ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আফসানার পরিবারের অভিযোগ রবিনের বন্ধুরা হুমকি দিচ্ছে

প্রকাশিত: ০১:১৭, ২৪ আগস্ট ২০১৬

আফসানার পরিবারের অভিযোগ রবিনের বন্ধুরা হুমকি দিচ্ছে

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঠাকুরগাঁও ॥ আফসানা ফেরদৌসের মৃত্যুর ঘটনায় আপোষের প্রস্তাব দিয়ে ছাত্রলীগ নেতা হাবিবুর রহমান রবিনের পক্ষ থেকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন আফসানার বড় ভাই ফজলে রাব্বি । ছাত্র ইউনিয়ন কর্মী আফসানার বড় ভাই ফজলে রাব্বি বুধবার জানান “তার বোন খুন হওয়ার পর থেকে রবিনের বন্ধুরা আমাকে প্রতিনিয়ত ফোন করে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিচ্ছে। তারা আপোষের প্রস্তাব দিচ্ছে। আপোষ না করলে আমাদের সমস্যা হবে বলে বারবার উল্লেখ্য করছে এবং বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার জন্য চাপ দিচ্ছে। এতেই পরিষ্কার যে আফসানা আত্মহত্যা করেনি, তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানান ফজলে রাব্বি। ঢাকার মিরপুরের সাইক ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড টেকনোলজির স্থাপত্যবিদ্যার শেষ বর্ষের ছাত্রী ঠাকুরগাঁওয়ের মেয়ে আফসানাকে অচেতন অবস্থায় ১৩ আগষ্ট রাতে ঢাকা পল্লবীর আল হেলাল হাসপাতালে ফেলে যায় দুই তরুণ। তাকে মৃত অবস্থায় সেখানে নেওয়া হয়েছিল বলে হাসপাতালের চিকিৎসকরা উল্লেখ করেন। আফসানাকে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে এবং এজন্য তেজগাঁও কলেজ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রবিনকে দোষারুপ করে আফসানার পরিবার। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া ইউনিয়নের কানিকশালগাঁওয়ে আফসানার বাড়ি। বাবা নেই; ভাই ফজলে রাব্বি, ছোট বোন আফিয়া ও মা থাকেন সেখানে। ১৪ আগষ্ট সোমবার বিকালে গ্রামের বাড়িতে আফসানার লাশ আসার পর রাতে তাকে দাফন করা হয়। আফসানাকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ করে রাব্বি বলেন, এ ঘটনায় তার বোনের বন্ধু রবিন, সৌরভ ও বাবু ছাড়াও কয়েকজন জড়িত। গত ১২ অগাস্ট রাতে আফসানার সঙ্গে শেষ কথা হয় বলে জানান রাব্বি। “সে বলেছিল ‘আমি ফিরে না আসা পর্যন্ত কোরবানির গরু কিনবি না। এবার হাটে আমিও যাব। এক সাথে গরু কিনে মালা পরিয়ে হেঁটে হেঁটে বাসায় আসব’। “কিন্তু ঈদের আগেই আফসানাকে বাড়ি ফিরতে হল লাশ হয়ে,” কাঁদতে কাঁদতে বলেন তিনি। এ ‘হত্যাকাণ্ডের’ সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন ফজলে রাব্বি। আফসানা আত্মহত্যা করেছেন বলে ‘ধারণার’ কথা রবিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে আফসানা ফেরদৌসকে হত্যা করা হয়েছে বলে আবারও দাবি করেছেন তার মা সৈয়দা ইয়াসমিন বলেছেন, বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ময়নাতদন্তের বানানো প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। এব্যাপারে আফসানার মা বলেন, আফসানা ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করলে গলায় দাগ হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু তার গলার দাগটি একেবারে ভিন্ন। “এতে পরিষ্কার যে আফসানা আত্মহত্যা করেনি। তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। অথচ ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে আফসানাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা নয়, আত্মহত্যা দেখানো হচ্ছে।” বিষয়টি ভিন্নখাতে নেওয়ার জন্য ময়নাতদন্তের বানানো রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন সৈয়দা ইয়াসমিন। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
×