ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সুমন সরকার

আসুন মানবিক হই

প্রকাশিত: ২৩:৪১, ২৫ জুন ২০২০

আসুন মানবিক হই

বিশ্বেজুড়ে মহামারীর এই সঙ্কটকালে থেমে থাকা অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে মানবিক দিক থেকে মানুষকেই এগিয়ে আসতে হবে। আর সেই সঙ্গে প্রমাণ করতে হবে মানব ধর্মই পরম ধর্ম। দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে মানুষের বিচিত্র পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সচ্ছল প্রতিবেশী তার অসচ্ছল প্রতিবেশীর বিপদে কাছে আসছে না। আপনজন হয়েও করোনার ভয়ে সহজেই মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। মানুষের মাঝে দেখা দিচ্ছে স্বার্থপরতা। অনেকে আবার গরিবের হক সামান্য ত্রাণসামগ্রী পর্যন্ত লুটে নিচ্ছে যা আমাদের দেশের ত্রাণ বিতরণ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে চরম লজ্জাকর। সরকারী পদক্ষেপ এবং আইনের বিধান থাকলেও আশানুরূপ শাস্তি হচ্ছে না তাদের। সাধারণ মানুষ বাঁচতে চায়, তাদের প্রাপ্যটুকু তারা সঠিক বণ্টন ব্যবস্থার মাধ্যমেই পেতে চায়। এছাড়াও করোনাভাইরাস মহামারী ধারণ করা সত্ত্বেও গ্রাম পর্যায়ে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে অপরিচিত অসহায় ফকির মিসকিনের আগমন দেখা যাচ্ছে। যেখানে তারা কোন প্রকার সচেতনতা না মেনেই বাড়ির ভেতর ঢুকে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে মানুষ দান খয়রাত না করে তাড়িয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছে। কারণ এদের মাধ্যমেও এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় করোনা সংক্রমিত হতে পারে। করোনা মোকাবেলায় মানব সেবায় নিয়োজিত আছেন পুলিশ, সেনাবাহিনী রাস্তা-ঘাটসহ মাঠ পর্যায়ে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা দিয়ে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে হাজার হাজার পুলিশ আক্রান্ত হয়েছেন এবং অনেকে করোনা যুদ্ধে মৃত্যুবরণ করেছেন। অপরদিকে চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা তাদের জীবনের সর্বোচ্চ ঝুঁকি নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। কিছুসংখ্যক চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মী তাদের পরিবারের কথা চিন্তা করে নিজেদের নিরাপত্তার কথা ভেবে বের হচ্ছেন না। নিজেকে আড়াল করে রেখেছেন মানবসেবা থেকে। এছাড়াও মানুষের স্বাভাবিক জীবনের দিকে তাকালে দেখা যায় করোনা মোকাবেলায় নি¤œবিত্ত এবং মধ্যবিত্তরাও অনেক সমস্যায় দিনাতিপাত করছেন। পাল্টে গেছে কিছু সাধারণ মানুষের জীবনের গল্প। নোভেল করোনাভাইরাসের ভয়াল থাবায় দুমড়ে-মুচড়ে গেছে সাধারণ মানুষের সামাজিক ও অর্থনৈতিক জীবন। যেমন অদৃশ্য হয়ে গেছে খেটে খাওয়া মানুষের আয় রোজগার তেমনি চাপা পড়ে আছে কিছু মানুষের না বলতে পারা হাহাকারের গল্প। মধ্যবিত্তদেরও একই অবস্থা বেতনও হচ্ছে না টাকাও পাচ্ছে না ঘরে খাবার নেই। কোনরকম ধার করে চলছে। অথচ বলতে পারছে না কাউকেই। জীবন এবং এই দুর্দশার মাঝে কে এগিয়ে আসবে তার মানবিক হাতটি নিয়ে? যারা সচ্ছল তারা কিন্তু পারি মধ্যবিত্ত বা নিম্নমধ্যবিত্তদের জন্য একটু এগিয়ে আসতে। নিজ উদ্যোগে তাদের খোঁজখবর নিয়ে একটু সহযোগিতা তো করতেই পারি। এভাবে যদি আমরা আমাদের আশপাশের মানুষদের জন্য একটু সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেই তাহলে কিছু মানুষের মুখে ফুটবে প্রাপ্তির হাসি। প্রাণবন্ত হবে তাদের জীবনের থেমে থাকা গল্পগুলো। উপকৃত হবে কতগুলো পরিবার। হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, দিনাজপুর থেকে
×