাইল। জ্বর, ওলাউঠা, ক্ষয়, বসন্ত। বিশেষত বসন্তের বড় প্রাদুর্ভাব হইল। গৃহে গৃহে বসন্তে মরিতে লাগিল। কে কাহাকে জল দেয়, কে কাহাকে স্পর্শ করে। কেহ কাহার চিকিৎসা করে না; কেহ কাহাকে দেখে না; মরিলে কেহ ফেলে না। অতি রমণীয় বপু অট্টালিকার মধ্যে আপনা আপনি পচে। যে গৃহে একবার বসন্ত প্রবেশ করে, সে গৃহবাসীরা রোগী ফেলিয়া পলায়।’ মহামারীকে অনুষঙ্গ হিসেবে নিয়ে ‘আনন্দমঠ’ এর মতো কালজয়ী সাহিত্য রচিত হলো। আনন্দমঠ উপন্যাসে মহামারীকালীন চরম নিষ্ঠুরতার ছবি ফুটে উঠেছে। এ সময় কোন মানুষ মানবিকতার হাত বাড়িয়ে দেননি। তাই মহমারীকালীন নিষ্ঠুরতার প্রতিছবি আনন্দমঠ উপন্যাসের বিষয় বস্তু বা অনুষঙ্গ। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘চতুরঙ্গ’ উপন্যাসে উদার ও ঋজু চরিত্রের জ্যাঠামশাই জগমোহন মারা যায় মহামারীতে। চতুরঙ্গ উপন্যাস থেকে কিছুটা পাঠ নেয়া যাক : ‘পাড়ায় প্লেগ দেখা দিল। পাছে হাসপাতালে ধরিয়া লইয়া যায় এজন্য লোকে ডাক্তার ডাকিতে চাহিল না। জগমোহন স্বয়ং প্লেগ-হাসপাতাল দেখিয়া আসিয়া বলিলেন, ব্যামো হইয়াছে বলিয়া তো মানুষ অপরাধ করে নাই।’ মহামারীতে যে চরম অমানবিক পরিস্থিতি তৈরি হয় এবং ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করে সাম্প্রদায়িক তকমা আঁটা হয় তারও প্রমাণ রবীন্দ্রনাথের চতুরঙ্গ। চতুরঙ্গে শ্রীবিলাসের উক্তি : ‘আমাদের হাসপাতালে প্রথম রোগী জুটিল একজন মুসলমান, সে মরিল। দ্বিতীয় রোগী স্বয়ং জগমোহন, তিনিও বাঁচিলেন না। শচীশকে বলিলেন, এতদিন যে ধর্ম মানিয়াছি আজ তার শেষ বকশিশ চুকাইয়া লইলাম, কোন খেদ রহিল না।’ দাদার মৃত্যু নিয়ে শচীশের বাবা হরিমোহনের বক্তব্য ছিল অতি সংক্ষিপ্ত : ‘নাস্তিকের মরণ এমনি করিয়াই হয়।’ এখানে আর একটি বিষয় লক্ষণীয় যে রবীন্দ্রনাথ মহামারীকালীন সাহিত্যে আর একটি বিষয় উল্লেখ করেন তাহলে হলো সঙ্কটকালে সাম্প্রদায়িকতা যাকে কেন্দ্র করে হন্তা করা। বর্তমানে করোনাকালীন সময়ে শুরু থেকে সারা বিশ্বব্যাপী সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গি বৃদ্ধি পেয়েছে। এর কুফল আমাদের দেখতে পেয়েছি। রবীন্দ্রনাথ ১৯১৯ সালে একটি চিঠিতে লেখেন- ‘বৌমার খুব কঠিন নুমোনিয়া হয়েছিল। অনেক দিন লড়াই করে কাল থেকে ভাল বোধ হচ্ছে। সম্পূর্ণ সুস্থ হতে বোধহয় অনেক দিন লাগবে। হেমলতা এবং সুকেশী ভুগছেন। তার মধ্য হেমলতা প্রায় সেরে উঠেছেন-সুকেশীর জন্য ভাবনার কারণ আছে- কিন্তু ছেলেদের মধ্য একটিরও ইনফ্লুয়েঞ্জা হয়নি। আমার বিশ্বাস তার কারণ-আমি ওদের বরাবর পাঞ্চ সিক্ত পাচন খাইয়ে আসছি’-(চিঠিপত্র, ষষ্ঠ খণ্ড)। রবীন্দ্রনাথের মহামারী কেন্দ্রিক সাহিত্যে এবং এ চিঠিতে মহামারীর সামগ্রিক বিষয় উঠেছে। কবি মাত্রই সচেতন সত্তার অধিকারী তাই মহামারীর সঙ্কটকালে তিনি একজন চিকিৎসকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘শ্রীকান্ত’ উপন্যাসের দ্বিতীয় পর্বে মহামারীকে অনুষঙ্গ হিসেবে নিয়েছেন। প্লেগের পরীক্ষা কেমন, রোগের বিস্ততার ও ভয়াবহতার বিষয় তাঁর পর্যবেক্ষণ, ‘সকলেই অবগত আছেন, প্লেগ রোগে দেহের স্থান বিশেষ স্ফীত হইয়া উঠে। ডাক্তার সাহেব যেরূপ অবলীলাক্রমে ও নির্বিকার-চিত্তে সেই সকল সন্দেহমূলক স্থানে হস্ত প্রবেশ করাইয়া স্ফীতি অনুভব করিতে লাগিলেন, তাহাতে কাঠের পুতুলেরও আপত্তি হইবার কথা।’ শরৎ চন্দ্রের শ্রীকান্ত উপন্যাসে মহামারীকালীন ‘ছঁধৎধহঃরহব’ এর উল্লেখ পাই। শ্রীকান্তের মুখে শোনা যাক, ‘পরদিন বেলা এগারো-বারোটার মধ্যে জাহাজ রেঙ্গুন পৌঁছিবে; কিন্তু ভোর না হইতেই সমস্ত লোকের মুখচোখে একটা ভয় ও চাঞ্চল্যের চিহ্ন দেখা দিল। চারদিক হইতে একটা অস্ফুট শব্দ কানে আসিতে লাগিল, কেরেন্টিন। খবর লইয়া জানিলাম, কথাটা য়ঁধৎধহঃরহব : তখন প্লেগের ভয়ে বর্মা গবর্নমেন্ট অত্যন্ত সাবধান। শহর হইতে আট-দশ মাইল দূরে একটা চড়ায় কাঁটাতারের বেড়া দিয়া খানিকটা স্থান ঘিরিয়া লইয়া অনেক কুঁড়েঘর তৈয়ারি করা হইয়াছে; ইহারই মধ্যে সমস্ত ডেকযাত্রীদের নির্বিচারে নামাইয়া দেওয়া হয়। দশদিন বাস করার পর তবে ইহারা শহরে প্রবেশ করিতে পায়’ শরৎ চন্দ্র তৎকালীন মহামারীতে বার্মার সামগ্রিক সমাজ ব্যবস্থার অবস্থা কেমন হয়েছিল তা তুলে ধরেছেন। এবং উদ্দেশ্য ছিল মহৎ ও কালজয়ী সাহিত্য সৃজন। তাঁর ‘পণ্ডিতমশাই’ উপন্যাসের বিষয়বস্তুও মহামারীকে কেন্দ্রিক। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের, ‘আরণ্যক’, তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের, ‘ধাত্রীদেবতা’ ও ‘গণদেবতা’ উপন্যাসে কলেরা নামক মহামারীর উপজীব্য। তারাশঙ্কর তার, ‘আরোগ্য নিকেতন’ উপন্যাসে দেখা যায় যে, ‘শিক্ষিত ছেলেরা’ বিশুদ্ধ পানীয়জলের ব্যবস্থা করে কলেরায় মৃত্যু আটকাতে চাইছে। ‘পুতুল নাচের ইতিকথা’ উপন্যাসে মানিক বন্দ্যোপাধ্যয়, জহির রায়হানের ‘হাজার বছর ধরে’ উপন্যাসে কলেরার মড়ক বর্ণিত হয়েছে। যা মূলত উপন্যাসের উপজীব্য বা বিষয়বস্তু। আর হাজার বছর উপন্যাসের আয়নায় চোখ রাখলে মহামারীর চিত্র দেখতে পাই। ১৯১১ সালের ভারত বর্ষের মহামারী, প্লেগ সাহিত্যের অনুষঙ্গ হয়েছে। বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথের অভিসার কবিতার রাজনর্তকী বাসবদত্তা গুটিবসন্তে আক্রান্ত হয়েছিল। কবির ভাষায়, ‘নিদারুণ রোগে মারীগুটিকায় ভরে গেছে তার অঙ্গ /রোহমসী-ঢালা কালি তনু তার/ লয়ে প্রজাগণে পুরপরিখা/ বাহিরে দেলেছে করি প্রহার।/ ‘পুরাতন ভৃত্য’ কবিতার পুরাতন ভৃত্য কেষ্টার মৃত্যু হয়েছি মহামারীতে। ওয়ালী উল্লাহর গল্প ‘নয়নতারা’, ফররুখ আহমদের কবিতা-‘লাশ’ বিজন ভট্টচার্যের নাটক ‘নবান্ন’ মহামারী কেন্দ্রিক কালজয়ী সাহিত্য সম্ভার। জীবননান্দ দাশ তাঁর সুচেতনা কবিতায় বলেন, ‘পৃথিবীর গভীর অসুখ এখন/মানুষ তবুও ঋণী পৃথিবীরই কাছে/ জীবননান্দ দাশের এই কবিতাংশের বিষয় মহামারীকে ইঙ্গিত করে। মহামারীতে পৃথিবীর মানুষ যে গভীর সঙ্কট ও উৎকণ্ঠার মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হয় তারই প্রমাণ এই কবিতাংশ। রবীন্দ্রনাথের লেখা বিভিন্ন চিঠিতে মহামারীর উল্লেখ এবং এ থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার দিকনির্দেশনা পাওয়া যায়। মহামারী বাংলার চিত্রকলাকেও সমৃদ্ধ করেছে। বরেণ্য চিত্রকর জয়নুল আবেদীন এ ক্ষেত্রে অগ্রগণ্য। তিনি বাংলার মহামারী ও দুর্ভিক্ষপীড়িত অসহায় মানুষের জীবনচিত্র ক্যানভাসে ফুটিয়েছেন চমৎকারভাবে। মৃত মায়ের বুকে মুখ গুঁজে পড়ে থাকা শিশু, স্ত্রীর শবদেহের আর্তনাদরত স্বামী, ডাষ্টবিনের খোঁজে মানুষ ও কুকুর। মৃত মানুষের চোখ ঠুকরে খাচ্ছে একদল কাক। সে সময়ের মহামারীকালীন চরম ব্যস্তবতা ও মানবিক সঙ্কট তাঁর এসব চিত্রকর্মে পাওয়া যায়। বাংলা সাহিত্যের উপন্যাস, গল্প, কবিতা, নাটক ও চলচ্চিত্রে যেমনি মহামারী বিষয়বস্তু ও আখ্যান হয়ে বিধৃত হয়েছে তেমনি বিশ্বসাহিত্যেও। সাহিত্য রোগবিস্তার ও মানব প্রকৃতি নিয়ে লেখা একটি ব্যতিক্রমী বই ড্যানিয়েল ডিফোর, ‘আ জার্নাল অব দ্য প্লেগ ইয়ার’ (১৭২২)। প্লেগ মহামারীকালীন সময়ে লন্ডনের সার্বিক বিষয় লেখক তুলে ধরেছে। মহামারীর প্রাদুর্ভাবকে অস্বীকার, মৃত্যু সংখ্যা কমিয়ে বলা, কিছু জনগোষ্ঠীর অদৃষ্টবাদে বিশ্বাস, নানা গুজব প্রচার সর্বোপরি মহামারী নিয়ে কর্তৃপক্ষের কূটকৌশল বইটিতে বিশদভাবে আলোচিত হয়েছে। ইতালির আলেসান্দ্রো মানজির উপন্যাস ‘দ্য বিট্রথেড’ প্লেগের ধ্বংস নিয়ে লেখা সবচেয়ে বাস্তবাদী সাহিত্যর মধ্যে অন্যতম বই। মহামারীতে কর্তৃপক্ষের অদক্ষতার বিষয়ে ১৬৩০ মানজোনি মিলান সাহিত্য রচনা করে। আবেয়ার ক্যামুর-‘প্লেগ’। গ্র্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেস- এর ‘লাভ ইন দ্র্য টাইম অব কলেরা’ উপন্যাসটি শুরু হয়েছে একটি সদ্য মৃত্যু দৃশ্যের বর্ণনা দিয়ে। মৃত্যু কতটা সরল ও স্বাভাবিক মহামারীতে সেটা এ উপন্যাসে বিধৃত হয়েছে।’ ওয়ান হাণ্ড্রেড ইয়ারস অব সলিটিউড’ উপন্যাসেও মহামারীকে কেন্দ্র করে অদ্ভুত গল্প বলেন। গোটা উপন্যাসে এভাবে সার্কেস এক আশ্চর্য স্মৃতিবিহীনতা আর অতীতহীনতার মহামারীর জাদুব্যস্তবতার গল্প বলেন। হোসে সারামাগোর তাঁর ‘ব্লাইন্ডনেস’ উপন্যাস মহামারীর কেন্দ্রিক। ওরহান পামুকের মহামারী কেন্দ্রিক সাহিত্য সম্ভার ‘নাইটস অব প্লেগ’। বইটিতে লেখক ১৯০১ সালের তৃতীয় প্লেগ মহামারীর ঐতিহাসিক বিষয় তুলে ধরেছে। আধুনিক যুগে মহামারী কোন কোন দেশে বা স্থানে মানবিক সংকর তৈরি করলেও পূর্ববর্তী অমানবিকতার চেয়ে অপ্রতুল। মহামারীকালীন শিল্প-সাহিত্যে, চিত্রকলা, নাটক-সিনেমা ও কবিতার পাঠোদ্ধার থেকে অনুমেয় যে প্রাচীন, মধ্য কিংবা তার পরবর্তীকালে মহামারী বা মড়ক মানুষের জীবনে বিপন্ন করেছে। আর যারা বেঁচেছে তাদের মধ্য তৈরি হয়েছে বিভাজন ও অমানবিকতা। আধুনিক যুগে মানুষ সচেতন ও সাহসী হয়েছে তাই এ সঙ্কটকালে হাত বাড়িয়েছে। এ সব সত্ত্বেও ইউরোপীয় রেনেসাঁসর সময় থেকে মহামারী চলাকালীন সময়ে সহিংসতা, জনশ্রুতি, আতঙ্ক এবং বিক্ষোভের মতো এ রকম অসংখ্য অপ্রত্যাশিত ও অমার্জনীয় ঘটনা ঘটেছে যা শিল্প-সাহিত্যে অনুষঙ্গ হিসেবে স্থান করেছে পাকাপোক্তভাবে আর সৃষ্টি হয়েছে কালজয়ী সাহিত্য।
×