ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

টাঙ্গাইলের শহর রক্ষা বাঁধ হুমকির মুখে

প্রকাশিত: ১৬:৩৬, ২৫ জুলাই ২০২০

টাঙ্গাইলের শহর রক্ষা বাঁধ হুমকির মুখে

নিজস্ব সংবাদদাতা, টাঙ্গাইল ॥ টাঙ্গাইল শহর রক্ষা বাঁধ হুমকির মুখে পরেছে। গত দুই দিনের ভাঙ্গনে সদর উপজেলার শিবপুর পাছ বেথর এলাকায় পুংলী নদীর পাশে বাঁধের ২৫০ মিটার ভেঙ্গে গেছে। ভাঙ্গন ঠেকাতে আপাতকালীর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। প্রতিদিনই ফেলছে জিও ব্যাগ। এ পর্যন্ত রাস্তার কিছু অংশসহ বাধে অনেকটাই ভেঙে গেছে। টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম জানান, টাঙ্গাইল শহরকে রক্ষার করার জন্য ও ভাঙ্গন প্রতিরোধে পুংলী নদীর পাশে ২৫০ মিটারের মধ্যে ১২ হাজার জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। এতে বাধ হুমকির মুখ থেকে রক্ষা পাবে বলে আশা করছি। এদিকে টাঙ্গাইলে বন্যা পরিস্থিতির দিন দিন অবনতি হচ্ছে। বৃষ্টির কারণে বন্যার পানি টাঙ্গাইল শহরে ঢুকে পড়েছে। ইতোমধ্যে পৌর শহরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে চরম আকার ধারণ করেছে। বৃষ্টির সাথে বন্যার পানি একাকার হয়ে টাঙ্গাইল শহরের বাসটার্মিনাল থেকে কোড মসজিদ হয়ে মেডিক্যাল কলেজের পিছনের রাস্তা, মক্কা আই সেন্টার থেকে কোদালিয়া হয়ে রাবনা বাইপাস পর্যন্ত রাস্তা, দেওলা প্রধান সড়কের পাশের প্রতিটি অভ্যন্তরীণ সড়ক, খাদ্য গুদাম থেকে মীরের বেতকা, বৈল্যা ব্রিজের পর থেকে এনায়েতপুর সড়ক এবং পৌরসভার চরজানা ও মীরের বেতকা এলাকা পুরোটাই পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। শহরের প্রধান প্রধান সড়ক ব্যাতিত অভ্যন্তরীণ প্রায় সড়কেই বন্যার পানি হানা দিয়েছে। এদিকে, গত কয়েকদিনে যমুনায় পানি কমে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ধলেশ্বরী ও ঝিনাই নদীসহ জেলার অভ্যন্তরীণ নদ-নদীতে প্রতিদিনই পানি বাড়ছে। ফলে জেলার গ্রামীণ রাস্তা-ঘাট, ছোট ছোট ব্রিজ-কার্লভাট ও ব্রিজে ওঠার মাটি ধসে বন্যার পানি প্রবাহিত হয়ে জনপদ প্লাবিত হচ্ছে। বিস্তীর্ণ এলাকার ফসলি জমি, মাছের পুকুর ও পোল্ট্রী খামারে পানি ঢুকে মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হচ্ছে। জেলার অধিকাংশ হাট-বাজারে পানি উঠে ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে। ইতোমধ্যে বন্যা কবলিত এলাকায় পানি বাহিত রোগ-ব্যাধি সহ খাবার পানি ও খাদ্য সঙ্কট দেখা দিয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্র ও উচু রাস্তার পাশে অবস্থান নেওয়া বন্যার্তরা শিশুখাদ্য ও গো-খাদ্যের চরম সঙ্কটে ভুগছেন। টাঙ্গাইলে দ্বিতীয় দফার বন্যায় জেলার স্থায়ী নদী প্রতিরক্ষা প্রকল্পের কাজসহ একের পর এক ব্রিজ ধসে পড়ছে। এতে জনপদ বিচ্ছন্ন হয়ে পড়ছে। জেলার অভ্যন্তরে পানি বৃদ্ধি পেয়ে টাঙ্গাইল সদর, ভূঞাপুর, কালিহাতী, গোপালপুর, দেলদুয়ার, ঘাটাইল, মির্জাপুর ও নাগরপুর উপজেলার ৯০ শতাংশ এবং নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে। এরইমধ্যে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে প্রায় তিন লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। বানভাসী এসব মানুষ সরকারি-বেসরকারি ত্রাণ না পাওয়ার অভিযোগ করেছে। টাঙ্গাইল জেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের তথ্য অনুযায়ী বানভাসী মানুষের জন্য ৪০০ মে.টন জিআর চাল ও নগদ ৮ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়া শিশু খাদ্যের জন্য দুই লাখ ও গো-খাদ্যের জন্য দুই লাখ টাকা বরাদ্দ পেয়ে বিতরণ করা হচ্ছে।
×