ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২

৭৫% পাকস্থলীর ক্যান্সার প্রতিরোধে কার্যকর সাধারণ চিকিৎসা!

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ১০ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ০৬:০৫, ১০ জুলাই ২০২৫

৭৫% পাকস্থলীর ক্যান্সার প্রতিরোধে কার্যকর সাধারণ চিকিৎসা!

ছবি: সংগৃহীত।

একটি সাধারণ কিন্তু কার্যকর স্ক্রিনিং এবং চিকিৎসা কর্মসূচির মাধ্যমে বিশ্বের প্রায় ৭৫% পাকস্থলীর ক্যান্সার প্রতিরোধ করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। নতুন এক গবেষণায় বলা হয়েছে, হেলিকোব্যাক্টার পাইলোরি (H. pylori) নামক একটি সংক্রমণ পাকস্থলীর ক্যান্সারের সবচেয়ে বড় ঝুঁকি এবং এটি অ্যান্টিবায়োটিক ও প্রোটন পাম্প ইনহিবিটরের মাধ্যমে চিকিৎসাযোগ্য।

‘নেচার মেডিসিন’ সাময়িকীতে প্রকাশিত গবেষণায় জানানো হয়েছে, ৫০ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে পাকস্থলীর ক্যান্সারের হার বেড়ে চলেছে এবং ভবিষ্যতের অধিকাংশ কেসই এই প্রতিরোধযোগ্য H. pylori সংক্রমণের সঙ্গে সম্পর্কিত হবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) অংশ হিসেবে কাজ করা ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যানসার (IARC)-এর গবেষকরা জানান, ২০০৮ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে জন্ম নেওয়া মানুষের মধ্যে ১৫.৬ মিলিয়ন নতুন গ্যাস্ট্রিক ক্যান্সার কেস দেখা দিতে পারে যদি বর্তমান প্রতিরোধ ব্যবস্থা অপরিবর্তিত থাকে।

গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে, এই সম্ভাব্য কেসগুলোর ৭৬ শতাংশ—অর্থাৎ প্রায় তিন-চতুর্থাংশই—H. pylori সংক্রমণের কারণে হতে পারে, যা চিকিৎসার মাধ্যমে প্রতিরোধযোগ্য।

গবেষণায় দেখা গেছে, এশিয়াতে হবে সর্বোচ্চ সংখ্যক কেস—প্রায় ১ কোটি ৬ লাখ, এরপরই আছে আমেরিকা ও আফ্রিকা। গবেষকরা গ্লোবোক্যান ২০২২ ও জাতিসংঘের মৃত্যুহার সংক্রান্ত তথ্য ব্যবহার করে বিশাল আকারের সিমুলেশনের মাধ্যমে বয়স, মৃত্যু ঝুঁকি ও জনসংখ্যার প্রবণতা বিশ্লেষণ করে এই পূর্বাভাস দিয়েছেন।

গবেষকরা বলছেন, ১০০% কার্যকর স্ক্রিনিং এবং চিকিৎসা কর্মসূচি থাকলে পাকস্থলীর ক্যান্সার ৭৫% পর্যন্ত কমানো সম্ভব। এমনকি ৮০-৯০% কার্যকারিতার প্রোগ্রামেও ৬০-৬৮% কেস প্রতিরোধ করা যেতে পারে। এই উদ্যোগগুলো খরচ সাশ্রয়ী ও বাস্তবায়নযোগ্য, এমনকি নিম্ন-আয়ের দেশেও, যেমনটি আমরা এইচপিভি বা হেপাটাইটিস বি টিকাদান কর্মসূচিতে দেখেছি।

গবেষকরা বিশ্বব্যাপী জনসংখ্যাভিত্তিক স্ক্রিন-এন্ড-ট্রিট কর্মসূচিতে বিনিয়োগ এবং H. pylori প্রতিরোধী একটি টিকার উন্নয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। যদিও নিম্নআয়ের দেশগুলো থেকে পর্যাপ্ত তথ্যের অভাব এবং সংক্রমণের হারের স্থির থাকার অনুমান এই গবেষণার সীমাবদ্ধতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, তবে তাদের গবেষণার ফলাফল ভবিষ্যতের লক্ষ লক্ষ পাকস্থলীর ক্যান্সার প্রতিরোধে একটি বৈশ্বিক, আগাম সচেতনতামূলক স্বাস্থ্য উদ্যোগ নেওয়ার পক্ষে শক্তিশালী প্রমাণ দিচ্ছে।

মিরাজ খান

×