ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সামাজিক সুরক্ষা

প্রকাশিত: ০৮:৩৫, ১২ জুন ২০১৯

সামাজিক সুরক্ষা

২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট নিয়ে নতুন অর্থমন্ত্রীর চিন্তাভাবনা ও বক্তব্য প্রায় প্রতিদিনই প্রকাশিত হচ্ছে গণমাধ্যমে। তবে এখন পর্যন্ত যা জনসাধারণের সবিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণে সক্ষম হয়েছে তা হলো, বর্তমান গণমুখী সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীর সম্প্রসারণ। এর আওতায় দরিদ্র ও বঞ্চিত সুবিধাভোগীর সংখ্যা আরও অন্তত ১৩ লাখ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে সরকার। এর জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৫ হাজার ৩২১ কোটি টাকা। এতে সুবিধা পাবেন প্রায় ৮৯ লাখ দরিদ্র মানুষ। উল্লেখ্য, বর্তমানে প্রায় ৭৬ লাখ মানুষ সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচীর আওতায় সুবিধা ভোগ করছেন। নির্বাচন পরবর্তী সময়ে ভোটার সন্তুষ্টি ও দারিদ্র্য বিমোচনই এর অন্যতম উদ্দেশ্য। তবে আরও ১৩ লাখ দরিদ্রকে সামাজিক সুরক্ষার আওতায় যাদের নিয়ে আসা হচ্ছে, তাদের মধ্যে অগ্রাধিকার দেয়া হবে প্রবীণদের। এর মধ্যে অন্যতম বয়স্ক ভাতা কর্মসূচী। এর আওতায় আরও ৪ লাখ প্রবীণকে দেয়া হবে বয়স্ক ভাতা। ফলে দেশব্যাপী ৪৪ লাখ প্রবীণ ব্যক্তি বয়স্ক ভাতার অন্তর্ভুক্ত হবেন। এর পাশাপাশি বিধবা ভাতা, স্বামী কর্তৃক নিগৃহীতা নারী, অসচ্ছল প্রতিবন্ধীসহ চা শ্রমিকদের দারিদ্র্য বিমোচন তথা জীবনমান উন্নয়নের জন্য সুবিধাভোগীর সংখ্যা ও ভাতার পরিমাণ বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনায় রয়েছে। বর্তমান সরকার গত দশ বছরের উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিকতায় এবারও নির্বাচনী অঙ্গীকার ঘোষণা করেছে। তাতে আগামী পাঁচ বছরে জাতীয় প্রবৃদ্ধি দুই ডিজিটে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে তারা। এই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়েই গৃহীত এবং প্রণয়ন করা হচ্ছে পরবর্তী পাঁচশালা পরিকল্পনা। তাতে অগ্রাধিকার পেয়েছে দারিদ্র্য বিমোচন ও কর্মসংস্থান প্রকল্প। দেশের তরুণ সমাজকে কাজ দিতে গ্রহণ করা হবে বিভিন্ন কর্মসংস্থানমুখী পরিকল্পনা। দারিদ্র্য শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে গ্রহণ করা হবে বেশ কয়েকটি সামাজিক কর্মসূচী। অবকাঠামো উন্নয়নে দশ মেগা প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়িত হলে বেসরকারী খাতে বিনিয়োগ বাড়বে। দেশে উদ্যোক্তা শ্রেণী তৈরি হবে। সৃষ্টি হবে কর্মসংস্থানের নতুন নতুন ক্ষেত্র। দারিদ্র্য বিমোচন করে দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো বর্তমান সরকারের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত প্রকল্প। সেই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে শহরের চেয়ে গ্রাম-গঞ্জকে সবিশেষ প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। গ্রহণ করা হয়েছে নানাবিধ আর্থ-সামাজিক কর্মসূচী ও প্রকল্প। গত অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি বেড়ে হয়েছে ৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ। মাথাপিছু আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭৫১ মার্কিন ডলার, টাকার অঙ্কে ১ লাখ ৪৩ হাজার ৭৮৯ টাকা। দেশে দারিদ্র্যের হার কমে দাঁড়িয়েছে ২১ দশমিক ৮ ভাগে। হতদরিদ্র মানুষের হার কমে দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক ৩ ভাগে। পরিকল্পনামন্ত্রীর মতে, যেভাবে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হচ্ছে, তাতে ২০৩০ সালের আগেই দারিদ্র্যের হার শূন্যের কোঠায় নেমে আসতে পারে। বর্তমান সরকারের জন্য এটি একটি অন্যতম চ্যালেঞ্জ। আগামীতে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীতে বরাদ্দ বৃদ্ধিসহ এর আওতা সম্প্রসারিতে হলে দেশে দারিদ্র্যের হার আরও কমে আসবে নিঃসন্দেহে।
×