
ছবি: সংগৃহীত
পৃথিবীতেই যদি মঙ্গল গ্রহের স্বাদ নিতে চান, তাহলে আপনাকে যেতে হবে সুদূর চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের গানসু প্রদেশে। এখানে জিউচাং শহরের গোবি মরুভূমিতে স্থাপন করা হয়েছে চীনের প্রথম মঙ্গল গ্রহ থিম ‘মার্স বেস ওয়ান’। বিজ্ঞান, প্রযুক্তি আর প্রকৃতির অপূর্ব সংমিশ্রণে গড়ে উঠেছে এই অভিনব মহাকাশ অভিজ্ঞতার কেন্দ্র।
এক টুকরো মঙ্গল যেন গোবির বুকে
৬৭ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত এই থিম বেসটিতে তৈরি করা হয়েছে মঙ্গলের ভূমি, রোভার, রকেট উৎক্ষেপণ সিমুলেশন, থ্রিডি প্রিন্ট করা আবাসন এবং তারার আলোয় ঘুমানোর জন্য মহাকাশীয় তাবু। দর্শনার্থীরা নভোচারীদের পোশাক পরে হাঁটার অভিজ্ঞতা নিতে পারেন, নিজ হাতে মহাকাশে ডকিং অনুশীলন করতে পারেন এবং মঙ্গলের মত পরিবেশে হাইড্রোপনিক পদ্ধতিতে গাছ জন্মাতে দেখতে পারেন।
অদ্ভুত, মজার আর শিক্ষনীয়
ঝাউ নামের এক দর্শনার্থী বলেন, “এই অভিজ্ঞতা নেওয়ার পর নভোচারীদের কষ্টটা বুঝতে পারলাম। মাথা ঘোরাচ্ছিল, অস্বস্তি লাগছিল।”
আরেকজন পর্যটক লি বলেন, “এখানে এমন যন্ত্র যোগ করা যেতে পারে যা মহাকর্ষ বলকে প্রভাবিত করবে, যেন মঙ্গলের ওজন অনুভব করা যায়।”
মঙ্গলের ওজন কত?
বিজ্ঞানের ভাষায়, পৃথিবীর মহাকর্ষ বল প্রতি বর্গমিটারে প্রায় ৯.৮ নিউটন। মঙ্গলের মহাকর্ষ বল পৃথিবীর মাত্র ০.৩৮ গুণ। অর্থাৎ, যদি পৃথিবীতে আপনার ওজন হয় ৬০ কেজি, তবে মঙ্গলে তা হবে মাত্র ২২.৮ কেজি। এই পার্থক্যকে যদি কেউ অনুভব করতে পারে, তা হবে এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা।
শিশুদের জন্য মহাকাশ শেখার আদর্শ জায়গা
এই বেসটি শুধু একটি বিনোদনের জায়গা নয়, বরং শিশুদের জন্য মহাকাশের রহস্য জানার একটি শিক্ষনীয় প্ল্যাটফর্ম। এখান থেকে শিশুরা মহাকাশচারীদের কাজ বুঝতে পারে, কৌতুহলী হয় এবং ভবিষ্যতের বিজ্ঞানী বা নভোচারী হওয়ার স্বপ্ন দেখতে শেখে।
মহাকাশ পর্যটনে চীনের সাহসী পদক্ষেপ
চীনের এই উদ্যোগ মহাকাশ বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহ তৈরি করার পাশাপাশি বিশ্বে মহাকাশ পর্যটনের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। ভবিষ্যতে যদি কেউ মঙ্গলে পা রাখতে চায়, তবে এই বেস হতে পারে তার প্রথম প্রশিক্ষণভিত্তিক অভিজ্ঞতা।
শেখ ফরিদ